জনতা ও সাফা এন্টারপ্রাইজ সিলেটে ব্যাটারী চালিত অবৈধ রিক্সার অন্যতম কারখানা ॥ সরকার হারাচ্ছে লাখ টাকার রাজস্ব, চোরাই পথে ব্যবহৃত হচ্ছে হাজার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ

1006

Autoস্টাফ রিপোর্টার :
নগরী ও শহরতলীতে বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৫ শতাধিক ব্যাটারী চালিত অবৈধ রিক্সা-অটোরিক্সার বিক্রির কারখানা গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে নগরীর ভিআইপি রোডের শেখঘাট এলাকার মিলি ম্যানশনস্থ ব্যাটারী চালিত অবৈধ রিক্সা-অটোরিক্সার অন্যতম কারখানা জনতা এন্টারপ্রাইজ ও তার পাশে মালিক কমপ্লেক্সেস্থ সাফা এন্টারপ্রাইজ রয়েছে। পাশাপাশি এ রোডে একই ভাবে আরো ৪টি কারখানাও রয়েছে। সেখানও একই অবস্থা। এসব ব্যাটারী চালিত রিক্সা তৈরী করে রাতের অন্ধকারে ট্রাকে করে এক স্থান হতে অন্য স্থানে পাইকাররা ও খুচরা বিক্রেতারা নিয়ে যাচ্ছে।
এতে করে এসব ব্যাটারী চালিত অবৈধ রিক্সা-অটোরিক্সার বিক্রির কারনে চোরাই পথে সরকারের বিদ্যুৎ গচ্ছা যাচ্ছে। বেড়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। সরকার হারাচ্ছে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব আয়। পেয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা সম্প্রতি সিলেটের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ব্যাটারী চালিত রিক্সা চার্জার আটক করছেন। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ব্যাটারী চালিত রিক্সা-অটোরিক্সা চার্জার গ্যারেজ গড়ে ওঠেছে প্রায় কয়েক হাজার। এই রিক্সা চার্জ খাতে প্রতিদিন ২৪ হাজার ইউনিট বিদ্যুতের অপচয় হচ্ছে। সরকার হারাচ্ছে প্রতিমাসে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার রাজস্ব আয়। ফলে নগরীতে একদিকে যানজট ও অন্যদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং বেড়ে গেছে।
জনতা এন্টারপ্রাইজ ও সাফা এন্টারপ্রাইজে ক্রেতা সেজে সরেজমিনে এসব কারখানায় ঘুরে দেখা যায়। প্রায় ৪০/৫০টি ব্যাটারী চালিত রিক্সা ও অটোরিক্সা বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। সেখানে শ্রমিকরা ব্যাটারী লাগিয়ে রিক্সা তৈরীর কাজে ব্যস্থ রয়েছে। জনতা এন্টারপ্রাইজ এর প্রোপ্রাইটর ইফতেখার আহমেদ সুমনের কাছে এসব রিক্সার দাম জানতে চাইলে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকা দাম জানান। কারখানায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও রয়েছে। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার কথা জিজ্ঞাস করলে সুমন বলেন, কারখানা থেকে কেউ যাতে কিছু চুরি করে নিতে না পারে তার জন্য এসব বসানো হয়েছে। পাশের সাফা এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মোঃ সামসুল আলম একই কথা বললেন।
জানা যায়, উল্লেখিত প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রয়কৃত ব্যাটারী চালিত রিক্সা অটোরিক্সা রাস্তায় চালানোর জন্য মালিকরা পরে প্লেইট তৈরী করার জন্য নগরীর কুমারপাড়াস্থ অবৈধ ‘সিলেট ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা মালিক সমিতি’ কাছ থেকে প্রতি ৬ মাসের জন্য ৩ থেকে ৪ হাজার আদায় করে সদস্য করা হয়। তখন নম্বর দিয়ে সমিতির মাধ্যমে একটি প্লেইট দেয়া হয় এবং ঐ প্লেইটের গায়ে লেখা থাকে উচ্চতর আদালতসহ সমিতির মোবাইল নম্বর। পরে ব্যাটারী চালিত রিক্সা নগরীতে চালাতে দেয়া হয়। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ বৈধ ব্যাটারী চালিত রিক্সা চালতে হয়রানির করছে এবং অবৈধ ব্যাটারী চালিত রিক্সা হয়রানী করা বা রিক্সাটি আটক করা হয় না। বাংলাদেশের বিভাগীয় শহরগুলো থেকে সরকার এ ধরনের ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা তুলে নিলেও সিলেটে ব্যাটারী চালিত রিক্সা তুলে নেয়নি। বরং দিন দিন আরো ব্যাটারী চালিত রিক্সার তৈরীর কারখানা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইদানিং এসব অবৈধ রিক্সার বিরুদ্ধে অভিযানের নামে বৈধ কিছু রিক্সা আটক করে হচ্ছে এমন অভিযোগ উঠছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) ডিভিশন ৩ এর নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল লাল মোহন্ত বলেন, সম্প্রতি আমরা অভিযান করেছি। দক্ষিণ সুরমা এলাকার ১৫ টি অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।’ এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।