জাহাঙ্গীর আলম খায়ের বিশ্বনাথ থেকে :
বৃক্ষ নিধনের কারণে যেমন উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল তেমনি পেরেক ও লোহা ঢুকিয়ে গাছে গাছে টানানো সাইনবোর্ড, ফেস্টুন দিয়ে সস্থা প্রচারণার কারণে নষ্ট হচ্ছে গাছের জীবণ। চলাফেরা করতে না পারায় কী গাছের জীবন নেই? কিন্তু বিজ্ঞান বলছে গাছেরও জীবন আছে। গাছ শব্দ করতে পারেনা, কিন্তু কাঁদতে পারে।
বিশ্বনাথ উপজেলার সড়ক-মহাসড়ক, হাট-বাজার ও শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ছোটবড় প্রতিটি গাছে নির্মমভাবে লোহা এবং বড় পেরেক ঢুকিয়ে গাছে টানানো হয় নানা রঙ বেরঙের ব্যানার ও ফেস্টুন। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক নেতা, নিষিদ্ধ কোচিং সেন্টার, বেসরকারি স্কুল-কলেজ, ‘কাজী অফিস’, ‘টিউটর দিচ্ছি/নিচ্ছি’, ‘বাসা/অফিস ভাড়া’, ড্রাইভিং শিখুন’ ইত্যাদি জাতীয় ফেস্টুন-সাইনবোর্ড দিয়ে নিজেদের বিজ্ঞাপন প্রচারে ব্যবহার হচ্ছে গাছ। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জীব মানুষও গাছের কান্না শুনছেন না। অথচ, গাছ ছাড়া পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হয় না, বাঁচে না জীবও। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ লাইনের অজুহাতে গাছের মূল অংশ কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে সড়কের পাশে থাকা গাছগুলো।
উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, একটি গাছও সুস্থ অবস্থায় নেই। ডালপালা বিহীন গাছের মাথা নেই, নেই শিকড়ে মাটিও। ছয় মাস আগে ঝড় তুফানে বিভিন্ন সড়কে পড়ে থাকা গাছগুলো হয় চুরেরা নিচ্ছে আর না হয় মাটিতে ফেলা অবস্থায়ই রয়েছে। পুরো উপজেলা জুড়ে এমনই অবস্থা চলছে, যেন সরকার কা মাল দরিয়া মে ঢাল। এহেন কর্মকান্ড বন-বিভাগসহ জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন। ফলে বিশ্বনাথে সরকারি-বেসরকারিভাবে লাগানো গাছগুলোর জীবন রক্ষা করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সস্থা প্রচারণা বন্ধের দাবি জানিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ছয়ফুল হক এ প্রতিবদেককে বলেন, গাছে গাছে পেরেক মেরে বেআইনীভাবে সাইনবোর্ড টানিয়ে জীবন্ত গাছগুলোকে ধ্বংস করা হচ্ছে।
বন-কর্মকর্তা জয়নুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, আইন থাকলেও প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। গাছগুলোকে রক্ষা করতে হলে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার এ প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি তার নজরে আছে, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।