মাসুদ আল রাজী
মুক্ত মঞ্চ, বি-বিল্ডিং এর টং কিংবা লাইব্রেরী বিল্ডিং এর সামনে প্রাণোচ্ছল কোনো আড্ডা নেই । ইউ সি কিংবা শহিদ মিনারের সিঁড়িতে জটলাও চোখে পড়ে না। সন্ধার পর “এক কিলো”তে দল বেঁধে হাঁটাও দেখা যায় না। সুনশান নীরবতা সবখানে।
গত ৩১ মে থেকে ভার্সিটির হলগুলো বন্ধ হওয়ার পর থেকে এমনই থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিলো শাবিপ্রবি ক্যা¤পাসে। দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের বন্ধে হল খোলা থাকলেও শাবিপ্রবির হলগুলো ছিলো বন্ধ। তাই ক্যা¤পাস ঈদের আগ পর্যন্ত জনশূন্য থাকলেও ঈদের দিন দেখা গেলো ভিন্ন এক চিত্র ।
ঈদ এবং ঈদের পরের দুদিন ক্যা¤পাসে ছিল অগণিত পর্যটকদের ভিড়। ছাত্র-ছাত্রীরা না থাকলেও ৩২০ একরের সৌন্দর্যে ঘেরা এই ক্যা¤পাসে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। ক্যা¤পাসের আই.সি.টি বিল্ডিং, শহিদ মিনারসহ এক কিলোতে শহর থেকে আগত মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। কেউ এসেছেন প্রিয় মানুষকে সাথে নিয়ে ঘুরতে, কেউ এসেছেন ক্যা¤পাসের জনপ্রিয় ফুচকা খেতে, কেউবা বন্ধুদের সাথে দলবেঁধে এসেছেন ফটো তুলতে।
ঈদে ক্যা¤পাসে পরিবারসহ ঘুরতে আসেন সিলেটে অবস্থানরত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। অনেক প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাই আবার ঈদের ছুটিতে সিলেট এসে প্রিয় ক্যা¤পাসকে এক নজর দেখার জন্য আসেন। ক্যা¤পাস ঘুরতে এসে ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসান জাকারিয়া বলেন, “চাকরি করা হয় ঢাকায়, অনেকদিন ক্যা¤পাস দেখি না, তাই ফ্যামেলির সবাইকে নিয়ে চলে আসলাম ক্যা¤পাসটাকে দেখতে।” শহরের অনেক আকর্ষণীয় পর্যটন ¯পট বাদ দিয়ে শাবিপ্রবিতে কেন ?? এমন প্রশ্নের জবাবে অনেকই জানান যে, “শহরের কোলাহল ও যান্ত্রিকতা বাদ দিয়ে এমন সবুজে ঘেরা কোলাহল বিহীন জায়গা আসলেই অনেক ভালো লাগে, তাই ঈদের দিনটাকে সুন্দরভাবে উৎযাপন করতে এখানে আসা ।”
রোজা ও ঈদের ছুটিতে প্রায় এক মাস ক্যা¤পাস বন্ধ থাকায় ক্যা¤পাসের ভ্রাম্যমান খাবার দোকানগুলোও ছিল বন্ধ। কিন্তু ঈদে পর্যটকদের আগমনে ক্যা¤পাসের টং এবং চটপটি-ফুচকার দোকানগুলোতে অনেক ভিড় দেখা যায়। ঈদের আমেজে দর্শনার্থীদের পেয়ে দোকানীরাও অনেকটাই উচ্ছ্বাসিত।
৩২০ একরের সবুজ শ্যামলিমায় ঢাকা ক্যা¤পাসে প্রতিনিয়ত পর্যটকরা ভিড় করুক, দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হোক স্বপ্নের “এক কিলো”- এটাই সবার প্রত্যাশা।