মিয়ানমারের সাময়িক জান্তা প্রধান ॥ রোহিঙ্গা জাতিসত্তার অস্তিত্ব অস্বীকার, এরা বাঙালি

42

কাজিরবাজার ডেস্ক :
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা বলে কোনও জাতিসত্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করে তাদেরকে বাঙালি হিসেবে দাবি করেছেন 46475দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং। এজন্যে তিনি রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে এক হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের সেনাপ্রধান বলেন, ‘তারা রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতি দাবি করছে অথচ তারা কখনো মিয়ানমারের নৃগোষ্ঠী ছিল না। এটি ‘‘বাঙালি’’ ইস্যু। আর এই সত্য প্রতিষ্ঠায় আমাদের একতাবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের সরকারি পেজে শনিবার দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে রবিবার বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধান দেশটির উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত সংখ্যালঘু ইস্যুতে দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
সেনা প্রধান বলেন, গত ২৫ আগস্টের পর থেকে রাখাইনে সহিংসতার ৯৩টি ঘটনা ঘটিয়েছে ‘চরমপন্থি বাঙালিরা’। বুথিডং ও মংডুতে একটি ঘাঁটি গড়ার চেষ্টায় ‘চরমপন্থি বাঙালিরা’ এই সহিংসতা ঘটায়।
“তারা রোহিঙ্গা হিসেবে স্বীকৃতির দাবি করছে, যদিও ওইরকম কোনও জাতিসত্তা মিয়ানমারে কখনোই ছিল না। বাঙালিদের ইস্যুটি একটি জাতীয় বিষয় এবং সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”
জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেন, “মিয়ানমারের সকল নাগরিককে তাদের দেশাত্মবোধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আর এক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলোরও ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে তাদের বাহিনীর উন্নয়নে সচেষ্ট হতে হবে। একইভাবে দেশের প্রতিটি নাগরিককে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে হাতে হাত বেঁধে এগিয়ে আসতে হবে।
“স্থানীয় নৃগোষ্ঠীগুলোকে তাদের নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে সচেষ্ট হতে হবে। রাখাইন রাজ্যের পুনর্বাসন কার্যক্রমে প্রতিটি নৃগোষ্ঠীর মানুষকেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আর এ কাজে নিরাপত্তা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সহযোগিতা করতে হবে সশস্ত্র বাহিনীকে।”
উল্লেখ্য, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা ইস্যু বহুদিন ধরেই মিয়ানমারের অন্যতম আলোচিত সংকট। তবে এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা বলতে নারাজ মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ২৫ আগস্ট রাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি পুলিশ ফাঁড়ি ও তল্লাশি চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলা এই সংকটকে নতুন করে উসকে দেয়। এর জেরে সেখানে নতুন করে সেনা অভিযান শুরু হয়, চলে দমন-পীড়ন। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ আসছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, গত কয়েক সপ্তাহে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ডিসেম্বর নাগাদ শরণার্থীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়াতে পারে আশঙ্কা জাতিসংঘের।