স্পোর্টস ডেস্ক :
নামে টাইটান্স হলে কী হবে, মাঠে কোনোভাবেই টাইটান্স হয়ে উঠতে পারছে না খুলনা। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) টানা তিন ম্যাচে হার দেখল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। সর্বশেষ রাজশাহী কিংসের কাছে। বুধবার দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে মাত্র ১১৭ রান তুলতে সক্ষম হয় টাইটানস। সহজ লক্ষ্য ১৮.৫ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখেই টপকে যায় রাজশাহী। অনবদ্য হাফসেঞ্চুরিতে কিংসকে বিপিএলে প্রথম জয় এনে দেন অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ। দারুন বোলিংয়ের সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন লঙ্কান পেসার ইসুরু উদানা।
শুরুটা কিন্তু মন্দ ছিল না খুলনা টাইটানসের। জুনায়েদ সিদ্দিকী আর পল স্টারলিংয়ের ওপেনিং জুটিতে আসে ৪০ রান। এরপরই ধস নামে। চার রানে ব্যবধানে টাইটানস হারায় তিন উইকেট। স্টারলিংকে দিয়ে শুরু। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে মুমিনুল হকের হাতে ধরা পড়েন তিনি। ১৪ বলে ১৬ রান করেন আইরিশ ওপেনার। ঠিক পরের ওভারে ইসুরু উদানা তুলে নেন সিদ্দিকীকে। চার বাউন্ডারিতে ১৮ বলে তিনি করেছিলেন ২৩ রান। ৪৪ রানের মাথায় আউট হয়ে খুলনাকে আরও বিপদে ঠেলে দেন জহুরুল ইসলাম (১)।
অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কাছে ভালো কিছু প্রত্যাশা করছিল খুলনা। কিন্তু এবারও ব্যর্থ তিনি। ১৮ বলে ১১ রান করে মোস্তাফিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন রিয়াদ। ১০.৩ ওভারে খুলনার রান তখন ৬৪। এরপর আরিফুল হকের সঙ্গে কিছুক্ষণ লড়েছেন ডেভিড মালান। এই জুটি দাঁড়িয়ে গেলে হয়ত লড়াইয়ের জন্য একটা ভালো পুঁজি পেত টাইটানস। সেটা আর হলো কই? ৯২ রানে ফিরলেন আরিফুল (১২)। নয় রান বাদে আউট মালান (২২)। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় লেজের ব্যাটসম্যানদের আর কিইবা করার ছিল? তবুও ডেভিড ওয়েসের কল্যাণে পুরো ২০ ওভার খেলে ১১৭ পর্যন্ত যেতে পেরেছে খুলনা।
খুলনাকে অল্প রানে বেঁধে ফেলতে মূল ভূমিকা পালন করেছেন উদানা। ৪ ওভারে এক মেডেনসহ ১৫ রানে তিনি তুলে নিয়েছেন ৩ উইকেট। মোস্তাফিজও কম যাননি। ১৮ রানের বিনিময়ে তিনি নিয়েছেন ২টি উইকেট। এছাড়া সৌম্য সরকার, আরাফাত সানী আর কায়েস আহমদ নিয়েছেন একটি করে উইকেট।
১১৮ রানের মামুলি লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দলীয় ১১ রানে মোহাম্মদ হাফিজকে (৬) হারায় রাজশাহী। এরপর মুমিনুল হককে নিয়ে জুটি গড়েন অধিনায়ক মিরাজ। মুমিনুল খেলছিলেন ঠান্ডা মাথায়। তুলনামূলক আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন মিরাজ। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে স্কোরবোর্ডে ৮৯ রান জমা করে রাজশাহীর জয়ের পথ সুগম করে দেন তারা। দলীয় ১০০ রানে ভাঙে তাদের জুটি। পল স্টারলিংকে মারতে গিয়ে শরিফুল ইসলামের হাতে ধরা পড়েন মুমিনুল। ৪৩ বলে চার বাউন্ডারিতে ৪৪ রান করেন তিনি।
রাজশাহীর জয় তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ৩৪ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৮ রান। এসময় তাদের চেপে ধরেন খুলনার বোলাররা। মিরাজকে বোল্ড করেন আফগান চায়নাম্যান জহির খান। ৪৫ বলে ছয় বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় ৫১ রান করেন কিংস দলপতি। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচটা কিংসের হাতের নাগালে চলে আসে। এরপর ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ওয়েসিকে চার মেরে জয় নিশ্চিত করেন সৌম্য সরকার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা টাইটানস: ২০ ওভারে ১১৭/৯ (জুনায়েদ সিদ্দিকী ২৩, ডেভিড মালান ২২, পল স্টারলিং ১৬; ইসুরু উদানা ৩/১৫, মোস্তাফিজ ২/১৮)
রাজশাহী কিংস: ১৮.৫ ওভারে ১১৮/৩ (মেহেদি মিরাজ ৫১, মুমিনুল ৪৪, সৌম্য ১১*; তাইজুল ১/২২)
ফল: কিংস ৭ উইকেট জয়ী।