স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী গাদ্দাররা এদেশে বানরের শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নের ষড়যন্ত্র করছে —-মাওলানা হুছামুদ্দীন ফুলতলী

18
বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া হবিগঞ্জ জেলা আয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।

বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র মুহতারাম সভাপতি হযরত মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেন, তাগুতিবাদিরা কখনোই ইসলামকে হেয় করা বন্ধ করেনি বরং সময়ে সময়ে চক্রান্তের রঙ পরিবর্তন করেছে। এমনকি রাসূল (সা.) -এর দেহ মুবারক কবর থেকে চুরির পায়তারা করা হয়েছিলো এদের দ্বারা। এই তাগুতিবাদী, পৌত্তলিকতাবাদীরা মুসলমানদের তাহযীব-তামাদ্দুন বিনষ্ট করার চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তাদের এই প্রচেষ্টা সর্বদা অব্যাহত থাকবে, আমাদেরকে এদের মোকাবেলা করতে হবে। সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন-তাবে তাবেয়ীন, উলামা কেরামগণ সময়ে সময়ে ইসলামের আমানতদারিতা রক্ষা করেছেন। বাদশাহ আকবরের দ্বীনে এলাহির বিরুদ্ধে মুজাদ্দিদে আলফে সানী (র.) লড়াই করেছেন। আমাদেরকেও তাদের অনুসরণে ইসলামের আমানতদারিতা রক্ষা করতে হবে। ইহুদি-নাসারাদের সবচেয়ে বড় চক্রান্ত মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করা, কেননা মুসলমানদের মধ্যে যত বিভেদ সৃষ্টি হবে তত তারা শক্তিহীন হবে। এর একটি প্রমাণ হচ্ছে, যারা রাসূল (সা.)-কে বিদ্রæপ করে, কুরআনের আয়াতকে জাল করে তারাও হিযবুত তাওহীদ সহ বিভিন্ন নাম দিয়ে বর্তমানে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআত হওয়ার দাবি করছে। অপরদিকে এদেশের শিক্ষিতরা আজ গোমরাহির দিকে ধাবিত হচ্ছেন। এ ধরনের ক্রান্তিলগ্নে বর্তমান সময়ে চিন্তাশীল মানুষের প্রয়োজন, যারা হবেন দ্বীনের জিম্মাদার।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে এদেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য হনুমানের শিক্ষা সম্বলিত পাঠপরিক্রমা প্রণয়ন করে তাদের মগজ ধোলাইয়ের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। মানুষ একসময় বানর ছিলো, কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় তার লেজ পড়ে গেছে; এই শিক্ষা কোন শিক্ষার্থী পেলে সে সারাজীবন মানুষ থাকবে, মানুষের খাদ্য খাবে কিন্তু বানরের মগজ দিয়ে জীবন পার করবে। এ ধরনের শিক্ষা যারা প্রণয়ন করছে তারা এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী চক্র। তারা চায় এদেশে আদর্শ মানুষ সৃষ্টি না হয়ে আবর্জনার স্তুপ সৃষ্টি হোক। এদেশের ঈমানদার মুসলমানরা বেঁচে থাকতে আউলিয়ায়ে কেরামের এই যমীনে এ ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না (ইনশাআল্লাহ)।
তালামীযে ইসলামিয়ার কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তালামীযে ইসলামিয়া মদীনাওয়ালার সংগঠন। এই সংগঠনের কর্মীদের দায়িত্ব হলো ছাত্রসমাজ ও যুবসমাজকে গোমরাহির পথ থেকে ফিরিয়ে, সুপরামর্শ দিয়ে জাহান্নামের পথ থেকে ফিরিয়ে জান্নাতের পথের সন্ধান দেওয়া। এজন্য তালামীয কর্মীদের জ্ঞান-গরীমায়, বিবেকবুদ্ধিতে এগিয়ে যেতে হবে। কেননা জ্ঞান হচ্ছে আলোর পথ। জ্ঞান অর্জন করে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। প্রকৃত আল্লাহর বান্দা হওয়া সবচেয়ে বড় সফলতা। এই সফলতার দিকে এগিয়ে যেতে হবে। রাসূল (সা.) এর উসওয়ায়ে হাসানার রঙে রঙিন হতে হবে।
২০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বাদ যোহর হবিগঞ্জ পৌর টাউন হলে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়া হবিগঞ্জ জেলা আয়োজিত জেলা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান আহমদ। প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি বলেন, তালামীযে ইসলামিয়া আদর্শের পতাকাবাহী কাফেলা। এই সংগঠনের কর্মীরা আল্লাহ ও তাঁর হাবীব (সা.) এর সন্তুষ্টির রাহে কাজ করেন। সেজন্য যাবতীয় হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থেকে সংগঠনের কর্মীদের কাজ করতে হবে খুলুসিয়াতের সাথে।
জেলা সভাপতি মো. ছাদেকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ফয়ছল আহমদ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদের যৌথ পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল করিম মহসিন ও হবিগঞ্জ জেলা আল ইসলাহ’র সভাপতি মুফতি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন আহমদ।
শাখা সহ-সভাপতি মুহাম্মদ ইমরান আল-ইমনের স্বাগত বক্তব্যে সূচিত সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- আনজুমানে আল ইসলাহ’র কেন্দ্রীয় সদস্য সৈয়দ আফজল হোসাইন সায়েম, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মারুফ আহমদ, সহ-স্কুল ও কলেজ বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মাজহার উদ্দিন আহমদ, হবিগঞ্জ জেলা আল ইসলাহ’র সহ-সভাপতি মুফতি আব্দুল মজিদ পিরিজপুরী, মাওলানা আব্দুল হান্নান, হবিগঞ্জ জেলার সাবেক সভাপতি মাওলানা আফতাব উদ্দিন আহমদ, মো. আব্দুল মুহিত রাসেল, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা মুবাশ্বির হোসাইন চৌধুরী, ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা কাজী কামরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেলা আল ইসলাহ’র অফিস সম্পাদক সৈয়দ আহমদ, বাহুবল উপজেলা আল ইসলাহ’র সহ-সভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দিন আহমদ, মাওলানা দেলাওর হোসাইন, লাখাই উপজেলা সভাপতি মাওলানা সুহেল আহমদ, সহ-সভাপতি রায়হান উদ্দিন চৌধুরী, বানিয়াচং উপজেলা সভাপতি মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান আজহারি, মাধবপুর উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কাইয়ুম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাহমুদুর রহমান, দক্ষিণ সাংগর দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা হুসাইন আহমদ, খান্দুরা হাবেলীর প্রতিনিধি সৈয়দ মামুন আহমদ, মুসলিম হ্যান্ডস এর নবীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, সংগঠনের হবিগঞ্জ জেলার সাবেক সহ সভাপতি মুফতি আবু সুফিয়ান, সুনামগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের সহকারী শিক্ষক হুসাইন আহমদ। বিজ্ঞপ্তি