সেবা খাতকে শক্তিশালী করণ

21

শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাল জীবাণুর আক্রমণ বাড়ছে। এই আক্রমণ হতে রেহাই পাওয়া সহজসাধ্য নয়, যে কোন বয়সীর জন্য। তবে প্রতিবছর এই জীবাণুর মাধ্যমে দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু আক্রান্ত হচ্ছে। এই হিসাবে বলা হয়েছে, সারাদেশে বিভিন্ন রোগে মৃত্যুবরণকারী পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর দুই-তৃতীয়াংশ মারা যায় এই ভাইরাসে। আর ঢাকায় প্রতিবছর প্রতিটি শিশু গড়ে এক দশমিক পাঁচবার শ্বাসতন্ত্রজনিত বিভিন্ন ভাইরাস আক্রমণের শিকার হয়েছে। বয়সী মানুষও বিভিন্ন ভাইরাস জীবাণুর আক্রমণ হতে রেহাই পাচ্ছে না। পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ১৮৬ জন রোগীকে পরীক্ষা করে একশ’ জনের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রে ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে।
এক গবেষণায় পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের চেয়ে শ্বাসতন্ত্রে ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। রোগের লক্ষণ দেখা দেয়ার সময় থেকে রোগীদের ক্লাস্টার অনুসন্ধান এবং গবেষণাগারের পরীক্ষায় রোগের কারণ নিশ্চিতকরণে তিন থেকে দশ দিন সময় লাগে। আন্তর্জাতিকভাবে উদ্বেগ সৃষ্টিকারী জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ রোগসমূহের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় প্রজন্মের আগে এগুলো চিহ্নিত করার সম্ভাবনা কম। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা মনে করেন, যত তাড়াতাড়ি এই রোগ ধরা যাবে, তত তাড়াতাড়ি তা নিরাময় করা যাবে। শ্বাসতন্ত্রজনিত বিভিন্ন ভাইরাসের মধ্যে রয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা, এ্যাডিনোভাইরাস, শ্বাসতন্ত্রের সিনসিশিয়াল ভাইরাস, প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা-১, প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা-২ ও প্যারাইনফ্লুয়েঞ্জা-৩। এসব রোগের নাম সাধারণ কেন, অনেক শিক্ষিতজনেরও অজানা। অনেকে রোগের লক্ষণ ও পূর্বাভাস সম্পর্কে অজ্ঞতা থাকায় যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাওয়া সম্ভব হয় না। অসুখের মাত্রা বেড়ে গেলে তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়। হাসপাতালগুলোতে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগের চিকিৎসায় গড়ে খরচ হয় প্রায় সাত হাজার টাকা, যা নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য অত্যধিক ব্যয়বহুল, অনেকের পক্ষে অর্থ যোগাড় করাও সম্ভব হয় না। ফলে শ্বাসতন্ত্রের মারাত্মক সংক্রমণে আক্রান্ত শিশু দুর্ভোগ পোহায় এবং মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে থাকে। তবে সেবাখাতকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে এই অসুখের নিরাময়ও একটি পদক্ষেপ হতে পারে।