সামান্য ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক

24

দুর্ভোগে ৩ উপজেলার ৪ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী

বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর থেকে
সামান্য পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে যায় সড়ক। সড়ক পথে যোগাযোগ ব্যাবস্থা বন্ধ থাকে মাসের পর মাস। ভোগান্তিতে পড়েন সড়ক পথে যাতায়াতকারী তিন উপজেলার প্রায় ৪ লক্ষাধিক মানুষ।
জেলার ভাঠির উপজেলা বিশ^ম্ভরপুর, তাহিরপুর, মধ্যনগর। এ তিন উপজেলার সর্ব সাধারণের যোগাযোগের একমাত্র পথ তাহিরপুর, বিশ^ম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ সড়ক। তাহিরপুর থেকে সুনামগঞ্জ সড়কটির দৈর্ঘ্য ৩৩ কিলোমিটার। সড়কের তাহিরপুর অংশে আনোয়রপুর বাজার হতে বালিজুরী গ্রাম পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার, বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা বাগগাঁও হতে বিশ^ম্ভরপুর থানার সামনে পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করে এলজিইডি সুনামগঞ্জ। অবশিষ্ট ২৩ কিলোমিটার সড়ক পথ সড়ক ও জনপথ বিভাগের। মোট ৩৩ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে এলজিইডি দু’উপজেলার ১০ কিলোমিটার সড়কে তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ার ব্রীজের পূর্ব পাশের এপ্রোচ ১’শ মিটার, বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ার খলা বাজারের পূর্ব পাশে ১’শ ৫০ মিটার ও দুর্গাপুর মোকাম বাড়ি এলাকায় ১’শ মিটার সড়ক নীচু রাখা হয় পাহাড়ি ঢলের পানি নিষ্কাশনের জন্য।
কিন্তু সরজমিন দেখা যাচ্ছে পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে যাওয়ার পরও তিনটি স্থানের মধ্যে মোকাম বাড়ি, শক্তিয়ার খলার পূর্ব পাশের সড়ক দু’টি পানিতে নিমজ্জিত থাকে মাসাধিক সময় কিংবা কখনো পনের দিন পর্যন্ত।
স্থানীয় লোকজন ও এসড়ক পথে যাতায়াত কারী লোকজন জানান, হাওরের পানির লেভেল সড়ক থেকে অনেকটা উপরে থাকার কারণে ঢলের পানি নেমে যাওয়ার পরও সড়কটি পানিতে তলিয়ে থাকে। ফলে এ পথে যাতাাতকারী লোকজন ভেঙ্গে ভেঙ্গে নৌকা করে সুনামগঞ্জ সদর যাতায়াত করেন। আর ভেঙ্গে ভেঙ্গে যাতায়াত করতে গিয়ে এক দিকে যেমন সময় বেশী যাচ্ছে অন্য দিকে অটোরিক্সা, মোটর বাইক, লেগুনা ও সিএনজি চালকরা ইচ্ছে মত ভাড়া আদায় করছেন যাত্রীদের কাছ থেকে। আর এতে করেই রোজ রোজ ভোগান্তি ও নানা দুর্ভোগে পড়ছেন সড়ক পথে যাতায়াতকারী ৩ উপজেলার ৪ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠি
সড়ক পথে যাতায়াতকারী সাধারণ লোকজন বলছেন, সড়কটির নীচু স্থান গুলোতে দু’একটি ব্রিজ-কালভার্ট দিয়ে পানি নেমে যাওয়ার পথ করে সড়কটি একটু উচু করলেই আর এ সমস্য থাকবে না। তারা নির্বিঘেœ সারা বছর সড়ক পথে জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।
তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে সিএনজি চালক উজান তাহিরপুর গ্রামের ঝিনুক মিয়া বলেন, পথে তিন স্থানে পানি থাকার কারণে ১ মাস ধরে সরাসরি সুনামগঞ্জ যেতে পারছি না। দুর্গাপুর মোকাম বাড়ির সামনের সড়কে এখনো ৪ ফুটের মত পানি রয়েছে।
বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা গ্রামের প্রবীন সাংবাদিক মোঃ সালেহ আহমদ বলেন, শক্তিয়ার খলা থেকে বিশ^ম্ভরপুর সদরের দুরত্ব ৬ কিলোমিটার। ৬ কিলোমিটার সড়কে দুই স্থানেই প্রায় ২’শ মিটার সড়কে পানি। প্রতিদিনই তিনি বাড়ি থেকে উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন। বর্ষাকালে তিনি বেশীর ভাগ সময় স্থান দুটো নৌকা করেই পারাপার হন। তাছাড়া তিনি আরো জানান, যাদুকাটা নদীর শাখা নদী পুরান জাদুকাটা মুখে রাবার ড্যাম নির্মাণ করার পর থেকে পাহাড়ি ঢলের পানি চাপ অনেকটা কমে গেছে। সড়কটি এখন ইচ্ছে করলেই উচু করা যায়। মধ্য নগর উপজেলার মধ্য নগর সদর ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম মজনু বলেন, মধ্য নগর উপজেলার অধিকাংশ লোকজন তাহিরপুর হয়েই সুনামগঞ্জ, সিলেট যাতায়াত করেন। বর্ষাকালে সড়ক পথে তিন স্থানে পানি থাকার কারণে জেলার সদর যেতে নৌকা পারাপার হতে গিয়ে নানা রকম দূর্ভোগে পড়েন উপজেলার লাখো মানুষ।
তাহিরপুর উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আজাদ হোসেন বলেন, তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের তিনটি স্থানে প্রায় ৩’শ মিটার সড়ক অনেক নীচু। পাহাড়ি ঢলের পানি হাওরে নেমে গেলও সড়কের ঐ স্থানগুলো ডুবেই থাকে বর্ষা মৌসুমের দীর্ঘ সময় ধরে।
সুনামগঞ্জ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কে কয়েকটি স্থান নীচু থাকার কারণে সাময়িক ভাবে অনেক মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু পানি নামার জন্যও তো পথ দিতে হবে। সড়ক নির্মাণের সময় তিনটি স্থান কিছুটা নীচু রাখা হয়েছিলো পাহাড়ি ঢলের পানি নেমে যাওয়ার জন্য। তাছাড়া আমরা দেখছি কি করা যায়।