স্টাফ রিপোর্টার :
সুনামগঞ্জের ছাতকে হতদরিদ্র তরুণী সুজিনা বেগম (১৬) ধর্ষণ মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ৩ আসামী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারছে না। আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় এখন ধর্ষিতার পরিবার ও স্বজনদের তারা হত্যার হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। এসব হুমকীর ভয়ে সুজিনা বেগমের পরিবার এখন গ্রাম ছাড়া।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ছাতক উপজেলার ছৈলা আফজলাবাদ এলাকার খলাগাঁও গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার ছেলে ফয়জুল হক (৩০)’র দেওয়া বাড়ি পাশের একটি ঘরে হতদরিদ্র সুজিনার পরিববার বসবাস করে তাদের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছিল সুজিনা। তাদের বাড়ি কিছুটা দুরে থাকায় সুজিনা কাজকর্ম শেষে রাতে ফয়জুল হকদের বসত বাড়ীর একটি কক্ষে সে ঘুমাতো। এ সুযোগে ২০১৬ সালের ৪ নভেম্বর রাত ১১ টার দিকে ফয়জুল সুজিনার ঘরে ঢুকে চাকুর ভয় দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য তাকে হত্যার ভয় দেখায়। এর পর হতে ফয়জুল বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে প্রতি রাতেই সুজিনাকে ধর্ষণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে সুজিনা ৪ মাসের গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় সুজিনার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে ফয়জুল তার বন্ধু একই এলাকার আব্দুর রউফের ছেলে ছমির (২৮) ও বশর মিয়ার ছেলে কবির (২৬) মিলে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য উঠেপড়ে লেগে থাকে। এতে সুজিনা রাজি না হলে চলতি বছরের ৪ জুলাই সকাল ৭ টার দিকে ফয়জুল হকসহ তার বন্ধুরা মিলে সুজিনার গর্ভ নষ্ট করার জন্য জোরপূর্বক তাকে ট্যাবলেট খাইয়ে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে ওইদিনও তারা তিন বন্ধু তাকে ধর্ষণ করলে তার গোপনাঙ্গে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। অবস্থা বেগতি দেখে এক পর্যায়ে ধর্ষণকারীরা সুজিনা বেগমকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করে পালিয়ে যায়। সেখানে তিনদিন চিকিৎসা নিয়ে তার পরিবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। সুজিনা দিরাই উপজেলার পুরাতন কর্নগাঁও গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মেয়ে। এ ঘটনায় সুজিনা বেগম বাদি হয়ে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৯৪ (২৪-০৪-১৭) নং উল্লেখিত ৩ ধর্ষণকারীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার প্রেক্ষিতে মামলার ঘটনার সত্যতা পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ চলতি বছরের ১৪ মে আদালতে ফয়জুল হক, ছমির ও কবির এর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। আদালত এ প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ৩ আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করেন। কিন্তু পুলিশ রহস্য জনকভাবে আসামীদের গ্রেফতার করছে না। এতে আসামীরা সুজিনার মামা জবান আলী ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকী দিয়ে আসছে। এ হুমকীর ভয়ে সুজিনা বেগমের পরিবার গ্রাম ছেড়ে এখন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ এলাকায় তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে আসেন।