শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিন

4

২০২০ সালের ৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না। তাঁর এই ঘোষণার পর সারা দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এই প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে ভূমি ও গৃহহীন আট লাখ ৮৫ হাজার ৬২২ পরিবারকে বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছে সরকার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার হিসেবে প্রতিটি গৃহহীন-ভূমিহীন পরিবারই পাচ্ছে দুর্যোগ সহনীয় সেমিপাকা ঘর, আর ২ শতাংশ জমির মালিকানা।
সরকারের একটি শুভ উদ্যোগ আশ্রয়ণ প্রকল্প। অল্পসংখ্যক মানুষের কারণে এই মানবিক প্রকল্পটিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। গৃহনির্মাণ প্রকল্পে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। নিম্নমানের কাজের পাশাপাশি উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা ও নির্মাণসামগ্রী নেওয়ার খবর এসেছে গণমাধ্যমে। অনেক ঘর মালিকের অভিযোগ, এসব ঘর তৈরিতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। হস্তান্তরের শুরু থেকে অনেক ঘরে ছিল না পানি ও বৈদ্যুতিক সংযোগের ব্যবস্থা।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নের সেনখালী গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য সরকারিভাবে মাটি ভরাট করা জায়গার ওপর পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছিলেন এক মালয়েশিয়াপ্রবাসী। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন স্থাপনার একটা অংশ ভেঙে দিয়েছে। প্রশাসনের দাবি, সরকারি জায়গা অবৈধভাবে ভোগদখল করার জন্যই এর আগে আশ্রয়ণ প্রকল্প তৈরিতে বাধা দিয়েছিল এলাকার একটি সুবিধাবাদী গোষ্ঠী। একাধিকবার প্রকল্পের কাজে বাধা দেয় তারা। মাদারীপুর জেলা প্রশাসক তখন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্পের কাজ স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। এ সুযোগে মাটি ভরাট করা জায়গার ওপর অবৈধভাবে ইটের পাকা ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালান অভিযুক্ত মালয়েশিয়াপ্রবাসী। তাঁর দাবি, ওই স্থানে তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, ওই জায়গাটা সরকারি সম্পত্তি।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে গৃহহীনদের নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হয়েছে। প্রকল্পের ৩০০টি ঘর নির্মাণের কিছুদিনের মধ্যে ভেঙে যায়। গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচারিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী দ্রুত বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তে উঠে এসেছে, কিছু মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে হাতুড়ি-শাবল দিয়ে ঘরগুলো ভেঙেছে। আর্থিক ক্ষতি বিবেচনায় এটি হয়তো বড় কোনো ঘটনা নয়।
এই প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আগ্রহের প্রকল্প হিসেবেই বিবেচিত হয়। সরকারি সম্পত্তি কেউ দখল করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতেই হবে। প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এটি অনেক বড় ঘটনা। তাই সংশ্লিষ্ট দখলকারীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভবিষ্যতে কেউ যাতে এ ধরনের কোনো কাজ করতে না পারে। প্রশাসন এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।