প্রধানমন্ত্রীর প্রতীক্ষায় সিলেটবাসী ॥ প্রস্তুত আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ ॥ ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ১৮টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন ॥ নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যানার-ফেস্টুন-বিলবোর্ড অপসারণ

126

স্টাফ রিপোর্টার :
৬০ জনের একটি টিম নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার এক সরকারি সফরে সিলেট আসছেন। সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটের সময় বিমানযোগে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনার এ আগমনকে ঘিরে সাজ সাজ রব পড়েছে সিলেটে। রাখা হয়েছে ঐতিহাসিক আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের জনসভাস্থলে মঞ্চ প্রস্তুত করে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপেক্ষায় সিলেটবাসী।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি অনুসারে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি প্রথমে হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে দরগাহ এলাকায় যাবেন। মাজার জিয়ারত শেষে বেলা সাড়ে ১১ টায় শাহপরাণ মাজার জিয়ারতের উদ্দেশ্যে সড়কপথে শাহপরাণ মাজারে যাবেন। পরে দুপুর ১২টায় সিলেটের প্রথম মুসলিম গাজী বুরহান উদ্দিন (রহ.) মাজার জিয়ারত করতে নগরীর কুশিঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। দুপুর পৌনে ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত সিলেট সার্কিট হাউসে জোহরের নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতির জন্য অবস্থান করবেন।
এরপর বেলা ২টা ৪০ মিনিটে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ২০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ১৮টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে সেখানে আওয়ামীলীগ আয়োজিত জনসভায় যোগদান করবেন তিনি। জনসভা শেষে বিকেল সোয়া ৫টায় বিমানযোগে ঢাকায় ফিরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ এস এম খুরশিদ উল আলম স্বাক্ষরিত এবং সিলেটের জেলা প্রশাসক প্রেরিত এক সফরসূচি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
একটি সূত্র জানায়- প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ৬০ জনের একটি টিম সিলেটে আসছেন। এর মধ্যে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা রয়েছেন।
সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি সিলেটে জনসভায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে, একই বছরের ২৩ নভেম্বর তিনি সিলেটে সেনাবাহিনীর ১৭-পদাতিক ডিভিশনের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। ওই দিন জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার কথা থাকলেও জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছিল। সেই হিসেবে প্রায় দুই বছর পর প্রধানমন্ত্রী সিলেটে জনসভায় যোগ দিতে আসছেন।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মো: আব্দুল ওয়াহাব জানান, সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে ৪ স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, পোশাকধারী পুলিশ, সাদা পোশাকধারী পুলিশ, র‌্যাব ও এপিবিএন। তিনি জানান, আলীয়া মাঠে নির্মিত ওয়াচ টাওয়ার থেকে সার্বক্ষণিক জনসভাস্থল মনিটরিং করা হবে। জনসভার আশ-পাশ এলাকাও সিসি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এর বাইরে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসএসএফ সদস্যরাও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় থাকবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে, নিরাপত্তাজনিত কারণে সিলেটে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের আশেপাশের সবদিক থেকে ব্যানার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড অপসারণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে এ সকল ব্যানার ফেস্টুন অপসারণের কাজ শুরু হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সিলেট সিটি করপোরেশন যৌথভাবে এ ব্যানার ফেস্টুন অপসারণ করে। একই সাথে মাঠে বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তার স্বার্থে এ সকল ব্যানার ফেস্টুন অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নজর কাড়তে তাকে স্বাগত জানিয়ে গত ক’দিন ধরে পুরো আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ ও আশ-পাশের বড় বড় ভবনে বিশাল আকৃতির বিলবোর্ড-ব্যানার সাটিয়েছেন নেতাকর্মীরা। তবে, সোমবার সকাল থেকে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা মাঠের পাশের গাছ এবং বাঁশ দিয়ে সাটানো সকল ব্যানার-বিলবোর্ড খুলে নেন। একই সাথে পশ্চিম প্রান্তের হোটেল হলিসাইডসহ বেশ কিছু ভবনে টানানো বড় আকৃতির বিলবোর্ডগুলোও খুলে নেওয়া হয়। বিকেলের দিকে শহীদ সামছুদ্দিন আহমদ সদর হাসপাতালের সামনের অংশের বড় বড় বিলবোর্ডও সরিয়ে ফেলা হয়।
এদিকে, মাঠের পূর্ব প্রান্তে প্রস্তুত করা হয়েছে নৌকা আকৃতির বিশাল মঞ্চ। এর পাশেই তৈরি করা হয়েছে ভিত্তিপ্রস্তুর ফলকও। তাছাড়া মাঠ জুড়ে সিসি ক্যামেরাও বসানো হয়েছে। এছাড়া জনসভাস্থল থেকে জিন্দাবাজার পয়েন্ট, রিকাবীবাজার পয়েন্ট, আম্বরখানা পয়েন্ট পর্যন্ত মাইক লাগানো হয়েছে। তাছাড়া নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রজেক্টরের মাধ্যমে বড় পর্দায় জনসভার কার্যক্রম দেখানোরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিব জানিয়েছেন, নিরাপত্তা সংস্থার নির্দেশে পুলিশের সহযোগিতায় সমাবেশস্থলের আশেপাশের ব্যানার ফেস্টুন অপসারণ করা হয়েছে।