স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৬নং ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়া এলাকায় মারামারিতে ২ কাউন্সিলর প্রার্থী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা দু’জনই এখন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। আহতরা হচ্ছেন-সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৬নং ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর ও এবারের নির্বাচনে প্রার্থী আব্দুল মুহিত জাবেদ এবং কাউন্সিলর প্রার্থী সাব্বির আহমদ চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দু’পক্ষ পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করছেন।
তবে এ অভিযোগ পুরোপুরি নাটক বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং ১৬, ১৭ ও ১৮নং ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।
ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন- মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এক প্রার্থীর অভিযোগ পেয়ে পুলিশসহ আমি ১৬নং ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়া এলাকায় যাই। সেখানে গিয়ে দেখি কাউন্সিলর প্রার্থী সাব্বিরের বাসার ভেতরে মহিলাদের নিয়ে একটি সভা চলছে। এই বাসার বাইরে কর্মীদের নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী জাবেদ ও একরাম দাঁড়িয়ে ছিলেন। তখন এখানে দাড়িয়ে থাকার বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান নামাজ শেষে প্রচারণার কাজ করছেন। তিনি বলেন- আস্তে আস্তে পরিস্থিতি উত্তেজিত হতে থাকলে তিনি সাব্বিরকে ১০ মিনিটের মধ্যে সভা শেষ করার নির্দেশ দেন এবং বাকি প্রার্থীদের সেখান থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু, দুপক্ষ নির্দেশ অমাণ্য করে কথাকাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। উত্তেজরনা বাড়তে থাকলে তিনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে অবগত করেন এবং ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে উপস্থিত হন। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দুপক্ষ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এখানে মারামারি কিংবা হাতাহাতির কোন ঘটনা ঘটেনি। দুই প্রার্থীই এ ঘটনা নিয়ে নাটক সাজাচ্ছেন। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে, ঘটনার ব্যপারে ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মুহিত জাবেদ বলেন- তাঁতিপাড়ার একটি বাসায় ভোটারদের মধ্যে সাব্বির ও তার কর্মীরা টাকা বিতরণ করছেন এমন খবর পান। খবর পেয়ে তিনি সেখানে যাওয়া মাত্রই তার উপর হামলা চালায় সাব্বির ও কর্মীরা। এতে তিনি হাতে এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
অপরদিকে কাউন্সিলর প্রার্থী সাব্বির আহমদ চৌধুরী চৌধুরী বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে তাঁতিপাড়ায় একটি বাসায় তিনি এলাকার কয়েকজনের সাথে বৈঠক করছিলেন। হঠাৎ সেখানে এসেই তাদের উপর হামলা করেন কাউন্সিলর জাবেদসহ তার কর্মীরা। এসময় আমার ভাই সাকিব ও শিপলু আহত হয়। হামলায় আহত হয়ে তারা বর্তমানে ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোশাররফ হোসেন বলেন- মারামারির কোন ঘটনার খবর তিনি পাননি।
এদিকে, কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আব্দুল মুহিত জাবেদ’র উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে রাত ৯টায় তার নির্বাচনী কার্যালয়ে এলাকাবাসীর উদ্দ্যোগে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্টিত হয়েছে।
বিশিষ্ট মুরব্বী পীর আব্দুল হান্নান’র সভাপতিত্বে ও সওদাঘরটুলা সমাজ কল্যাণ সংস্থার সহ-সভাপতি আলী হোসেন হাসনুর পরিচালনায় প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট মুরব্বী লাল মিয়া, ফখরুল ইসলাম,ছিদ্দেক মিয়া, রোয়াব মিয়া, আব্দুল মুমিন, সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি দিলওয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক রাহাদ আহমদ রাজু, সমাজসেবী ইকবালুর রহমান কামাল, আলী হায়দার মজনু, ইকরাম আহমদ, ইসমাইল হোসেন খোকন, পীর মোঃ আলী মিলন, সাকিল আহমদ, ফারুক আহমদ, কালাম আহমদ, আসাদ আহমদ, মতিন মিয়া, আং আহাদ, শামীম আহমদ, জুবায়ের আহমদ, রজব আহমদ, রাহেল আহমদ, রাজু, আবিদ, সুমিত, মুরাদ, মিন্টু, রোহেল, সোহেল প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ির প্রতিবাদ করায় জনপ্রিয় কাউন্সিলর জাবেদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের হামলায় শুধু জাবেদ-ই আক্রান্ত হননি,পুরো ওয়ার্ডবাসী আক্রান্ত হয়েছেন। তাই আগামী ৩০ জুলাই টিফিন মার্কায় ভোট দিয়ে ওয়ার্ডবাসী এ হামলার জবাব দেবেন। বক্তারা আরো বলেন, নির্বাচনে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। জাবেদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে যারা হামলা করেছে ৩০ তারিখ ওয়ার্ডবাসী ব্যালট পেপারের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাখ্যান করবে এবং সন্ত্রাসীদের এ হামলার প্রতিবাদ জানাবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।