কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলার অনেক এলাকা থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমার সাথে সাথে ব্যাপক জলাবদ্ধতার কারণে জন-দুর্ভোগ বেড়েছে। তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানি কমার সাথে সুরমা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কানাইঘাট লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ও লক্ষ্মীপ্রসাদ পশ্চিম, বড়চতুল, পৌরসভা, কানাইঘাট সদর, ৭নং দক্ষিণ বানীগ্রাম, ঝিঙ্গাবাড়ী ও রাজাগঞ্জ ইউনিয়নে অনেক এলাকা থেকে বন্যার পানি নেমে গেছে। এসব এলাকায় ব্যাপক ফসলি জমির ধান ক্ষেত ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। পাহাড়ী ঢলের কারণে কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাঁতবাক ও দীঘিরপার ইউপির বন্যা পরিস্থিতি গত কয়েকদিন ধরে ব্যাপক অবনতি হলে গত দু-দিন থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এ দুটি ইউনিয়নের অনেক এলাকার গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক বাড়ী ঘর এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। বিশেষ করে দীঘিরপার ইউপির অনেক বাড়ী ঘর বন্যার পানিতে আক্রান্ত হওয়ায় অনেকে ইউনিয়ন পরিষদ ও আশ্রয় কেন্দ্রে পরিবার নিয়ে অবস্থান করছেন। গত মঙ্গলবার এ ইউপির পশ্চিম ঠাকুরের মাটি গ্রামে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার সময় পানিতে ডুবে দুই সন্তানের জননী হুসনেয়ারা বেগমের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। দীঘিরপার ইউপি চেয়ারম্যান আলী হুসেন কাজল জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নে ভয়াবহ বন্যা রুপ নিয়েছে। এখনো হাজারো মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন অনেকের বাড়ী ঘর তলিয়ে গেছে তারা পরিবার নিয়ে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া নারী-পুরুষের মাঝে বিজিটির চাল ও সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বন্যার পানির তীব্র ¯্রােতে ও দর্পনগর সুরমা ডাইক ভেঙ্গে যাওয়ায় রাস্তাঘাটের কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেওয়ার পাশাপাশি পানিবাহিত রোগ দেখা দিয়েছে । পানিবন্ধি মানুষের মাঝে আরো বেশি করে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের দাবী জানিয়েছেন তিনি। এদিকে সরকারি ভাবে বন্যা দুর্গতদের জন্য বরাদ্দকৃত ২৭ মেট্রিকটন চাল উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বিতরণ করা হয়েছে। আরো ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণের জন্য সরকারের কাছে জন-প্রতিনিধিরা দাবী জানিয়েছেন। কানাইঘাটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করেছেন সিলেট-৫ আসনের এমপি আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন। ইতিমধ্যে তিনি কানাইঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকা কয়েক দফা পরিদর্শন করে সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ ও বন্যা দুর্র্গতদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) লূসিকান্ত হাজং ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ গতকাল বৃহস্পতিবার সাঁকবাক ইউপির বন্যা দুর্গত এলাক পরিদর্শন করেন এবং বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার, ওরস্যালাইন ও পানিবাহিত রোগের ঔষধ বিতরণ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাঁতবাক ইউপির চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ পলাশ।