হাঁস ধান নষ্ট করায় হামলা, নারীর মৃত্যু

5

 

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের রাজনগরে হাঁস জমির ধান নষ্ট করা নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় এক নারীসহ তিনজনকে আটক করেছে রাজনগর থানা পুলিশ।
বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের ভ‚মিউড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষের বাড়িতে গিয়ে হামলা করলেও নিহত নারীকে আঘাত বা মারধরের ঘটনা ঘটেনি বলে অভিযুক্ত পরিবারের লোকজন দাবি করেছেন। পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে পাঁচগাঁও ইউনিয়নের ভ‚মিউড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার জমিতে প্রতিবেশী আফসানা বেগমের হাঁস গিয়ে ধান নষ্ট করে। এ নিয়ে দুলাল মিয়া ও আফসানা বেগমের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে আফসানা বেগমের স্বামী আহাদ মিয়া কোদাল নিয়ে তেড়ে গেলে দুলাল মিয়ার সাথে মারামারি হয়। এতে আহাদ মিয়া, তার স্ত্রী আফসানা বেগম, দুলাল মিয়া ও তার স্ত্রী পিংকি বেগম আহত হন।
পরে বিষয়টি স্থানীয় মুরব্বিরা মীমাংসা করে দেবেন বলে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেন। ঘটনার জেরে হঠাৎ করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আহাদ মিয়ার লোকজন দুলাল মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায়। বাড়ির টিনের বেড়া ভেঙে ফেলেন ও ইটপাটকেল ছোড়েন। এ সময় দুলালের মা আখলিবুন বেগম (৬০) তাদের বাধা দিতে এগিয়ে গেলে বুকে ইট পড়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন বলে জানান তার পুত্রবধূ পিংকি বেগম। দীর্ঘ সময় জ্ঞান না ফেরায় রাত ১২টার দিকে আখলিবুন বেগমকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ওই গ্রামের মৃত নেছার আলীর ছেলে আহাদ মিয়া (৩৫), তার স্ত্রী আফসানা বেগম (২৫) ও মৃত সজলু মিয়ার ছেলে আল আমিনকে (১৮) আটক করেছে পুলিশ। আটক আহাদ মিয়া মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহতের পুত্রবধূ পিংকি বেগম বলেন, জমিতে হাঁস গিয়ে ধান নষ্ট করায় অনেকবার আফসানা বেগমকে সতর্ক করা হয়েছে। বুধবার এ নিয়ে আমার স্বামীর সাথে তাদের কথা কাটাকাটি ও মারামারি হয়। এতে আফসানা বেগম, তার স্বামী, আমার স্বামী ও আমি আহত হই। রাতে আহাদ মিয়ার লোকজন ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে আমাদের ঘরে হামলা চালায়। আমার শাশুড়ি তার ছেলেকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে তার বুকে ইট পড়ে। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনি মারা গেছেন বলে ডাক্তার জানান। এদিকে আহাদ মিয়ার বোন সেন্না বেগম বলেন, বাড়িতে এখন পুরুষ মানুষ কেউ নেই। ঘটনা শুনে আমি বাপের বাড়িতে এসেছি। শুনেছি জমিতে হাঁস পড়া নিয়ে আমার ভাইকে দুলাল মিয়া মেরেছে। আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা রাতে তাদের বাড়িতে হামলা করেছে। পরে শুনি দুলাল মিয়ার মা মারা গেছেন। আমাদের কেউ তাকে মারধর বা আঘাত করেনি বলে জেনেছি।
রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিনয় ভ‚ষণ রায় বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও ধরার অভিযান চলছে।