স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীতে মাংসের দোকানে গোশত বিক্রি বন্ধের ফলে মুরগির দোকানে ভিড় বেড়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া গরু ও ছাগলের গোশত বিক্রি করছেন না মহানগরীর ব্যবসায়ীরা। গত বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে এক জরুরি বৈঠকে সিলেট মহানগর মাংস ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দ গোশত বিক্রি বন্ধের এই ঘোষণা দেন।
মাংস ব্যবসায়ীদের দাবি- সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত গোশত বিক্রি করে তাদের লোকসান হয়। বার বার দাবি জানিয়েও সিসিক বিক্রিমূল্য বাড়াচ্ছে না। তাই তারা বাধ্য হয়ে মহানগরী এলাকায় গরু ও ছাগলের গোশত বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। তাদের এ ধর্মঘট চলবে অনির্দিষ্টকালের জন্য।
এদিকে, সিলেটে গরু ও ছাগলের গোশত বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন মহানগরী এলাকার রেস্টুরেন্ট, খাবার হোটেল ও পার্টি সেন্টারের মালিক-ব্যবস্থাপকরা। কাস্টমারদের চাহিদা মেটাতে তারা প্রথম দিনই হিমিশিম খাচ্ছেন বলে জানা গেছে। সিলেট মহানগরীতে গোশত না পেয়ে অনেকেই সিলেটের বাইরে থেকে বেশি দামে মাংস সংগ্রহ করছেন। অনেকে সুনামগঞ্জ থেকে পর্যন্ত গোশত নিয়ে এসেছেন।
এ বিষয়ে নগরীর জিন্দাবাজার এলাকার একটি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জানান, কাস্টামারদের চাহিদা আমাদের পুরণ করতে হবে। তাদের কাছে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। হঠাৎ করে ব্যবসায়ীরা গোশত বিক্রি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা বেশ বিপাকে পড়েছি। সিসিক কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি, তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হোক।
অপরদিকে, সিলেটে গরু ও ছাগলের গোশত বিক্রি বন্ধ থাকায় চাপ পড়েছে নগরীর মুরগির দোকানগুলোতে। তবে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো দোকানে বাড়তি দাম রাখার অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
নগরীর কয়েকটি মুরগির দোকান ঘুরে দেখা গেছে, আগের মতোই ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, লাল মুরগির পিস ৪০০-৪৫০, সোনালী ও কক মোরগের পিস আকার-ভেদে ১৮০-২৫০ ও কোয়েল পাখির পিস আকার-ভেদে ২৫-৩৫ টাকা।
রিকাবীবাজারের এক মুরগির দোকানি বলেন, গত কয়েকদিনের তোলানায় বেচা-বিকি ভালো। তবে এখনও দাম বাড়ার খবর পাইনি। যদি পাইকার বা খামার থেকে আমাদের বাড়তি দামে কিনতে হয় তবে আমরা বাড়তি দামে বিক্রি করতে হবে।
গরু ও ছাগলের গোশত বিক্রি বন্ধের বিষয়ে সিলেট মহানগর মাংস ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালিক বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ মহানগরী এলাকায় গরুর গোশত ৬০০ ও ছাগলের গোশত ৮৫০ টাকা নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা যে দামে গরু বা ছাগল ক্রয় করি সে অনুযায়ী সিসিক নির্ধারিত দামে গোশত বিক্রি করলে আমাদের লোকসান হয়। আমরা গত এক মাস থেকে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে দাম বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসলেও সর্বশেষ সিসিক কর্তৃক ধার্যকৃত দাম ওই ৬০০ ও ৮৫০ টাকাই রেখে দেওয়া হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে গরু ও ছাগলের গোশত বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। আমরা লোকসান দিয়ে তো ব্যবসা করতে পারবো না।
তিনি আরও বলেন, সিলেটের বাইরে অন্যান্য স্থানে এ দামের চাইতে বেশি টাকায় গরু ও ছাগলের গোশত বিক্রি করা হয়। আমরা গরু-ছাগল ক্রয় করি সিলেটের বাইরে থেকে। তাই পশুর দাম পড়ে বেশি। আমরা সারাদেশে এক দাম নির্ধারিত করে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। ব্যবসায়ীদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সিলেটে গরু ও ছাগলের গোশত বিক্রি বন্ধ রাখবেন বলে জানান তারা।