দোয়ারাবাজার থেকে সংবাদদাতা :
দোয়ারাবাজারে নদী ভাঙনের কবলে বিলীন হওয়ার পথে এখন উপজেলা সদর। গুরুত্বপুর্ণ সড়ক, বাড়ীঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ খোদ সরকারী স্থাপনা গুলো রয়েছে হুমকির মুখে। নদী ভাঙন যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। নদী ভাঙ্গনে উপজেলা সদরের মুরাদপুর, মাছিমপুর, মংলারগাঁও, মাঝেরগাঁও বিভিন্ন গ্রামের ভিটেমাটি হীন হয়ে বর্তমানে মাথা গোঁর ঠাঁই করেছেন দোয়ারাবাজার-ব্রিটিশ ট্রাম্প রোডে। ইতোমধ্যে নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে উপজেলা বাসী মানববন্ধন কর্মসুচিসহ বিক্ষোভ সভা-সমাবেশ করেও টনক নড়ছেনা স্থানীয় প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। দীর্ঘ দিন ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙ্গনে প্রতিরোধে প্রকল্প হাতে নিয়েছে এমন মুখ রোচক প্রতিশ্র“তির কথা শোনা গেলেও বাস্তবতায় কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বর্তমানে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়সহ সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে।
অন্যদিকে উপজেলার সুরমা নদীর ওপারে তিনটি ইউনিয়নের চলাচলেন একমাত্র মাধ্যম খেয়া নৌকা। আর সেই খেয়াঘাটটি সুরমা নদীর ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে গত এক সপ্তাহের ব্যাবধানে। বর্তমানে খেয়া ঘাটের এমন পরিস্থিতি ধারণ করেছে যা এক সপ্তাহে প্রায় অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীপনায় ইতোমধ্যে কয়েক দফা খেয়া ঘাট পরিবর্তন করে পথে বসার উপক্রম হয়েছে ইজারাদারকে। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হতে হচ্ছে দুই পাড়ের জনসাধারণকে। পথচারীরা জানান, জান মালের কোন রকম নিরাপত্তা নেই খেয়াঘাটে। ইজারাদার নিজ অর্থায়নে প্রতিনিয়ত ঘাটে কাজ করলেও নদীর ভাঙ্গনের ফলে কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছেনা ঘাটের অস্তিত্ব। গত বছর উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে ৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে পাকা সিড়িটা নির্মান করা হয়েছিল। সিঁড়িটি বর্তমানে অল্পদিনের ব্যাবধানে সুরমার ভাঙ্গনে নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। সম্প্রতি নদী ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করলে উপজেলা সদরের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জোরে ভাঙ্গন থাকায় আশপাশের কোন দিকে নৌকাঘাট করার মত পরিস্থিতি নেই।
খেয়া ঘাটের ইজারাদার হাবিবুর রহমান জানান, গত এক সপ্তাহে প্রায় লক্ষাধিক টাকার কাজ কাম করা হয়েছে, কিন্তু কাজ করে যেন কোন ধরনের উপকারে আসছেনা। প্রতিদিন সুরমা নদীর ভাঙ্গনে ঘাটের কোন অস্তিত্ব নেই। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেও কোনো প্রতিকার নেই।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মহুয়া মমতাজ বলেন, নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। অন্য দিকে খেয়াঘাটের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে ইজারাদার আমাকে জানিয়েছেন। আমি নিজেই সরেজমিন দেখছি। এ ব্যাপারে জেলায় আলোচনা করে দ্রুত একটা ব্যবস্থা করা হবে।