শামীম, নাসিম সহ ১শ’ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ॥ আটক ছাত্রদল নেতা সাঈদ ও এনামূলকে জেলে প্রেরণ

60

স্টাফ রিপোর্টার :
বিএনপির কেন্দ্রীয় এবং সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতাসহ প্রায় ১শ’ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। পুলিশের কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে গত রবিবার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই ফয়েজ আহমদ শামীম বাদী হয়ে শাহপরান থানার এই মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৩৯ জনের নামোল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত ৬০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজহার নামীয় আসামিরা হচ্ছে- জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম, সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন, মহানগর বিএনপির সহ সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, এম এ হক, সহ সভাপতি সালেহ আহমদ খসরু, বিএনপি নেতা মাহবুবুর রব চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দীকি, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান আহমদ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এডভোকেট সাঈদ আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদিম হোসেন নাদিম, এনামুল হক এনাম, কয়েছ আহমদ, আব্দুস সালাম, মুক্তা আহমদ, আরিফ আহমদ, নাইম আহমদ, আব্দুল কাদের মালেক, এমরান চৌধুরী, মুনিম লস্কর, নিলু মিয়া, ইফতেখার, মকবুল, সায়মন আহমদ, আব্দুল খালিক মিল্টন, বদরুল আজাদ রানা, নজরুল ইসলাম, শেখ আল মামুন রাজু, শামীম আহমদ সাধারণ সম্পাদক দক্ষিণ সুরমা বিএনপি,আজমল বক্ত সাদেক যুগ্ম সম্পাদক মহানগর বিএনপি, মামুন সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি, মীর্জা মতি, সুদীপজ্যোতি, হুমায়ুন আহমদ মাসুক, সুমন আহমদ, হাবিবুর রহমান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা পুলিশের নিরাপত্তা হেফাজত থেকে বেআইনী জনতায় দলবদ্ধ হয়ে আসামী ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালায়। এছাড়াও তারা সরকারি কাজে বাধা ও সাধারণ মানুষের চলাচলে রাস্তা বন্ধ করে ক্ষতিসাধন করায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই বাদী হয়ে ৩৯ জনকে এজহার নামীয় আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলার এজহার নামী আসামিদেরকে গ্রেফতার করার জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তিনি আরও জানান, পুলিশ এ মামলায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এডভোকেট সাঈদ আহমদ ও ছাত্রদল কর্মী এনামুল হককে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
এর আগে গতকাল সোমবার ভোরে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এডভোকেট সাঈদ আহমদ ও সাবেক গণসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক এনামুল হককে আটক করেছে পুলিশ। মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানার একটি দল পৃথক অভিযান চালিয়ে শাহজালাল উপশহর এলাকা থেকে তাদেরকে আটক করা হয়। সোমবার আটককৃতদের পুলিশ এসল্ট মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে হাজির করে। পরে আদালতের বিচারক হরিদাস কুমার তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাজী দিনার বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সিলেটে পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে। প্রতিদিন পুলিশের একাধিক বাহিনী বিএনপি,ছাত্রদল, যুবদলের নেতাকর্মীদের বাসায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছেন। এই সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার চাচ্ছে প্রভাব খাটিয়ে জনগণের রায় তাদের পক্ষে নেয়ার জন্য। কিন্তু এই সিলেটের মানুষ তা কখন হতে দেবে না।
উল্লেখ্য- শনিবার মহানগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার কার্যালয় (দক্ষিণ) থেকে বিএনপি কর্মী রাসেল আহমদ ও সুমন আহমদ ছাড়িয়ে আনতে নেতাকর্মীদের নিয়ে পুলিশ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী আরিফ।
কামরানের নির্বাচনি অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা : সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৪নং ওয়ার্ডের আওতাধীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গত শনিবার রাতে একদল দুর্বৃত্তরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কামরানের নির্বাচনি অফিসের অগ্নিসংযোগ করে। পরে স্থানীয়রা সাথে সাথে আগুন নিয়ন্ত্রণ করলেও জরুরী কাগজপত্র পুড়ে যায়। পরদিন সকালে রবিবার বদর উদ্দিন আহমদ কামরানসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নির্বাচনি অফিসটি বোরহান উদ্দিন মাজারের কাছাকাছি অবস্থিত। এ ঘটনায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ আহমদ বাদী হয়ে রবিবার শাহপরাণ থানায় জামায়াত-বিএনপির ৩৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাহপরাণ থানার ওসি আক্তার হোসেন। তিনি বলেন- এ মামলায় জামায়াত-বিএনপির ৩৪জনকে আসামী করা হয়েছে। পুলিশ আসামিদেরকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে তিনি কারও নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।