শ্রীমঙ্গলে অনুমতি না নিয়ে চলছে মাসব্যাপী বিজয় মেলা!

41

শ্রীমঙ্গল থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শহরের ভিক্টোরিয়া স্কুল মাঠ সংলগ্ন রাসেল শিশু উদ্যান মাঠে মাসব্যাপী প্রশাসনের অনুমতি না পেলে এখনও চলছে বিজয় মেলা।
মাসব্যাপী বিজয় মেলা ২০১৭ আয়োজন বিজয় উৎসব পরিচালনা পরিষদ, শ্রীমঙ্গল আর সহযোগিতায় আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠী ব্যানারে ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া এ মেলা এখনও চলছে।
কোন প্রকার কারণ ছাড়াই জেলা প্রশাসন এই মেলার অনুমতি দেয়নি। বিজয়ের মাস ডিসেম্বর উপলক্ষে বিজয় উৎসবের পরিচালনা পরিষদ নামে এই বিজয় মেলার অনুমতি চাওয়া হয়। মেলার অনুমতি না পাওয়ায় তারপরও দলীয় ক্ষমতায় বিজয় মেলা পরিচালনা করা হয়। এ নিয়ে শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমাজ থেকে নানা শ্রেণী পেশার মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়।
একই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে বিজয় মেলার নামে এ মেলা বসানো হয়। এবার মেলায় হয়তো লটারী না থাকলেও বিগত বছরে এসব নানা কর্মকান্ডে একটি স্বার্থন্বেষী মহল লিপ্ত ছিল। হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। যার একটি অংশ ছিল নানাভাবে বিভন্ন নাম দিয়ে কতিপয় ব্যক্তিদের পকেট ভারী হয়েছে। কিন্তু বিজয় মেলায় এ ধরণের সুবিধা আদায় করতে পারে বলেই বিজয় মেলার অনুমতি প্রদান করেনি জেলা প্রশাসন।
বিজয় মেলার আয়োজনকারী মো. লিটন আহমদ জানান,‘বিজয় মেলা প্রতিবছর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি চেমন চাচা করেন। এবারও কলেজের স্বার্থে করছেন। গত কয়েক আগে বৃষ্টির কারণে মেলা বন্ধ ছিল। আর্থিক লছ হয়েছে। এখন বৃষ্টি গেছে আমরা তাদেরকে কয়েক দিন বাড়ানোর জন্য বলছিলাম। তারা আগামী ২৬ জানুয়ারী শুক্রবার পর্যন্ত মেলার চালানোর অনুমতি দিয়েছে। কারা অনুমতি দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জহুর তরফদার (মাষ্টার) ও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায়। তবে জেলা প্রশাসনের কোন অনুমতি আছে জানতে চাইলে লিটন বলেন, দরখাস্ত দেয়া হয়েছে তবে কোন অনুমতি নেই।
বিজয় মেলা পরিচালনা পরিষদের প্রধান শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলাগের সহ-সভাপতি মো. জিল্লুল আনাম চেমনের কাছে মেলার কোন অনুমতি আছে কিনা মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোনলাইন কেটে দেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি কে এম নজরুল ইসলাম জানান, আমি কাগজপত্র দেখলাম যে একমাসের বিজয় অনুমিত আছে।
শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের ব্যবসায়ী সমাজের সীমিত ক্ষমতা। সার্বিকভাবে ব্যবসায়ী সমাজে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে (ব্যবসায়ী সমিতিকে) ইউএনও সাহেব জানিয়েছেন আমরা জানিয়া রাখলাম কিন্তু কাজে কাজ কোনো কিছু করতে পারলাম।
বিজয় মেলা কমিটির সদস্য ও শ্রীমঙ্গল পৌর যুবলীগের সহ-সম্পাদক জহির উদ্দিন শামীম বলেন, আমি আর এ মেলার পক্ষে নয়। আমি চাই বিজয় মেলা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবাশশেরুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, বিজয় মেলার কোন অনুমতি নেই। মেলার অনুমতির বিষয়ে প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের দফতরে পাঠানো হয়েছে। তাই অনুমতি দেয়া না দেয়ার ব্যাপারে আমার হাত নেই। এটি সম্পূর্ণ জেলা প্রশাসনের ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, এখন কিভাবে বিজয় মেলা হচ্ছে সেটি আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।’