পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম ‘শীতলতম’ বছরও ২০২৪

4

কাজির বাজার ডেস্ক

পৃথিবীর ইতিহাসে অতীতের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে আরও একটি বছর। ২০২৪ সাল প্রায় শেষের দিকে। আর এ সময়ে এসে বিজ্ঞানীরা আবারও একটি ভয়াবহ জলবায়ু সতর্কবার্তা নিয়ে হাজির হয়েছেন। ২০২৪ সাল প্রায় নিশ্চিতভাবে রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণ বছর হতে চলেছে। বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, ২০২৪ সাল হবে সেই বছর যখন পৃথিবী প্রথমবারের মতো প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে নির্ধারিত ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সীমা অতিক্রম করবে।
তবে বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে আপনি হয়তো ২০২৪ সালকে বিশেষভাবে উষ্ণ বছর হিসেবে মনে রাখবেন না। কারণ, এটিই সম্ভবত হবে আপনার জীবনের বাকি সময়ের তুলনায় সবচেয়ে শীতল বছরগুলোর একটি। অর্থাৎ, আগামী দিনে পৃথিবীর তাপমাত্রা এমন একপর্যায়ে পৌঁছে যাবে, যার তুলনায় ২০২৪ সালকে মনে হবে শীতলতম বছর।
মানবজাতি জীবাশ্ম জ্বালানি পুড়িয়ে পৃথিবীকে ক্রমেই উষ্ণ করে তুলছে। আর এরই ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতের আপনি বর্তমান সময়কে তুলনামূলকভাবে শান্ত আবহাওয়া, তুষারপূর্ণ শীত এবং কোমল তাপমাত্রার সময় হিসেবে স্মরণ করবেন। আজ জন্ম নেওয়া শিশুদের কাছে ভবিষ্যতের উষ্ণতর, ঝোড়ো জলবায়ুর অবস্থা স্বাভাবিক বলে মনে হবে।
এমনটা ঘটবে মূলত একটি মনস্তাত্তি¡ক কৌশলের কারণে। যাকে বিজ্ঞানীরা ‘শিফটিং বেসলাইন সিনড্রোম’ বলে ডাকেন। এটি মানুষকে বর্তমানে তারা যে পরিবেশগত পরিস্থিতি অনুভব করছে তার সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠতে বাধ্য করে। এই বিষয়টি মানব সমাজের বিদ্যমান পরিবেশগত মানগুলো ধীরে ধীরে কমতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শিফটিং বেসলাইন সিনড্রোম ক্রমবর্ধমান উষ্ণ তাপমাত্রা এবং অন্যান্য পরিবেশগত প্রভাবগুলোকে মানুষের কাছে স্বাভাবিক মনে করাতে পারে।
কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এটি একটি গুরুতর সমস্যা। টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায়োগিক পরিবেশবিদ মাসাশি সোগা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যার সমাধান করতে হলে ব্যক্তিগত এবং সম্মিলিত আচরণে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। শিফটিং বেসলাইন সিনড্রোম একটি শক্তিশালী বাধা হিসেবে কাজ করতে পারে। কারণ, এটি সমস্যার প্রতি সামাজিক স্বীকৃতি কমিয়ে দেয়।’
এক বছর আগে, ২০২৩ সালে জলবায়ু বিজ্ঞানীরা এক নতুন তাপমাত্রা রেকর্ড নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। ২০২৩ ছিল কেবল গত ১৭৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ বছরই নয়, বরং এটি ছিল ২০১৬ সালের তুলনায় প্রায় দশমিক ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ। আমাদের গ্রহের প্রেক্ষাপটে, এটি একটি বড় বৃদ্ধি হিসেবে বিবেচিত। ২০২৪ সাল আরও উষ্ণ হওয়া প্রায় নিশ্চিত।
নাসার গডার্ড ইনস্টিটিউট ফর স্পেস স্টাডিজের পরিচালক গ্যাভিন স্মিড বলেন, ‘শেষ দুই বছর ছিল কিছুটা সুপারচার্জড বা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির বছর।’ গডার্ড ইনস্টিটিউট ফর স্পেস স্টাডিজ হাজারো আবহাওয়া স্টেশন, সামুদ্রিক বয়া এবং জাহাজ ব্যবহার করে বিশ্বের তাপমাত্রার রেকর্ড হিসাব করে। স্মিড বলেন, ‘১৯৭০-এর দশক থেকে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে এবং গত দশক থেকে দ্রæতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু ২০২৩ এবং ‘২৪ সত্যিই আলাদা।