যারা সরকারের উন্নয়ন দেখে না তাদের চোখ পরীক্ষা করা দরকার ॥ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী

6
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রান্তে যুক্ত হয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন রেখে বলেছেন, বিএনপির নেতা কে? বাংলাদেশের জনগণ ওদের ভোট দেবে কেন? এতিমের অর্থ আত্মসাতকারী অথবা গ্রেনেড হামলা, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, অর্থ পাচারকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামি হচ্ছে তাদের (বিএনপি) দলের নেতা। সেই দলকে মানুষ কেন ভোট দিতে যাবে? মানুষ তো ভোট দেবে না। বিএনপির জন্ম অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর হাতে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দলের জন্মই হয়েছে জনগণের মধ্যে থেকে নয়, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী সামরিক শাসকের পকেট থেকে, বঙ্গবন্ধু-জাতীয় চার নেতা হত্যাকা-ের সঙ্গে যে (জিয়াউর রহমান) জড়িত, ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করতে যে হাজার হাজার সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে- সেই অবৈধভাবে জন্ম নেয়া দলটির (বিএনপি) কাছ থেকে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়। এটা জাতির জন্য খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রবিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন।
যারা সরকারের উন্নয়ন দেখে না, তাদের চোখের পরীক্ষা করানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের (বিএনপিসহ কিছু মানুষের) চোখে কোন উন্নয়নই নাকি দেশে হয় নাই! এখন বলতে হয় যে, আমরা তো একটা আই ইনস্টিটিউট করে দিয়েছি। যারা বক্তৃতা দেয় উন্নয়ন হয় নাই, চোখে দেখে না, আমার মনে হয় তাদের চোখ পরীক্ষা করা দরকার। তাহলে হয়তো দেখতে পাবে যে উন্নয়ন হয়েছে কি না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আজিজুস সামাদ আজাদ ডন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী ও উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান। গণভবন থেকে আলোচনা সভা পরিচালনা করেন দলের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।
সমালোচকদের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাদের চোখে পড়ে না যে, শতভাগ বিদ্যুত আমরা পৌঁছে দিতে পেরেছি। তারা নিজেরা এখন ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ভোগ করছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ তো বিদ্যুত ছাড়া চলতে পারে না। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ তারা ব্যবহার করছে, এটা উন্নতি না?
আজকে পদ্মা সেতু, মেট্টোরেল, কর্ণফুলী ট্যানেল, রূপপুর বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো কি তাদের চোখে পড়ে না? এগুলো কি উন্নয়নের লক্ষণ না? আজকে দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে, এই উন্নয়ন তাদের চোখে পড়ে না? খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি এটা তাদের চোখে উন্নয়ন না।
টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি অনেকে আছে দেশে কোন উন্নতিই দেখে না। তাদের যদি চোখ খারাপ থাকে তাহলে আমার কিছু বলার নাই। তারা দেখে না, কেন দেখে না? সেটা হচ্ছে দেখার ইচ্ছে নাই তাই দেখে না। কিন্তু আমাদের উন্নয়নের যে কর্মসূচী সুপরিকল্পিতভাবে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন করেছি, আমাদের ঘোষণাপত্রে আমরা ঘোষণা দিয়েছি। নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দিয়ে যে যে পদক্ষেপ নেয়ার কথা আমরা বলেছি, আমরা একে একে তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের ক্ষমতা আমরা জনগণের কাছে ফেরত দিয়েছি, গণতন্ত্র জনগণের হাতে আমরা ফিরিয়ে দিয়েছি। যে গণতন্ত্র ক্যানটনমেন্টে বন্দী ছিল, জিয়ার পকেটে ছিল বা এরশাদের পকেটে ছিল এবং খালেদা জিয়ার ব্যাগে ছিল, সেটাকে আমরা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। জনগণের ক্ষমতায়ন আমরা করে দিয়েছি। সেখানে যদি বিএনপির নেতারা গণতন্ত্র না দেখে, উন্নয়ন না দেখে, তাহলে তো বলার আর কিছু থাকে না।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তাদের একটা গুণ আছে- তারা মিথ্যা কথাটা ভালভাবে বলতে পারে। সেই ভাঙ্গা ছুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি থেকে কোকো লঞ্চ ১, ২, ৩, ৪ বের হলো, ড্যান্ডি ডাইং, তারপর কত কিছু তো বের হলো। যারা দুর্নীতি করে, অর্থ পাচার করে, খালেদা জিয়ার ছেলের পাচার করা অর্থ ফেরতও এনেছি। এরা আবার দুর্নীতির কথাই বা বলে কিভাবে? ভোটের কথাই বা বলে কি করে? উন্নয়ন চোখে পড়ে না কি করে?
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, স্বাধীণতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ। মাটি ও মানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন হয়। আমরা যে ওয়াদা করেছি সেই ওয়াদা পূরণ করেছি। সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে আর বাংলাদেশকে কেউ পেছনে টানতে পারবে না।
দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের পাশে দাঁড়াতে হবে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। জনগণের উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য। এটাই আমাদের একামাত্র লক্ষ্য। জাতির পিতা যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ গড়েছিলেন, সেই জয় বাংলা স্লোগান ফিরে এসেছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আজ প্রতিষ্ঠিত। আজকে বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে আর কোন বিকৃত ইতিহাস শুনতে হবে না। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আদর্শ নিয়ে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে, বাংলাদেশ সম্মান নিয়ে চলবে। উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ মর্যাদা পাবে- এটাই আমাদের আজকের প্রতিজ্ঞা।
গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারের নেয়া পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প নিয়েছিলাম। খালেদা জিয়া এসে সেটাকে গলা টিপে মেরে ফেলেছিল। যা হোক পরবর্তীতে সেটাকে আমরা ‘আমার বাড়ি আমার খামার’ নাম দিয়ে গ্রামের কোন মানুষের ঘরে যেন কোন অভাব না থাকে- সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, মানুষকে আর ঋণের বোঝা টানতে হবে না, বরং তারা নিজেরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে এবং তাদের ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করে দিয়ে এই প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি, যার মাধ্যমে দারিদ্র হ্রাসে বিরাট সক্ষমতা আমরা অর্জন করছি।
কৃষি অর্থনীতির আমরা অনেক নির্ভরশীল জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, এখন একদিকে করোনার ধাক্কা, অপরদিকে যুদ্ধাবস্থা। সব কিছু মিলিয়ে খাদ্যের অভাবটা সারাবিশ্বে দেখা দিতে পারে। সে জন্য আমাদের নিজেদেরকে সতর্ক থাকতে হবে। যার জন্য আহ্বান করেছি, কোথাও যেন এক ইঞ্চি জমি অনাবাদি না থাকে। যার যেটুকু আছে সেটুকু করবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে শ্রমিকদের বেতনভাতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, অথচ এই শ্রমিকরা মজুরি চেয়ে যখন তারা আন্দোলন করে, খালেদা জিয়ার নির্দেশে রমজান মাসে ১৭ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল। এ কথা মনে হয় বারবার মনে করিয়ে দেয়া উচিত। কারণ, বিএনপির নেতারা প্রায়ই বক্তৃতা দেয়, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নাকি নাই। গণতন্ত্র নাকি ধ্বংসে করে ফেলেছি!
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন কাদের মুখে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়, সেটাই বড় কথা। যাদের জন্ম হয়েছে অগণতান্ত্রিকভাবে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে এবং এই অবৈধ সরকার এটা শুধু আমার মুখের কথা না, উচ্চ আদালত থেকেই নির্দেশ দিয়েছে। জিয়াউর রহমানের ক্ষমতা দখল ছিল অবৈধ, এরশাদের ক্ষমতা দখল ছিল অবৈধ। কারণ, তারা সংবিধান লংঘন করে এমনিক, সামরিক আইন, সামরিক রুলস ভঙ্গ করে নিজেদেরকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে, তারপরে আবার সেই ‘হ্যাঁ-না’ ভোট। তারপরে আবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, তারপর আবার দল গঠন, পরে রাজনীতিতে অবতরণ করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমে ক্ষমতায় উত্তরণ, তারপরে রাজনীতিতে অবতরণ। কারণ, তারা (সামরিক শাসক) আসে রাজনীতিবিদদের গালি দিয়ে। পরে আবার সেই নিজেরাই উর্দি খুলে রাজনীতিবিদ হয়ে যায়। সেই ধরনের ক্ষমতা দখলকারী অবৈধভাবে তাদের হাতে বিএনপির জন্ম। বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে গেছে জিয়াউর রহমান। যে জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান থেকেও সে ক্ষমতা দখল করেছিল, সে রাজনীতিবিদ হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের চার জাতীয় নেতাকে হত্যা থেকে শুরু করে হাজার হাজার সামরিক বাহিনীর অফিসার, সৈনিক, বিমানবাহিনীর অফিসার, সৈনিক, তাদেরকে হত্যা করেছিল তার (জিয়া) ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য। একদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গুম খুন করেছে, অপরদিকে, সেনা সদস্যদের কত পরিবার এখনও তাদের আপনজনকে পায়নি, পায়নি লাশটা পর্যন্ত। সেই হত্যাযজ্ঞ সে (জিয়া) চালিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ১৯ থেকে ২০টি ক্যুর ঘটনা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা একেকটি ক্যুতে হাজার হাজার সামরিক বাহিনীর অফিসার, সৈনিকদের হত্যা করেছে, তাদের (বিএনপি) কাছ থেকে এখন গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হবে, এটা হচ্ছে জাতির দুর্ভাগ্য। গণতন্ত্র নাকি ধ্বংস হয়ে গেছে! তাদের কাছে গণতন্ত্রের ডেফিনেশনটা কী? আর যাদের জন্ম জনগণের মধ্য থেকে হয়নি, জন্ম হয়েছে সেনা ছাউনিতে ক্ষমতা দখলকারীর পকেট থেকে, তারা (বিএনপি) আমাদের এখন গণতন্ত্র শেখায়। এটাই হচ্ছে এ জাতির সব থেকে বড় দুর্ভাগ্য।
‘খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করলে বিদেশ থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে না’- বিএনপির মন্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার অতীতের এমন মন্তব্যের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সেই সময় তার জবাবে আমি বলেছিলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। তাই আমরা ভিক্ষুক জাতি হিসেবে থাকতে চাই না। এই মাটি এবং মানুষকে দিয়েই আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম। আমরা ভিক্ষুক জাতি হয়ে থাকব না। কারও কাছে হাত পেতে চলব না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের এখন প্রায় ৯০ ভাগের ওপর নিজেদের অর্থায়নে তা বাস্তবায়ন করতে পারি। পদ্মার সেতুর যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, নিজস্ব অর্থায়নে সেটা করে আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি, হ্যাঁ বাংলাদেশ নিজে পারে।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আরও বলেন, আজকে যে উন্নয়নটা হচ্ছে, সেটা তাদের চোখে পড়বে না- এটাই স্বাভাবিক। কেননা, বিএনপি ক্ষমতায় থেকে বিআরটিসি বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। অথচ এটাতে সাধারণ মানুষ চলে। আমরা ক্ষমতায় এসে বলেছিলাম লাভ-লোকসান বড় কথা নয়। মানুষ চলাচল করবে স্বল্পমূল্যে সেটাই বড় কথা। মানুষের সেবা দেব এবং আমরা এটা চালু রাখি। বিএনপির আমলে বিশ্ব ব্যাংকের পরামর্শে রেল যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং প্রধানমন্ত্রী তার আমলে নতুন নতুন রেলপথ সম্প্রসারণ, নদী ড্রেজিং করা করে নৌপথ সচল করার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে শুরু করে নানা সঙ্কটে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াই, মানুষের জন্য কাজ করি। প্রত্যেকটা মঙ্গা এলাকা নিজেরা ঘুরে নোঙ্গর খানা খুলে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর কোথাও কোন মঙ্গা হয় নাই। উত্তরবঙ্গে যে মঙ্গা ছিল, সেটা উত্তরবঙ্গে যাদের বাড়ি তারা কি সেটা বোঝে না, দেখে না চোখে? তাই তাদের কথা, দেশের নাকি উন্নতিই হয়নি!
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে দেশের রাস্তাঘাট, অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেন এবং সরকারের উন্নয়ন নিয়ে বিএনপির অনবরত মিথ্যাচারের জবাব দেন। শেখ হাসিনা বলেন, মিথ্যা কথা বলায় তারা এক্সপার্ট। তাদের সঙ্গে আমরা পারব না। আর তারা ভাঙ্গা রেকর্ডের মতো বলেই যাচ্ছে। অবশ্য ভাঙ্গা রেকর্ড এখন আর কেউ চিনবে না। এখন তো সব ডিজিটাল। আগের মতো তো আর নেই। তবুও তারা কিন্তু মিথ্যা কথা বলেই যাচ্ছে। একটার পর একটা কথা বলেই যাচ্ছে। এ সবের জবাব দিতে হবে।