রমজানে সাংগঠনিক কাজে গতি বাড়াবে আ.লীগ

3

কাজিরবাজার ডেস্ক

নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রোজার মাসে বিভিন্ন সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে দলের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মী সভা, নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং সম্মেলন হয়ে যাওয়া ইউনিটগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে জোর দেওয়া হচ্ছে। সাধারণত রোজার মাসে মাঠের রাজনৈতিক কর্মসূচি বিশেষ করে সমাবেশ, জনসভা বা এ ধরনের গণ জমায়েতের কর্মসূচি থাকে না। জরুরি কোনো পরিস্থিতি ছাড়া এ ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হয় না। তবে এই সময় দলের সাংগঠনিক কাজগুলো এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। এর মধ্যে রয়েছে সারা দেশে জেলা, উপজেলা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে কর্মী সভা করা। পাশাপাশি দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ, সম্মেলন হয়ে যাওয়া ইউনিটগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ চলবে। এছাড়া তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ইউনিটগুলো আয়োজিত ইফতার কর্মসূচির মাধ্যমে গণসংযোগ কার্যক্রম চালানো হবে। নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এ কাজগুলো করা হবে বলে দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র ৮ মাসের মতো বাকি রয়েছে। চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে অথবা আগামী বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে রোজার মাসেই সাংগঠনিক কাজগুলো এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে যৌথ সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই কার্যক্রমগুলো চালিয়ে যাওয়ার তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আর খুব বেশি দেরি নেই। নতুন সদস্য সংগ্রহ, যে সব জায়গায় এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি, সেগুলো দ্রæত করতে হবে। রোজার মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই কাজগুলো আমাদের করতে হবে।
গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের আগে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলন করা হয়। সম্মেলন হয়ে যাওয়া এসব ইউনিটের অধিকাংশেরই এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়া হয়নি। রোজার মাসে এই কমিটি গঠনের কাজগুলোও এগিয়ে নেওয়া হবে। সম্মেলনের সময় এই ইউনিটগুলোর শুধুমাত্র সভাপতি ও সাধারণ সম্পদক নির্বাচন করা হয়েছে। নতুন সভাপতি সাধারণ পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে কেন্দ্রে জমা দেবেন। এরপর সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সভাপতিমÐলীর সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকরা বসে প্রস্তাবিত কমিটিগুলো যাচাই বাছাই করে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করবেন। সে অনুযায়ী দলের সভাপতির নির্দেশে সাধারণ সম্পাদক সই করে কমিটি অনুমোদন দেবেন। রোজার মাসে এই কাজগুলো সম্পন্ন করা হবে। যে সব ইউনিট থেকে এখন পুর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে আসেনি সেসব জায়গার নেতাদেরকে ইতোমধ্যে কমিটি জমা দেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রোজার মাসে দলের নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সাংগঠনিক কাজগুলো এগিয়ে রাখতে চায় দলের নীতিনির্ধারকরা। রোজার পরই নির্বাচনী প্রচারে জোরেশোরে মাঠে নামবে দলের নেতাকর্মীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, রোজার মাসে সাংগঠনিক কাজগুলোর মধ্যে কর্মী সভার ওপর জোর দেওয়া হবে। ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে। এই ইফতার মাহফিল উপলক্ষে কর্মী সভারও আয়োজন করবে। নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই সাংগঠনিক কাজগুলো করা হবে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, রোজার মাসে যে সব সাংগঠনিক কাজ হবে তার মধ্যে কর্মী সভা থাকবে। এছাড়া যে সব জায়গায় সম্মেলন হয়েছে কিন্তু এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, সে সব জায়াগায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজগুলো সম্পন্ন করা হবে। এই সময় আমরা হোম ওয়ার্কগুলো করে ফেলবো। ইফতারের কর্মসূচি থাকবে, দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটির পক্ষ থেকে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, রোজার মাসে সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন এটা তো সাংগঠনিক কাজের চলমান প্রক্রিয়া, তার পরও এই সময় জোর দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ইউনিয়ন ওয়ার্ড পর্যায়ে ইফতারের আয়োজন করা হবে। এর মাধ্যমে তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে একটা যোগাযোগ তৈরি হয়, শুভেচ্ছা বিনিময় হবে। এগুলোও সাংগঠনিক কাজেরই অংশ। এসব কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের বলা হয়েছে।