কাজিরবাজার ডেস্ক :
অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ বা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। আর ভোটগ্রহণ ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ কিংবা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন তিনি। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে সংলাপের কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের এই কথা বলেন ইসি সচিব। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, সংসদের প্রথম অধিবেশন ২৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই হিসেবে ৩০ তারিখ থেকে আমাদের কাউন্টডাউন শুরু হবে। নির্বাচন কমিশন সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। সেই হিসেবে অক্টোবরের শেষে অথবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার সব প্রস্তুতি আছে। তবে নির্বাচনের তারিখের বিষয়ে আলোচনা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে ডিসেম্বরের শেষার্ধ্বে অথবা জানুয়ারির প্রথম দিকে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি সচিব বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচনের ৮০ ভাগ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন কমিশন যে নির্দেশনা দেবে তা বাস্তবায়ন করব। নির্বাচন কমিশন প্রস্তুতি হিসেবে যা যা করা দরকার এর সব প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন বলেছে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলাদা একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং সামনে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করব সেগুলোর চেকলিস্ট তৈরি করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
চেকলিস্টে কোন বিষয়গুলো থাকতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চেকলিস্টে তিনশ আসনের ভোটার তালিকা প্রস্তুত, ভোটকেন্দ্রগুলো ব্যবহার উপযোগী হয়েছে কি না, আরও ভোটকেন্দ্র তালিকাভুক্তি প্রয়োজন আছে কি না, ব্যালট পেপারের বন্য কাগজ কেনা, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দসহ নির্বাচনের জন্য সামগ্রিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে কি না সে বিষয়গুলো থাকবে। পোলিং অফিসার, প্রিজাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণের বিষয়টিও আছে।
ইসি সচিব বলেন, ভোটার তালিকার কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আমাদের ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্র আছে, আরেও পাঁচ হাজার কেন্দ্র বাড়তে পারে। এগুলোর খসড়া তালিকা জেলা-উপজেলায় প্রকাশ করা হয়েছে। যারা স্টেকহোল্ডার আছে তাদের যদি কোনো আপত্তি থাকে সে বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করা হবে, সেগুলো সরেজমিনে তদন্তের পর নিষ্পত্তি করে আমাদের কাছে গেজেট নোটিশ পাঠাবে। এছাড়াও নির্বাচন সামগ্রী কেনার যে বিষয়টি রয়েছে, ইতোমধ্যে যারা টেন্ডার আহ্বান করেছে তাদের আমরা কার্যাদেশ দিয়েছি। তারা শিগগির আমাদের মালামালগুলো সরবরাহ করবে।
হেলালুদ্দীন বলেন, প্রতিবছর সার্ক দেশসমূহের প্রধান নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে ফেম্বোসা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আগামী ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর দুই দিনব্যাপী ঢাকায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। হোটেল রেডিসনে স্পিকার শিরীন শারমিন সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। আটটি দেশের নির্বাচন ও নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে তারা আলোচনা করবেন। তারা তাদের অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করবেন।
তফসিল ঘোষণার আগে এই সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আয়োজক দেশ হিসেবে আমরা এই সম্মেলনকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছি। যেহেতু সার্কভুক্ত দেশগুলো এখানে অংশ নেবে ফলে আমরা তাদের অভিজ্ঞতাগুলো গ্রহণ করতে পারি। কোন দেশে কীভাবে নির্বাচন হচ্ছে, নির্বাচনের পদ্ধতিগুলো কী, জনগণকে সম্পৃক্ত করে রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্পৃক্ত করে কীভাবে নির্বাচন করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে এখানে আলোচনা হবে।