কেউ জানে না শেষ কোথায়

26

2_126520কাজিরবাজার ডেস্ক :
দীর্ঘ হচ্ছে হতাহতের তালিকা। থামছেই না নাশকতা-সহিংসতা। ককটেল-পেট্রোলবোমায় প্রাণ হারাচ্ছে ‘হতভাগ্য’ মানুষ। কেউ জানে না এর শেষ কোথায়। ৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচির দুই মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ। গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই অবরোধ-হরতাল কর্মসূচিতে প্রাণ গেছে ১১৬ জনের। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী-শিশু। দগ্ধ-আহতের সংখ্যা সহস্রাধিক।
গতকাল বৃহস্পতিবারও কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে পেট্রলবোমায় ১৬ জন দগ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে একজন মারা গেছেন। ’৯০-এর গণআন্দোলনের পর এ ধরনের টানা কর্মসূচি আর পালন করেনি কোনো রাজনৈতিক দল।
আজ ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ কর্মসূচির ৬০তম দিন। তবে মাস গণনায় তা দুই মাসে ঠেকেছে। এই রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে জনজীবন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে শিল্প মালিকরাও দিশেহারা। গার্মেন্ট এবং পরিবহন খাতও চরম হুমকির মুখে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ অবস্থায় রাজনৈতিক পরিস্থিতির দ্রুত উত্তরণ না ঘটলে ভয়ানক মাশুল গুনতে হবে সবাইকে। রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তারা।
৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ৬ জানুয়ারি থেকে চলছে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি। তবে এর দুই দিন আগেই শুরু হয় সহিংসতা-নাশকতা।
পুলিশ সদর দফতরসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দুই মাসে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সহিংসতায় নিহত হয়েছেন মোট ১১৬ জন। এর মধ্যে পেট্রোলবোমা ও আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৬১ জন। ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ও ‘গণপিটুনিতে’ প্রাণ গেছে ৩৬ জনের। সংঘর্ষ ও গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন ১৮ জন। যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতিও ব্যাপক। ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয় প্রায় ১৩৫০ যানবাহন। এদিকে পেট্রোলবোমা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গুরুতর দগ্ধদের অধিকাংশেরই চিকিৎসা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে। বুধবার রাতেও নতুন করে পাঁচ দগ্ধ রোগী ভর্তি হয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শঙ্কর পাল বলেন, ৬ জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ বার্ন ইউনিটে মোট ১৬২ দগ্ধ রোগী ভর্তি হন। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৪ জন। চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৯৭ জন এবং বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন ৫১ জন।
পার্থ শঙ্কর বলেন, ঢামেক হাসপাতালের বাইরেও ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে স্বল্প পরিসরে বার্ন ইউনিট চালু করা হয়েছে। সেখানেও রোগী আছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালেও এখন প্রাথমিক অবস্থার দগ্ধ রোগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।