হবিগঞ্জে কুশিয়ারা নদী থেকে ড্রেজার বসিয়ে ফের বালু উত্তোলন, নদীর তীরে ভাঙ্গন

252

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর বুকে ফের চেপে বসেছে ড্রেজার মেশিন। অবৈধভাবে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। এতে কতিপয় অর্থলোভী লাভবান হলেও হুমকির মুখে নদীর তীর এলাকার বাসিন্দারা। নদীর তীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে ব্যাপকভাবে। এছাড়া সরকারি চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাকে বালু উত্তোলন করায় বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ফের বালু উত্তোলন শুরু হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এসব অর্থলোভীদের খুঁটির জোর কোথায়? ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় এলাকাবাসী জানান, কে বা কারা এর সাথে জড়িত তা প্রশাসন ভাল করেই জানে। শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের পারকুল বনগাঁও এলাকা থেকে কুশিয়ারা নদীর উপর ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি চক্র। এসময় এ প্রতিবেদক বালু উত্তোলনের চিত্র ক্যামেরায় ধারণ করলে তারা দ্রুত ড্রেজার মেশিন নিয়ে পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর সাথে আলাপ হলে তারা জানান, পারকুল গ্রামের বিবিয়ানা বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট সংলগ্ন কুশিয়ারা নদীতে একাধিক স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করছেন কয়েকটি বালু খেকো সিন্ডিকেট। কুশিয়ারা নদীর পানিতে ভাসমান ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পাইপের মাধ্যমে নদীর গভীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে নদীর পাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। আশপাশের আবাদি জমি ও বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয়রা বলেন, জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে সরকাওে বিভিন্ন দপ্তর এমনকি সর্বশেষ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি মন্ত্রী বরাবর অর্থলোভী বালুখেকোদের নামে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোনভাবেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছেনা। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের সংবাদ প্রকাশের হয়। সংবাদটি হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মনীষ চাকমার নজরে আসলে তার নির্দেশে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার ভূমির অভিযানে কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনকালে ২টি নৌকাসহ ৭ জনকে আটক করা হয়।। কিন্তু মূল হোতারা তখন থেকে এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে রয়েছে। এর ঘটনার পর কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ ছিলে। কিন্তু ফের শুরু হয়েছে। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সরকারের রাজস্ব ফাঁকি বালু উত্তোলন ও নদী রক্ষায় প্রশাসনের ভূমিকার সমালোচনা করেন। সমাজকর্মী নজরুল ইসলাম বলেন, কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল, কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের শুরু হয়েছে বালু তোলা। ইতোমধ্যে বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গনে আশপাশের রাস্তা তলিয়ে গেছে। তাই নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন-হাসান বলেন, কুশিয়ারা নদী থেকে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই, মূল হোতাদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।