রোমানিয়ায় নেয়া হচ্ছে বাংলার সমৃদ্ধির নাবিকদের ॥ সেখান থেকে দেশে ফেরানো হবে, আরিফের মরদেহও আসছে

13

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে পড়া ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ২৮ নাবিককে উদ্ধারের পর মলদোভা হয়ে রোমানিয়ায় নেয়া হচ্ছে। তাদের সঙ্গে হাদিসুর রহমান আরিফের মরদেহও রয়েছে। রোমানিয়া থেকে তাদের দেশে ফেরানো হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মাসুদ বিন মোমেন আরও জানান, ‘বাংলাদেশী জাহাজ ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’র ওপর কারা হামলা করেছে, সে বিষয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত নই। তবে ঘটনাটি তদন্ত করে জানানোর আশ্বাস দিয়েছে রাশিয়া।’ এর আগে ২ মার্চ রাতে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মৃত্যুবরণ করেন। আটকে পড়া নাবিক-ক্রুদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা অলভিয়া এলাকায় এক প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর তত্ত্বাবধানে আছেন।
উদ্ধার হওয়া নাবিক-ক্রুদের মধ্যে রয়েছেন, সেলিম মিয়া, রমা কৃষ্ণ বিশ্বাস, মোঃ রোকনুজ্জামান রাজিব, ফারিয়াতুল জান্নাত তুলি, ফয়সাল আহমেদ সেতু, মোহাম্মদ ওমর ফারুক, সৈয়দ আসিফুল ইসলাম, রবিউল আউয়াল, সালমান সরওয়ার সামি, ফারজানা ইসলাম মৌ, মোঃ শেখ সাদি, মোঃ মাসুদুর রহমান, মোঃ জামাল হোসাইন, মোহাম্মদ হানিফ, মোঃ আমিনুর ইসলাম, মোঃ মহিন উদ্দিন, হোসাইন মোহাম্মদ রাকিব, সাজ্জাদ ইবনে আলম, নাজমুল উদ্দিন, মোঃ নজরুল ইসলাম, সরওয়ার হোসাইন, মোঃ মাসুম বিল্লাহ, মোহাম্মদ হোসাইন, মোঃ শফিকুর রহমান, মোঃ আতিকুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।
শুক্রবার সকালে বিএসসির মহাব্যবস্থাপক (শিপ পার্সোনাল) ক্যাপ্টেন আমীর মোঃ আবু সুফিয়ান বলেন, জাহাজের ২৮ নাবিক-ক্রু সবাই সুস্থ আছেন। তারা নিরাপদে আছেন। যুদ্ধের পরিস্থিতি দেখে বর্তমানে থাকা জায়গা থেকে তাদের সরিয়ে নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের মৃতদেহ যেকোনভাবে, যত কষ্টই হোক যাতে দেশে নিয়ে আসা যায়, সেই চেষ্টা চালাতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছি।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন মোঃ আনাম চৌধুরী বলেন, জাহাজে আটকে থাকা সবাই সুস্থ আছেন, নিরাপদে আছেন। বৃহস্পতিবার তাদের জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি থেকে টাগবোটের সাহায্যে উপকূলে আনা হয়েছে। এখন তারা নিরাপদ স্থানে অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, এখন তারা যে স্থানে অবস্থান করছেন সেখান থেকে পোল্যান্ড ৮০০ কিলোমিটার এবং মালডরিয়া ২০০ কিলোমিটার দূরে। তাও যেতে হবে সড়ক পথে।
এদিকে বিএসসির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২৮ নাবিককে জাহাজ থেকে উপকূলে আনা এবং আশ্রয় দেয়া সবই করেছেন এক প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ী। তিনি নিজ থেকে নাবিক-ক্রুদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন। ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে দেশের বিভিন্ন দফতর যোগাযোগ করছে।
বিএসসি কার্যালয় সূত্র জানায়, জাহাজটি ইউক্রেনের বন্দর থেকে পণ্য বোঝাই করে ইতালির বন্দরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় ওই বন্দর থেকে পণ্য লোডিং কাজ বাতিল করা হয়। এ কারণে জাহাজটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে নোঙর করে রাখা হয়। তুরস্কের এরেগলি বন্দর থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি খালি জাহাজটি অলভিয়া বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ২২ ফেব্রুয়ারি এমভি বাংলার সমৃদ্ধি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছে। এরপর ২ মার্চ রাতে হামলার ঘটনা ঘটে।