জাহাঙ্গীর আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে :
হাসপাতাল আছে, রোগীও আছে, কিন্তু ডাক্তার নেই। দীর্ঘ দুই বছর ডেপুটেশনে একজন চিকিৎসক দিয়ে স্বাস্থ্য সেবা চালানো হলেও গত ১৫দিন ধরে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি একেবারেই বন্ধ রয়েছে। চিকিৎসক না থাকায় প্রতিদিনই সকাল থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সিলেট সদর, বিশ্বনাথ ও ছাতক উপজেলার দুই শতাধিক রোগীদের পড়তে হচ্ছে চিকিৎসা বিড়ম্বনায়। ডেপুটিশনে থাকা উপ-সহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ডাক্তার লাকী খাতুন গত ১৮ ফেব্র“য়ারি অন্যত্র বদলি হওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে সিলেটের বিশ্বনাথের ‘দিঘলী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র’টি। মেডিকেল অফিসারসহ ৪টি পদ থাকলেও যেখানে গত দু’সপ্তাহ ধরে কেবল আসা-যাওয়া করেই ক্লান্ত হন রোগীরা, দেখা পাননি কোন চিকিৎসকের।
সরেজমিন গতকাল রবিবার সকাল ১১টায় দিঘলী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেলো চিকিৎসকের অপেক্ষায় বারান্দায় বসে আছেন রোগীরা। ঠিক সেই মুহুর্তে দিঘলী প্রাইমারি স্কুলে যাবার পথে ৩য় শ্রেণীর ছাত্রী আমিনা বেগম রোগীদের উদ্যেশে বলে উঠলো, ‘ইকানো (এখানে) ডাখতর (ডাক্তার নেই) নাই, আসপাতাল (হাসপাতাল) বন্ধ! এসময় কথা হয় হাসপাতালের বারন্ধায় বসা চিকিৎসা নিতে আসা বিশ্বনাথের উদয়পুরের সত্তরোর্ধ মখলিছ আলীর সঙ্গে। তিনি জানান সকাল ১০টা থেকে তিনি চিকিৎসকের অপেক্ষায় রয়েছেন। একইভাবে সিলেট সদর উপজেলার মৌলভীর গাঁওয়ের ফয়েজ উদ্দিনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম, বিশ্বনাথের মির্জারগাঁওয়ের দিনমজুর আনহার মিয়ার স্ত্রী পিয়ারা বেগমও হতাশা ব্যক্ত করলেন।
এদিকে ১৫দিন ধরে হাসপাতাল বন্ধ থাকায় অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা: আব্দুর রহমান উৎকোচ না পাওয়ায় ওই হাসপাতালে কোন চিকিৎসককে দায়িত্ব নিতে দিচ্ছেননা। এ প্রসঙ্গে সরাসরি কাদিপুরস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মতামত জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি (টিএইচও) ডা: আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, তার বক্তব্য নিতে হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি দেখাতে হবে। তা না হলে তিনি (ডা: আব্দুর রহমান) গণমাধ্যমে কোন বক্তব্য দিবেন না।
তবে, টিএইচও বক্তব্য রা দিলেও সিলেটের সিভিল সার্জন ডা: হিমাংশু রায় এ প্রসঙ্গে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘দিঘলী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি জনগুরুত্বপূর্ণ। আগামি দু’একদিনের মধ্যে ওই দিঘলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসক দেওয়া হবে।