কোম্পানীগঞ্জে পাথর থেকে ওসি তদন্তের চাঁদাবাজির অভিযোগ, তদন্ত করছে পুলিশ

8

কোম্পানীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
কোম্পানীগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ আহাম্মদ এর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। পাথর বোঝাই গাড়ি ও ক্রাশার মিল থেকে তিনি নিয়মিত চাঁদা নিচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাথর কোয়ারী থেকে দীর্ঘদিন ধরে পাথর উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে ক্রাশার মিল ও কারখানা। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় স্থানীয় শ্রমিকরা তাদের ক্রাশার মিলের মাটি খুঁড়ে ভাঙ্গা, আধা ভাঙ্গা ও আস্ত পাথর উত্তোলন করছেন। এই পাথর গুলো মেশিন চালু অবস্থায় গাড়ির টায়ার ও পাথরের চাপে মাটির প্রায় ৫-৭ ফুট নিচে চলে গেছিল। বর্তমানে পূর্বের উত্তোলিত এই পাথর খুড়ে তুলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। কিন্তু এতেও বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ আহাম্মদ বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কয়েকজন। তারা বলেন, প্রতি ক্রাশারের তলা (ক্রাশার মিলের এরিয়া) থেকে তিনি জোরপূর্বক ২-৫ হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছেন। চাঁদা না দিলে দেখান মামলা গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে পিটুনীর ভয়। তাছাড়া জিপ বহনকারী গাড়ি ধরে আদায় করছেন গাড়িপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
ভুক্তভোগী উপজেলার কলাবাড়ী গ্রামের শামসুল ইসলাম অভিযোগ করেন, প্রায় ১০ দিন আগে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ আহাম্মদ ও এ.এসআই টিপু সুলতান পাড়ুয়া তেল পাম্পের কাছ থেকে তার একটি জিপ পাথরের গাড়ি আটকিয়ে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে তাকে অন্য প্যান্ডিং মামলায় আসামী করে চালান ও রিমান্ড দেয়া হবে বলে ভয়-ভীতি দেখাতে থাকেন। এ সময় তার কাছে টাকা না থাকায় বাধ্য হয়ে তিনি উপজেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম বেরাই ও সদ্য বিবাহিত মেয়ের জামাই’র কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা এনে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ আহাম্মদকে দিয়ে কোনোমতে সাময়িক মুক্তি পান। পরে রাতে থানায় গিয়ে তার টেবিলে বসে আরো ২ হাজার টাকা দিয়ে সম্পুর্ন মুক্তি পান। ২দিন পরে তিনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও সার্কেল এএসপি প্রভাস কুমার সিংকে বিষয়টি ফোন করে জানান। তারা দেখবেন বলে আশ্বাস দেন। অপর ব্যাবসায়ী সাইদুর রহমান সৈয়দ জানান, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ আহাম্মদ তার চিপ পাথরের গাড়ি ধলাই ব্রীজের উপর থেকে আটকিয়ে মামলা ও রিমান্ডের ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা দাবী করেন। পরে তিনি অনেক রিকোয়েস্ট করে ১(এক হাজার) টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। ইন্সপেক্টর ফয়েজ আহাম্মদ পাড়ুয়া গ্রামের মদরিছ আলীর কাছেও একটি ক্রাশারের তলার জন্য ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু তিনি ওসি সুকান্ত চক্রবর্তীকে জানানোর পর ফয়েজ আহাম্মদ সেখান থেকে আর টাকা নিতে পারেননি। এভাবে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ফয়েজ আহাম্মদ উপজেলার পাড়ুয়া, কলাবাড়ী ও বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে নিচ্ছেন।
সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার এডিশনাল এসপি লুৎফুর রহমান জানান, ফয়েজ আহাম্মদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়টি আমরা শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য একজন অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।