স্টাফ রিপোর্টার :
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপর হত্যার চেষ্টা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। আদালতের বিচারক মমিনুন নেসার এ দিন শাবির রেজিস্ট্রার ও দায়েরকৃত মামলার বাদী মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। আদালতের এপিপি এড. মাসুক আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবার বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের সময় ফয়জুলসহ ৬ আসামি উপস্থিত ছিলেন। তারা হচ্ছে- ফয়জুলের বন্ধু সোহাগ মিয়া, বাবা আতিকুর রহমান, মা মিনারা বেগম, মামা ফজলুল হক ও ভাই এনামুল হাসান।
এপিপি মাসুক আহমদ বলেন, আলোচিত এ মামলায় ৫৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী ২৫ এপ্রিল মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছেন আদালত। ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর এ মামলার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার কাজ শুরু হয়। এর আগে ২৬ জুলাই ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম।
এপিপি মাসুক আরো বলেন, হামলার সঙ্গে জড়িত বলে ফয়জুল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ফয়জুল জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে বন্ধু সোহাগের মাধ্যমে পাওয়া মেমোরি কার্ডে জসিম উদ্দিন রহমানী, তামিম ইল আদরানী ও অলিপুরী হুজুরের ওয়াজ শুনে জিহাদের ব্যাপারে প্রভাবিত হন ফয়জুল। এছাড়া জসিম উদ্দিন রহমানীর লেখা উন্মুক্ত তরবারী বই ও তিতুমীর মিডিয়ার ভিডিও দেখে ফয়জুলের ধারণা হয় জাফর ইকবাল একজন নাস্তিক। এই ধারণা থেকে ফয়জুল একাই জাফর ইকবালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। একাই হত্যার জন্য ছুরি নিয়ে আঘাত করেন। তিনি বলেন, ঘটনার বিভিন্ন স্থির চিত্র, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বিভিন্ন সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও অন্যান্য সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ফয়জুল একাই জাফর ইকবালকে হত্যার জন্য আঘাত করেন বলে পুলিশের তদন্তেও উঠে এসেছে। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের আশা করেন এপিপি মাসুক আহমদ।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ বিকেলে শাবি ক্যাম্পাসে মুক্তমঞ্চে এক অনুষ্ঠানে জাফর ইকবালের উপর হামলা চালান মাদ্রাসা ছাত্র ফয়জুল হাসান। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ইশফাকুল বাদী হয়ে ওই দিন রাতেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জালালাবাদ থানায় মামলা দায়ের করেন।