দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৬ ইউপি নির্বাচন, বিচ্ছিন্ন সহিংসতায় ৭ জনের মৃত্যু

7

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সারাদেশে উৎসবের আমেজ থাকলেও বিচ্ছিন্ন রক্তক্ষয়ী সংঘাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বিতীয় ধাপের ৮৩৬টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভোট। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল আশানুরূপ। পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল বেশি। তবে কয়েকটি ইউপিতে সহিংস ঘটনায় ভোটের উৎসব কিছুটা মøান করে দিয়েছে। পরস্পরবিরোধী প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নরসিংদীর রায়পুরায় ৩ জন, কুমিল্লার মেঘনায় ২ জন, কক্সবাজার সদরে ১ জন ও চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ১ জন মারা গেছেন। এছাড়াও ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরা, পাবনা, মাদারীপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, খুলনা, নেত্রকোনা, শেরপুর, নারায়ণগঞ্জ, নড়াইল, জামালপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সকাল ৮টায় ভোট শুরু হলেও তার আগেই কেন্দ্রগুলোতে হাজির হয়ে ভোট দিতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে যান বিভিন্ন বয়সের ভোটাররা। দিন যত বাড়ে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি তত বাড়তে থাকে। স্থানীয় সরকারের একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের নির্বাচন হওয়ায় প্রতিটি গ্রামের পাড়া-মহল্লা থেকে প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। বিশেষ করে বয়স্ক ভোটারদের বিশেষ ব্যবস্থায় কেন্দ্রে এনে ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এ কারণে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশি। অধিকাংশ ইউপিতেই শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য সবাই চান নিজ নিজ এলাকায় নিজের পছন্দের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করতে। তাই প্রার্থীদের মধ্যে কে কাকে পেছনে ফেলে বিজয়ী হবেন এ নিয়ে শুরু হয় নানান কৌশল। আর এ কৌশল প্রয়োগ করতে গিয়েই পরস্পরবিরোধী প্রার্থী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়। কথাকাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি ও মারামারিতে লিপ্ত হওয়ায় হতাহতের ঘটনাও ঘটে। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সংঘাতে লিপ্তদের ওপর লাঠিপেটা, গ্রেফতার ও কোথাও কোথাও গুলিবর্ষণও করতে হয়।
নরসিংদীর রায়পুরার প্রত্যন্ত চরাঞ্চল বাঁশগাড়ীতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন ৩ জন। বৃহস্পতিবার সকালে বাঁশগাড়ী ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলিতে তাদের মৃত্যু হয়। এ সময় আরও ক’জন গুলিবিদ্ধ হন। নিহত তিনজন হলেন বাঁশগাড়ী ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি গ্রামের হেকিম মিয়ার ছেলে সালাউদ্দিন মিয়া (৩০), সোবহানপুর গ্রামের আবদুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর হক (২৬) ও বটতলিকান্দী গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া (৩০)।
স্থানীয় পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, সহিংস ঘটনার পর সকাল ৮টা থেকেই বাঁশগাড়ী ইউপি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এই ইউপিতে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ আশরাফুল হক। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন রাতুল হাসান ওরফে জাকির। নিহত সালাউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর হক আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রাতুল হাসানের সমর্থক। আর নিহত দুলাল মিয়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আশরাফুল হকের সমর্থক।
জানা যায়, দুপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ক’দিন ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। বুধবার সন্ধ্যায় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সারা রাত থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়। বৃহস্পতিবার সকালে দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। নরসিংদীর রায়পুরা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সত্যজিৎ কুমার ঘোষ সাংবাদিকদের কাছে ৩ জনের গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন।
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার মানিকারচর ইউনিয়নের আমিরাবাদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর ১২টার দিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে শাওন আহমেদ (২৫) ও সানাউল্লাহ ডালির (৬০) মৃত্যু হয়। শাওন মেঘনা উপজেলার বল্লভকান্দি গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে। আর সানাউল্লাহ ডালি ভাওরখোলা ইউনিয়নের খিরারচর গ্রামের মৃত মোজাফফর হোসেনের ছেলে।
কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের তেতৈয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আক্তারুজ্জামান পুতু (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ইউপি সদস্য প্রার্থীসহ অন্তত ৬ জন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, জাল ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অস্ত্রের আঘাতে কয়েকজন আহত হন। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পর আক্তারুজ্জামান পুতু নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী শেখ কামালের চাচাতো ভাই।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে নির্বাচনী সহিংসতায় ১ জন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তির নাম মোঃ সফি। লেলাং ইউনিয়নের লালপুল তোফায়েল আহমেদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী : প্রতিদ্বন্দ্বী ২ ইউপি চেয়ারম্যান সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই দুলাল মিয়া (৪৫), সালাউদ্দিন (৪১) ও জাহাঙ্গীর মিয়া (২৬) নামে ৩ জন নিহত হয়েছে। গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন। রায়পুরা উপজেলার দুর্গম চর এলাকা বাঁশগাড়ীতে বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আশরাফুল হকের সমর্থক দুলাল মিয়া (৪৫) সকাল ৮টার দিকে বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভোটকেন্দ্রে যাবার পথে প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকির হোসেনের সমর্থকরা তাকে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করে। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দুপক্ষের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকির হোসেনের সমর্থক সালাউদ্দিন (৪১) ও জাহাঙ্গীর মিয়া (২৬) প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়। গুলি ও টেঁটাবিদ্ধ হয়ে আহত হয় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন। এ সময় ইউপি নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা পর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পুনরায় ভোটগ্রহণ চলে। চরম আতঙ্কের মধ্যে ভোটাররা কেন্দ্রে ভোট প্রদান করছেন।
চট্টগ্রাম : ফটিকছড়িতে নির্বাচনী সহিংসতায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার লেলাং ইউনিয়নের লালপুল তোফায়েল আহমেদ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এদিন জেলার তিনটি উপজেলার ৩৯টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। একজনের মৃত্যুর ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফটিকছড়ি সংবাদদাতা জানান, লেলাং ইউনিয়নে সহিংসতায় নিহত ব্যক্তির নাম মোঃ শফি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংঘর্ষে আহত হন আরও কয়েকজন।
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের ১৬ ইউনিয়ন, সীতাকুণ্ডের ৯ ইউনিয়ন এবং ফটিকছড়ির ১৫টি ইউনিয়নে ভোট হয়। মীরসরাই উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের মধ্যে ১৩টিতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া সীতাকুণ্ডে ৬ এবং ফটিকছড়িতে ১ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছেন।
কুমিল্লা : কুমিল্লার মেঘনা ও তিতাস উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে কয়েকটি কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, গুলি, টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ সহিংসতার ঘটনা ঘটে। এতে সহিংসতায় মেঘনা উপজেলায় শাওন আহমেদ (৩০) ও সানাউল্লাহ ডালি (৬০) নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজার : ভোট চলাকালে সহিংসতায় একজন নিহত ও মেম্বার প্রার্থীসহ আহত হয়েছে ৮ জন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কক্সবাজার সদর খুরুশকুল ইউপি নির্বাচনের ভোট চলাকালে তেতৈয়ায় সহিংসতার এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি নাম আক্তারুজ্জামান পুতু (৩৫) মেম্বার প্রার্থী (বর্তমান মেম্বার) শেখ কামালের ছোট ভাই। কক্সবাজার র‌্যাব-১৫ এর সিপিএসসি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী একাধিক সূত্র জানায়, সকালে মেম্বার প্রার্থী বাবুলের সমর্থকরা ব্যালট পেপার আলাদা করে জোরপূর্বক অবৈধ সিল মারার চেষ্টা করলে অপর মেম্বার প্রার্থী শেখ কামালের ভাই পুতু বাধা দেয়। এতে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মেম্বার প্রার্থী শেখ কামালসহ আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে নেয়া হলে আহত আক্তারুজ্জামান পুতুকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুর আগে তাকে দায়ের কোপ এবং গুলিবিদ্ধ করে আহত করা হয়েছিল। র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় তেতৈয়া কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। কক্সবাজার সদর, রামু এবং উখিয়া উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
সাতক্ষীরা : একটি কেন্দ্রে বোমা হামলা ও দুটি ইউনিয়নে সংঘর্ষে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীসহ ৩০ জন আহত হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোমরা পল্লীশ্রী হাইস্কুল কেন্দ্রে দুপুর দেড়টার দিকে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। পার্শ্ববর্তী কুলিয়া ইউনিয়ন থেকে অর্ধশতাধিক যুবক সেখানে উপস্থিত হয়ে শতাধিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করে।
এদিকে সাতক্ষীরার বৈকারী ইউনিয়নের খলিলনগর কেন্দ্রে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আসাদুজ্জামান অসলেসহ ৮ জন আহত হয়েছেন। মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট বের করে দেয়ার চেষ্টাকালে দুপক্ষের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পাবনা : সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় কেন্দ্রে পরপর জোড়া ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়।
মাদারীপুর : মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুর ইউপি নির্বাচনে ৩নং ওয়ার্ডের আন্ডারচর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে শতাধিক বোমা বিস্ফোরণ, গোলাগুলি ও কেন্দ্র দখলের ঘটনা ঘটে। পরে সাময়িকভাবে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ : বন্দরের ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাঙ্গাল এলাকায় নির্বাচনের আগের রাতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার গভীররাতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছে।
নড়াইল : ১৩টি ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে সহিংসতা ও ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া, দোকান ভাংচুর, প্রকাশ্যে ভোট দেয়ার অভিযোগের মধ্য দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জন আহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে নড়াইল সদরের আউড়িয়া ইউপি নির্বাচনে আ’লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী আকরাম হোসেন ভূঁইয়াকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। নির্বাচনের দিন দুপুরের দিকে তাকে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলে উঠিয়ে নিয়ে যায়।
জামালপুর : নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একটি কেন্দ্র বাতিলসহ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। ১৫টি ইউনিয়নে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ১৬৩টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়।
খুলনা : খুলনার ২৫টি ইউপির মধ্যে একমাত্র নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া ইউপির নৌকা প্রতীকের আফরোজা আক্তার মিতাকে দুর্বৃত্তরা ছুরিকাঘাতে আহত করেছে। বেলা ২টার দিকে খর্ণিয়া বাজার থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে এ ঘটনা ঘটে।
লালমনিরহাট : নৌকা ঠেকাতে সরকারী প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকরা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে জোট বেঁধে ভোটের প্রচারে নামে। যা সুস্পষ্ট নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন।
শেরপুর : নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, সদর উপজেলার ১৪ ইউপি নির্বাচনে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। প্রতি কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।
নোয়াখালী : বেগমগঞ্জের আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়াম্যান প্রার্থী আনিসুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তিনি ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। দুপুরে সুলতানপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের সময় নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে।
নেত্রকোনা : ক’টি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন গোলযোগ ছাড়া নেত্রকোনার সদর, বারহাট্টা ও আটপাড়া উপজেলার ২৫টি ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সদর উপজেলার দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ ইউনিয়নের আতকাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং বায়রাউড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোট কক্ষ দখল করে নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা ভোট দিতে চাইলে গোলযোগের সৃষ্টি হয়।
এছাড়াও মাগুরা সদর উপজেলার ভোট দেয়া অবস্থায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু হয়েছে। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১৭ জন গ্রেফতার হয়েছে। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ব্যালট বাক্স ও পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগে ৫ জন গ্রেফতার হয়েছে। নীলফামারীতে ১১ ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্র দখলের অভিযোগ রয়েছে। রংপুুরের পীরগাছা উপজেলায় পুলিশের লাঠিচার্জে ৫ জন আহত হয়েছে। ভোলার চরফ্যাশনে ৩০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন। যশোরের চৌগাছা উপজেলায় গাড়ি ভাংচুরে ঘটনা ঘটেছে। মীরসরাইয়ে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ও ব্যালট ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।