সিলেট প্রেসক্লাবের আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিতে হবে

44

press club pic (2)সিলেটের জেলা প্রশাসক মো: শহিদুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, রক্ত ঝরিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে একটি স্বাধীন ভূখন্ড প্রতিষ্ঠা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। তাই সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে হবে। তবেই একটি সুন্দর স্বনির্ভর, সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়া সম্ভব।
গতকাল সোমবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সিলেট প্রেসক্লাব আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ক্লাবের আমিনুর রশীদ চৌধুরী মিলনায়তনে সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলামের পরিচালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- মহান মুক্তিযুদ্ধে মেহেরপুরের মুজিবনগরে সম্মুখ সমরে অংশ নেয়া লড়াকু সৈনিক আব্দুল মালিক বীর প্রতীক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো: শহিদুল ইসলাম আরো বলেন, মেধা মননে বাঙালি জাতিকে পিছিয়ে রাখতে হানাদার বাহিনী নারকীয়ভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। তবুও তারা বীর জাতির বিজয় ঠেকাতে পারেনি। তিনি তথ্য জানিয়ে বলেন, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সরকার ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা আগামী জুলাই মাসে ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। তাদের সন্তানদের চাকুরীর ক্ষেত্রে সর্বত্র ৩০ ভাগ কোটা চালু আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে ৫ ভাগ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বরাদ্দ আছে। জেলা প্রশাসক জানান, সিলেটে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সিলেটের সরকারি কর্মকর্তাদের একদিনের বেতন দিয়ে ১৩ লাখ টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়েছে। এ তহবিল আরো সম্প্রসারণের প্রচেষ্টা চলছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন না হলে আমরা এর ভোক্তা হতে পারতাম না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আব্দুল মালিক বীর প্রতীক বলেন, কোন রাজনৈতিক সমঝোতা কিংবা কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি। রক্ত দিয়ে প্রাণের বিনিময়ে এদেশে স্বাধীন হয়েছে। এ নিয়ে বাঙালি জাতি গর্ববোধ করতেই পারে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বলেন, রনাঙ্গণে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল এম এ জি ওসমানী সবাইকে সাহস দিতেন, প্রেরণা যোগাতেন। তিনি ১১টি সেক্টরে গিয়েই আমাদেরকে সাহস যুগিয়েছেন। আবেগাপ্লুত কণ্ঠে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালিক বলেন, লাখো প্রাণের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। এখন স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল পেতে নতুন প্রজন্মকে দায়িত্বশীল হতে হবে। নিতে হবে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার দৃপ্ত শপথ।
আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের ট্রেজারার কবির আহমদ সোহেল। সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি ও দৈনিক ইত্তেফাকের স্টাফ রিপোর্টার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, সাবেক সহ সভাপতি ও সময় টিভির ব্যুরো প্রধান ইকরামুল কবির, সাবেক সহ সভাপতি ও দৈনিক জালালাবাদ এর নির্বাহী সম্পাদক আবদুল কাদের তাপাদার, সাবেক সহ সভাপতি আতাউর রহমান আতা, দৈনিক কাজিরবাজারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ সুজাত আলী, সাবেক ট্রেজারার খালেদ আহমদ, সিলেট প্রেসক্লাবের পাঠাগার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল মুকিত অপি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহবাব মোস্তফা খান, কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ মুহিবুর রহমান, ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ আশরাফুল আলম নাসির এবং দৈনিক দুনিয়া আখেরাতের চীফ রিপোর্টার আমিরুল ইসলাম চৌধুরী এহিয়া।
উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমরেন্দ্র বিশ্বাস সমর, প্রবীন সাংবাদিক আফম সাঈদ, সিনিয়র সাংবাদিক চৌধুরী দেলওয়ার হোসেন জিলন, দৈনিক নয়া দিগন্তের স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আফতাব উদ্দিন, দৈনিক সিলেটের ডাকের চীফ ফটো সাংবাদিক আব্দুল বাতিন ফয়সল, সিলেটের ডাক-এর স্টাফ রিপোর্টার আনাস হাবিব কলিন্স, দৈনিক সংগ্রামের ব্যুরো চীফ মোঃ কবির আহমদ, দৈনিক সিলেট বাণীর নির্বাহী সম্পাদক এম এ হান্নান, দৈনিক জালালাবাদ এর স্টাফ রিপোর্টার কামরুল ইসলাম ও আবু বকর সিদ্দিক, দৈনিক সিলেটের ডাক এর ফটো সাংবাদিক জাবেদ আহমদ, কবি মুহিত চৌধুরী, সাংবাদিক আব্দুল মুমিন ইমরান, নওশাদ আহমদ চৌধুরী প্রমুখ। শুরুতেই কোরআন তেলওয়াত করেন ক্লাবের সদস্য এম সিরাজুল ইসলাম। বিজ্ঞপ্তি