অপরাধ দমনে আইন প্রয়োগ

98

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর আগামী সপ্তাহ থেকে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বড় ধরনের কোনো সংঘাত-সংঘর্ষ ছাড়াই নির্বিঘ্নে জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ধারণা করা গিয়েছিল, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে না। বিশেষ করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো পর্যন্ত মানুষের মনোযোগের কেন্দ্রে থাকবে উপজেলা নির্বাচন। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক হানাহানি না থাকলেও সামাজিক অপরাধপ্রবণতা কমেনি। বরং দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন, ধর্ষণ, ডাকাতির মতো অপরাধমূলক তৎপরতা বেড়েছে। এখনই সামাল দেওয়া না গেলে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। এক শ্রেণির অপরাধীচক্র নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে। আবার ক্ষেত্র বিশেষে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ উঠেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে।
শুধু শনিবার প্রকাশিত সংবাদপত্রের পাতার দিকে দৃষ্টি দিলে আমরা দেখতে পাই, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতিকালে এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে এক ডাকাত নিহত হয়েছে। সিলেটের বিয়ানীবাজারে পরিবারসহ দুই চাচাকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেছে এক ব্যক্তি। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে একটি বাসায় আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ এসেছে চার বখাটের বিরুদ্ধে। পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। নির্বাচনী গণসংযোগ শেষে বাড়ি ফেরার পথে ডাকাতের কবলে পড়ে সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ও নগদ দেড় লাখ টাকা খুইয়েছেন মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। সাভারে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগে তাঁর দুই বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ। টঙ্গীতে ডাকাতদলের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খুইয়েছেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ খান। তাঁর অভিযোগ, এ সময় ঘটনাস্থলের বিপরীত পাশে চেকপোস্টের পুলিশ নির্লিপ্ত ভূমিকায় ছিল। অন্যদিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীচক্রের ১১ জনকে আটক করা হয়। এই কিশোর বয়সী অপরাধীরা রাতে পথচারীদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে আসছিল। এরা সবাই মাদকাসক্ত। গাজীপুরের টঙ্গীতে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় এক ছাত্রলীগকর্মী খুন হয়েছে।
সমাজের কিছু মানুষ অপরাধপ্রবণ হয়ে উঠতে পারে। সামাজিক অসহিষ্ণুতাও অনেক ক্ষেত্রে অপরাধের জন্য দায়ী। কিন্তু সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা গেলে অপরাধপ্রবণতা দমন করা অসম্ভব নয়। এর জন্য দরকার আইনের শাসন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সক্রিয়তা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর হলে অপরাধ দমন কঠিন হবে না।