প্রধানমন্ত্রীর সফরের সাফল্য

8

করোনার কারণে দেড় বছর বন্ধ ছিল। এরপর গত মাস আবারও সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদেশ সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের মানুষকে সার্বিক বিষয় অবহিত করার সংস্কৃতি সমুন্নত রেখেছেন তিনি। তারা সরকারপ্রধানের বিদেশ সফরের অভিজ্ঞতা ও অর্জনের বাইরে দেশের সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়েও নানা প্রশ্ন করে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী বিশদভাবেই প্রেক্ষাপটসহ সব কৌতূহলের জবাব দেন। বিষয়ছুট প্রশ্নও যে আসে না, তা নয়। তিনি চাইলে সরাসরি তা নাকচ কিংবা সুকৌশলে এড়িয়ে যেতে পারেন। কিন্তু তা করেন না, সদুত্তর প্রদান করেন। তাই বিদেশ থেকে ফিরে আসার পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে থাকে দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ। বরাবরই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলতে ভালবাসেন। বিশেষ করে বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরে কি কারণে এই সফর, কি কি কাজ হয়েছে কিংবা সফর কতটা সফল ইত্যাদি জাতির সামনে তুলে ধরার জন্যই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এই সুযোগে উঠে আসে পারিপার্শ্বিক ঘটনা প্রবাহ। সকল বিষয়ে তাঁর এই স্বচ্ছতা সেই ’৯৬ সাল থেকেই জাতি প্রত্যক্ষ করছে।
সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৬), লন্ডন এবং ফ্রান্সে দুই সপ্তাহের সরকারী সফরে অর্জিত অর্জন ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরতেই বুধবার আয়োজিত হয় সংবাদ সম্মেলন। কপ২৬ সম্মেলনে ঢাকা-গ্লাসগো ঘোষণা গৃহীত হওয়া বাংলাদেশের জলবায়ু কূটনীতিতে নিঃসন্দেহে অগ্রণী ভূমিকা পালনের সাফল্য। বিষয়টি প্রধান হলেও সংবাদ সম্মেলনে অপর কয়েকটি বিষয় হয়ে ওঠে বিশেষ গুরুত্ববহ। সম্প্রতি ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয়াদি উঠে আসে সংবাদ সম্মেলনে। ভর্তুকি দেয়ার বিষয়টি জাতির সামনে স্পষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি খোলাখুলিই বলেছেন, জ্বালানি তেল, বিদ্যুত, সারসহ বিভিন্ন খাত মিলিয়ে সরকারকে বছরে ৫৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়। ডিজেলের জন্য সরকারকে প্রতিবছর প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, আর কত ভর্তুকি দেয়া যায়? কেননা, সব টাকা ভর্তুকি দিতে হলে সব উন্নয়ন কর্মকান্ডই থেমে যাবে।
’৭৫-এ জাতির পিতাকে হত্যার পর ১৯টি ক্যু হয়। আর প্রতিটি ক্যুর পর সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সৈনিক, অফিসার, বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল জিয়াউর রহমান সরাসরি নিজে। তারই নির্দেশে চালানো হয় এসব হত্যাযজ্ঞ।
করোনাকাল এখনও কাটেনি। এ সময়ে নানা সঙ্কট ও উদ্বেগ রয়েছে। সরকারপ্রধান এ বিষয়ে শতভাগ সতর্ক ও সচেতন। এক্ষেত্রে টিকা প্রদান ছাড়াও জরুরী বিষয় হলো অর্থ সহায়তা প্রদান। বর্তমান জনকল্যাণমুখী সরকার করোনাকালে সব শ্রেণী-পেশার মানুষকেই অর্থ সহায়তা দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে জনকল্যাণ সংক্রান্ত বিবিধ বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর সাধুবাদ পাবেন অবশ্যই।