কাজিরবাজার ডেস্ক :
ওসমানীনগরবাসীর গ্যাসসুবিধা পাওয়ার দাবি পাইপ লাইনেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ঘরে ঘরে গ্যাস সুবিধা পৌঁছে দিতে তিন বছর আগে ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন ও সাবস্টেশন নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কিন্তু দেশে নতুন করে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর বিতরণ নেটওয়ার্ক স্থাপনসহ প্রকল্পের অন্য কাজ আটকে যায়। যার কারণে এলাকাবাসী গ্যাস সুবিধাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিতই থেকে যান। ওসমানীনগরে স্থাপিত পাইপ লাইনে কবে গ্যাস সরবরাহ হবে তা এখন অনিশ্চিত।
জানা গেছে- স্বাধীনতার পর থেকে ওসমানীনগরবাসী গ্যাস সুবিধা পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এ দাবি বাস্তবায়নে বিভিন্ন সময়ে সরকারের এমপি ও মন্ত্রীরা প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং সিলেট-২ আসনের সাবেক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ওসমানীনগর, বালাগঞ্জ ও বিশ্বনাথ উপজেলাবাসীর ঘরে ঘরে গ্যাস সুবিধা পৌঁছে দিতে ২০১১ সালে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয় সরকার।
২০১১ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদিত ‘সিলেট গ্যাস ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন’ প্রকল্পের আওতায় ৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ওসমানীনগর-বালাগঞ্জ-বিশ্বনাথ ও মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলাকে গ্যাস সংযোগের আওতায় আনা এবং জালালাবাদ গ্যাস কোম্পানির নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার কার্যাদেশ ছিল।
২০১৩ সালে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পের আওতায় ২০১৪ সালে জালালাবাদ গ্যাস’র সিলেটের ফিরোজপুরস্থ পয়েন্ট থেকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের পাশ দিয়ে ওসমানীনগর উপজেলার ইলাশপুর পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করা হয়। একই সাথে বিশ্বনাথ ও বালাগঞ্জে গ্যাস সুবিধা দিতে ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপিত হয়।
মহাসড়কের পাশে রশিদপুর ও তাজপুর এলাকায় দুটি সাব স্টেশনও স্থাপন করা হয়। কথা ছিল বিতরণ নেটওয়ার্ক প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০১৪ সালে ঘরে ঘরে গ্যাস সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে। এরলক্ষে বিতরণ নেটওয়ার্ক স্থাপনের টেন্ডারও করা হয়। কিন্তু দেশে নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদান বন্ধ করে দেওয়ায় আটকে যায় উক্ত প্রকল্পের অন্য কাজ। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়নের লক্ষে বিশেষ বিবেচনায় ওসমানীনগরবাসীকে গ্যাস সুবিধা প্রদানের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সিলেট গণদাবি আদায় পরিষদের সদস্য সৈয়ীদ আহমদ বহলুল বলেন- যানবাহনে গ্যাস ব্যবহার সুবিধা দিলেও সাধারণ মানুষ এর সুফল কখনো ভোগ করতে পারেনি। দেশের গ্যাসের মজুদ কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, সার্বিক ব্যবস্থাপনা ঠিক করে ওসমানীনগর ও পার্শ্ববর্তী দুই উপজেলায় গ্যাস সুবিধা প্রদানের দাবি জানান তিনি।
ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে গ্যাস সুবিধা দিতে প্রকল্প গ্রহণ করে ট্রান্সমিশন লাইন স্থাপন করা হয়। কিন্তু গ্যাসের মজুদ কমে যাওয়ায় নতুন গ্যাস সংযোগ প্রদান বন্ধ করে দেওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নের অন্য কাজ আটকে যায়। গ্যাস সংযোগ না পাওয়ায় এলাকার মানুষের মনে অসন্তোষ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন- সম্ভব হলে বিশেষ বিচেনায় গ্যাস সুবিধা প্রদানের দাবি জানান তিনি।