নির্বাচনের দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই উত্তাপ ছড়াচ্ছে, বাড়ছে উত্তেজনা। উত্তেজনা থেকেই সংঘাত-সংঘর্ষের সূচনা। গত শনিবার দেশের ২০ জেলায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় দুই শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় গণসংযোগের সময় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের ওপর হামলা হয়েছে। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে সংঘর্ষে বিএনপির প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। কক্সবাজারের চকরিয়ায় বিএনপির প্রার্থীর গণসংযোগে হামলার ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। এ ছাড়া শেরপুর, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া, দিনাজপুরের বিরল, ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া, ভোলার তজুমদ্দিন, নাটোরের বড়াইগ্রাম, খাগড়াছড়ির রামগড় ও রাজশাহীর দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশের যেকোনো নির্বাচন উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে, এমনটি আশা করা গেলেও শেষ পর্যন্ত তা হয় না। বিচ্ছিন্ন হলেও কিছু ঘটনা নির্বাচনের পরিবেশ অনেকাংশে নষ্ট করে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করছে। আশা করা হয়েছিল, অংশগ্রহণমূলক এই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করে তুলতে সব রাজনৈতিক দল দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে। কিন্তু সব দলেই কিছু অতিউৎসাহী কর্মী-সমর্থক থাকে, যাদের শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এ ছাড়া ঘাপটি মেরে বসে থাকা একটি গোষ্ঠী সব সময় এজাতীয় যেকোনো আয়োজন প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। নির্বাচনের সময় সবার আগে যে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হয়, সেটি হচ্ছে জননিরাপত্তা। ঘাপটি মেরে বসে থাকা অপশক্তি এ সময় বেরিয়ে আসতে পারে। দেশের যেকোনো প্রান্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের কোনো অঘটন।
এ অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাদের তৎপরতা আরো বাড়াতে হবে। যেকোনো উপায়ে নির্বাচনী সংঘর্ষ বন্ধ করতে হবে। সন্ত্রাস দমনে এখন থেকেই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাবে। আমরা আশা করব, সব ধরনের হামলা-সংঘর্ষ বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্যদিকে রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের কর্মী-সমর্থকদের সংযত করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে।