কাজিরবাজার ডেস্ক :
যেকোনো উপলক্ষে বাজারে পণ্যের দাম বাড়বে- এটা একটা স্থায়ী প্রবণতা হয়ে গেছে আমাদের দেশে। তবে উৎসবভেদে কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের দাম আর সবকিছুকে ছাড়িয়ে যায়। পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে যেমন গরম হয়ে উঠেছে মশলার বাজার।
এই বকরি ঈদে ঘরে ঘরে সেমাই-পায়েসের পাশাপাশি রান্না হয় কোরবানির মাংস। ফলে অন্য সময়ের চেয়ে চাহিদা বাড়ে হলুদ-মরিচ, পেঁয়াজ, আদা-রসুন আর গরম মশলার। এই সুযোগটাই নিচ্ছেন পাইকারি ও খুচরা- দ্ইু পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা।
তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা মশলার বাজার চড়ে যাওয়ার জন্য পাইকারি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন। আর এরই প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েছে বলে তাদের দাবি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে রাতারাতি দাম বাড়ার তথ্য। কেউ কেউ বলছেন, দু-একটা পণ্যের দাম বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে প্রায় সব মশলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সপ্তাহ খানেক আগে ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়।
দাম বেড়েছে এলাচ-দারুচিনি, জয়ত্রী, জিরা, লবঙ্গ ইত্যাদি গরম মশলার। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে ১৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া এলাচের দাম এখন ২ হাজার টাকা।
গত সপ্তাহে এলাচের পাইকারি দর ছিল ১৫০০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেখানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৩৫০ টাকা। অর্থাৎ এখন এ মশলাপণ্যের কেজি ১৮৫০ টাকা।
ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবমতে, ২০১৭ সালের এই সময়ে এলাচের দাম ছিল কেজিপ্রতি ১২০০-১৬০০ টাকা। চলতি বছরে সে দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে কেজিতে ৫৫০ টাকা বেড়েছে সাদা গোলমরিচের দাম। বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকা কেজি দরে। আর খুচরা বাজারে দাম ১৫০০-১৬০০ টাকা।
১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া জয়ত্রীর পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে কেজিতে ৫৫০-৫৬০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৯৫০ টাকা কেজি দরে। খুচরা কিনতে কেজি প্রতি গুনতে হচ্ছে ২২০০-২৩০০ টাকা।
খুচরা বাজারে ভারতীয় জিরার দাম ৪০০ টাকা কেজি। একই জিরা পাইকারি বাজারে ৩১০ টাকা। গত সপ্তাহে পাইকারি বাজারে এর দাম ছিল ২৮০ টাকা।
খুচরা বাজারে ৫০০-৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে টার্কি জিরা। পাইকারি বাজারে এর দাম ৪০০-৪০৫ টাকা। গত সপ্তাহের তুলনায় এখানে দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০-৬৫ টাকা।
পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, হাতে গোনা কয়েকটি মসলার দাম বেশি বেড়েছে। আর সেই সুযোগে সব ধরনের মসলার দাম বাড়িয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা।
কৃষি মার্কেট পাইকারি বাজারের বিক্রেতা মো. আবদুল আলীম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘এখন আর দাম বাড়ার সুযোগ নেই। দাম যা বাড়ার বেড়ে গেছে। এখন ঈদের যে কদিন আছে, এর মধ্যে দাম না কমলেও বাড়ার সম্ভাবনা দেখছি না।’
আবদুল আলীম আর বলেন, ‘দাম তো এমনিতে বাড়ে না। আমরা মৌলভীবাজার থেকে মাল আনি। সেখানে ব্যবসায়ীদের একটা বিশাল সিন্ডিকেট আছে। তারাই দাম বাড়ায়। আর এক সিন্ডিকেট আমাদের খুচরা ব্যবসায়ীরা। কয়টা মসলার দাম বাড়ছে? এরা সবগুলার দাম বাড়াইছে।’
খুচরা বাজারে দারুচিনি বিক্রি হতে দেখা গেছে ৩২০ টাকায়। পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা কেজি দরে। লবঙ্গ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। খুচরা বাজারে ১১০০-১২০০ টাকা কেজি।
খুচরা বাজারে ধনিয়া ১২০ টাকা, গুঁড়া হলুদ ২০০ টাকা, কিসমিস ৪৮০ টাকা, গোল মরিচ ৭০০ টাকা, কাঠবাদাম ১০০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
দাম বেড়েছে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের। এক সপ্তাহ আগে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়। কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়ে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা দরে।
গত সপ্তাহের চেয়ে ১৫-২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে আদা ও রসুন। আদার কেজি ১৪০ টাকা এবং রসুনের দাম ১৬০ টাকা।