হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয়ে ফিরল সিলেট

5

স্পোর্টস ডেস্ক :
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয়ে ফিরল সিলেট সিক্সার্স। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে বুধবার মুশফিকুর রহিমের দল চিটাগং ভাইকিংসকে পাঁচ রানে হারিয়েছে তারা। দুই দলই নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামে। এর আগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে চার উইকেটে হেরেছিল ডেভিড ওয়ার্নারের সিলেট সিক্সার্স। অন্যদিকে, চিটাগং ভাইকিংস এর আগে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে তিন উইকেটে জয় পেয়েছিল।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে সিলেট সিক্সার্সের দেয়া ১৬৯ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাত উইকেটে ১৬৩ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় চিটাগং। শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য চিটাগংয়ের প্রয়োজন ছিল ৩৮ রান। তখন তাদের হাতে ছিল তিন উইকেট। এমন অবস্থা থেকে দলের জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেন রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক। ক্রিজে ফ্রাইলিঙ্কের সঙ্গে ছিলেন সানজামুল ইসলাম।
১৯তম ওভারে মোহাম্মদ ইরফানকে বোলিংয়ে আনেন ওয়ার্নার। এই ওভার থেকে আসে ১৪ রান। শেষ ওভারে চিটাগংয়ের প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। আল-আমিন হোসেনের এই ওভার থেকে ১৮ রান নিতে সক্ষম হয় মুশফিকুর রহিমের দল। চিটাগংয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন ফ্রাইলিঙ্ক। ৩৭ রান করেন সিকান্দার রাজা। ৩৮ রান করেন ক্যামেরন দেলপোর্ট। ২২ রান করেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সিলেট সিক্সার্সের বোলারদের মধ্যে তাসকিন আহমেদ চার ওভারে ২৮ রান দিয়ে চার উইকেট নেন। দুই ওভারে ছয় রান দিয়ে দুই উইকেট নেন অলক কাপালি।
চিটাগং ভাইকিংস ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদকে হারায়। তাসকিনের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ হন শাহজাদ। এরপর ক্যামেরন দেলপোর্ট ও মোহাম্মদ আশরাফুল ৫৭ রানের জুটি গড়েন। দেলপোর্ট দুর্দান্ত খেলছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ইনিংসের অষ্টম ওভারে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাকে।
নবম ওভারে তাসকিনের বলে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ হন আশরাফুল। ২৩ বলে তিনটি চারের সাহায্যে ২২ রান করেন তিনি। দশম ওভারে আফিফের হাতে ক্যাচ বানিয়ে মুশফিকুর রহিমকে ফেরান অলক কাপালি। ১৩তম ওভারে মোসাদ্দেককেও ফেরান কাপালি। মোসাদ্দেক ফিরে যাওয়ার পর দলের হাল ধরেন সিকান্দার রাজা ও রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক। ইনিংসের ১৮তম ওভারের পঞ্চম বলে সিকান্দারকে ও ষষ্ঠ বলে নাঈমকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। শেষ দিকে ঝোড়ো ইনিংস খেললেও দলকে জেতাতে পারেননি রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক। ২৪ বলে চারটি ছক্কা ও একটি চারের সাহায্যে ৪৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড ওয়ার্নার ও নিকোলাস পুরানের হাফ সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৬৮ রান সংগ্রহ করে সিলেট সিক্সার্স। দলের পক্ষে অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ৪৭ বলে ৫৯ রান করেন। এই রান করার পথে তিনি ২টি চার মারেন ও ১টি ছক্কা হাঁকান। ৩২ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত থাকেন নিকোলাস পুরান। তিনি তিনটি চার ও তিনটি ছয় মারেন। এছাড়া আফিফ হোসেন ২৮ বল খেলে ৪৫ রান করেন। তিনি পাঁচটি চার মারেন ও তিনটি ছক্কা হাঁকান। চিটাগং ভাইকিংসের পক্ষে রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ৩টি, নাঈম হাসান ১টি ও খালেদ আহমেদ ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
সিলেট ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপাকে পড়ে। দলীয় শূন্য রানে ফিরে যান ওপেনার লিটন দাস। ইনিংসের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে ক্যামেরন দেলপোর্টের হাতে ক্যাচ হন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে নাঈম হাসানের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের হাতে ধরা পড়েন নাসির হোসেন। তৃতীয় ওভারে সাব্বির রহমানকে বোল্ড করেন ফ্রাইলিঙ্ক।
দলীয় ৬ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ার পর ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়েন আফিফ হোসেন। ইনিংসের ১১তম ওভারে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ হন আফিফ। এরপর ওয়ার্নারের সঙ্গে জুটি বাঁধেন নিকোলাস পুরান। তারা ৭০ রানের পার্টনারশিপ করেন। ১৯তম ওভারে ফ্রাইলিঙ্কের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওয়ার্নার। এরপর নিকোলাস পুরান ও অলক কাপালি ইনিংস শেষ করে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচ সেরা হন সিলেট সিক্সার্সের নিকোলাস পুরান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: পাঁচ রানে জয়ী সিলেট সিক্সার্স।
সিলেট সিক্সার্স ইনিংস: ১৬৮/৫ (২০ ওভার)
(লিটন দাস ০, ডেভিড ওয়ার্নার ৫৯, নাসির হোসেন ৩, সাব্বির রহমান ০, আফিফ হোসেন ৪৫, নিকোলাস পুরান ৫২*, অলক কাপালি ২*; রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ৩/২৬, নাঈম হাসান ১/২০, সিকান্দার রাজা ০/২৮, আবু জায়েদ রাহি ০/৩৪, খালেদ আহমেদ ১/৩৩, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/২৫)।
চিটাগং ভাইকিংস ইনিংস: ১৬৩/৭ (২০ ওভার)
(মোহাম্মদ শাহজাদ ৬, ক্যামেরন দেলপোর্ট ৩৮, মোহাম্মদ আশরাফুল ২২, মুশফিকুর রহিম ৫, সিকান্দার রাজা ৩৭, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৭, রব্বি ফ্রাইলিঙ্ক ৪৪*, নাঈম হাসান ০, সানজামুল ইসলাম ২*; তাসকিন আহমেদ ৪/২৮, মোহাম্মদ ইরফান ০/৩৫, নাসির হোসেন ০/১০, আল-আমিন হোসেন ০/৫৭, সন্দ্বীপ লামিচানে ০/২১, আফিফ হোসেন ০/৬, অলক কাপালি ২/৬)।