মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুললো

4

তিন বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে খুলেছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। রবিবার কুয়ালালামপুরে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে উন্মুক্ত হয়েছে এই বাজার। এ সংক্রান্ত চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছেন দু’দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমিকদের জন্য এবার কিছু সুবিধা লাভও ঘটবে সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশী কর্মীদের মালয়েশিয়া প্রান্তের সব খরচ বহন করবেন নিয়োগকর্তা। যেমনÑ রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়া, আবাসন, কর্মে নিয়োগ এবং কর্মীদের দেশে ফেরত পাঠানোর খরচ বহন করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। মালয়েশিয়ায় যাবার পর বাংলাদেশী কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইন্স্যুরেন্স সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার ব্যয়, কোয়ারেন্টাইন খরচসহ সব ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে। নিয়োগকর্তারা বা কোম্পানির পক্ষে কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বীমা, চিকিৎসা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা হবে।
দেশের জনসংখ্যাকে প্রথাগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে বরাবরই। তবে জনসংখ্যা সমস্যা নয়, সম্পদ। জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করার ক্ষেত্রে সবার আগে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় শিক্ষিত করা যে জরুরী সে কথাও বলা হয়ে থাকে জোরেশোরে। সে বিবেচনায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা হলো দক্ষ জনশক্তি তৈরির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত। বাস্তব পরিস্থিতি হচ্ছে দেশে কারিগরি ডিপ্লোমাধারী লাখ লাখ শিক্ষার্থী থাকলেও তাদের বিপুল অংশের কর্মসংস্থান সম্ভব হয়নি। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষ ও শিক্ষিত করে তুলবে তারও কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়নি। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় নিশ্চয়ই অবগত যে, বর্তমানে বিশ্বের প্রায় কোন দেশেরই অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। অনেক দেশেরই জাতীয় প্রবৃদ্ধিতে লক্ষ্য করা যায় নেতিবাচক প্রবণতা। তাই নতুন শ্রমবাজার সন্ধান জরুরী হয়ে পড়েছে।
সারাবিশ্বে নতুন শ্রমবাজার খুঁজে দক্ষ জনশক্তি পাঠাতে আরও উন্নত প্রশিক্ষণ দেয়ার বার বার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শ্রমবাজারের চাহিদা অনুযায়ী শ্রমশক্তি তৈরি করার কাজটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন করা দরকার। এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া আবশ্যক। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোকে শ্রমবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলমান। দেশে যে মানের শ্রমশক্তি আছে তাকেই সম্ভাব্য সব বাজারে রফতানির জন্য কূটনৈতিক ও ব্যবসায়িক উদ্যোগ বাড়ানো দরকার। শ্রমিক ও সাধারণ পর্যায়ের কর্মীদের বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য পাঠানোর পাশাপাশি এখন থেকেই ডিপ্লোমাধারী লাখো ব্যক্তিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের দক্ষ কর্মী প্রেরণের পরিকল্পনা নেয়া প্রয়োজন।