নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে মরহুম স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

7
মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত ভার্চুয়াল সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ নির্বাহী কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক মুখ্য সচিব মো: নজিবুর রহমান।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুবই ঘনিষ্ঠজন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সাবেক রাষ্ট্রদূত, জাতীয় সংসদের প্রাক্তন স্পীকার, বরেণ্য কূটনীতিক ও বৃহত্তর সিলেটের কৃতি সন্তান মরহুম হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ, সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবর জিয়ারত, দুস্থ ও অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। পরে স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ, এর উদ্যোগে ভার্চুয়ালি স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও কবর জিয়ারত শেষে মোনাজাত করছেন জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।

১০ জুলাই বিকাল ৩টায় সিলেট দরগাহ গেইটস্থ স্টার প্যাসিফিক হোটেলের হলে ভার্চুয়ালি সভায় স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের সিলেট জেলা কমিটির আহ্বায়ক, আজীবন সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোঃ জাকির হোসেন এর সভাপতিত্বে ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব শামসুল ইসলাম এর পরিচালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ নির্বাহী কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সাবেক মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মোঃ খলিলুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দীন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এ.টি.এম শোয়েব, স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের আজীবন সদস্য ও সহ সভাপতি মাহসুন নোমান রশিদ চৌধুরী।
স্মরণ সভায় স্মৃতি চারণ করেন ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) ও স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এহসান -ই এলাহী, স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের নির্বাহী সদস্য ও জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সি.এম তোয়াফেল সামি, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফতাব আলী কালা মিয়া, সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা যুক্তরাজ্য প্রবাসী শাহীন আহমদ, যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইকবাল হোসেন, এম.সি কলেজের অর্থনৈতিক বিভাগের অধ্যাপক মোঃ তুতিউর রহমান, হাওর উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি কাস্মীর রেজা।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদ জেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও আজীবন সদস্য ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ। অনুষ্ঠানে কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন এবং দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন রাজার গলি জামে মসজিদের ইমাম মুফতি আজমল হোসেন।
ভিডিও গ্রাফির মাধ্যমে হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর কর্মজীবন তুলে ধরা হয়। ৯৩ তম জন্মজয়ন্তীতে তাঁর কর্মজীবনের প্রকাশিত ডিজিটাল ভার্সনের প্রিন্টিং স্মরণিকা মৃত্যুবার্ষিকীতে ভার্চুয়ালি উন্মোচন করা হয়।
বক্তরা বলেন, মরহুম হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। দেশ গঠনে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। তাঁর অবদান জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তিনিই সিলেটের উন্নয়নের গোড়া পত্তন করেছিলেন। তাঁর বিভিন্ন উন্নয়নের অবদানকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য বক্তারা বিভিন্ন প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তাঁর নামে সিলেট রেলস্টেশনের নামকরণ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে হলরুমের নামকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মারক বক্তৃতা চালুকরণ, স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া সহ বিভিন্ন প্রস্তাব আসে। তাঁরা বলেন, মরহুম স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। সবাই দোয়া করেন মহান আল্লাহপাক যেন উনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অত্যন্ত স্নেহধন্য। জাতির পিতার সাথে তাঁর অনেক স্মৃতি রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদকে চমৎকার ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছিলেন। আধুনিক জাতীয় সংসদ বিনির্মাণে তাঁর ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তিনি উন্নয়নশীল দেশের উন্নয়নে বিশাল অবদান রেখেছেন। জাতিসংঘের ৪১ তম অধিবেশনে তিনি জরমযঃ ঃড় উবাবষড়ঢ়সবহঃ এর দুটি রেজুলেশন পাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্টের পরে তিনি জার্মানিতে মানবিক সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন। তাদেরকে রাজনৈতিক আশ্রয়ে দিল্লিতে থাকার ক্ষেত্রেও তিনি সহযোগিতা করেছিলেন। তাঁর অবদান জাতি স্মরণ রাখবে। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ কূটনৈতিক। তাঁর দূরদর্শী কূটনৈতিক সম্পর্ক বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাঁর সম্পর্কে বললে শেষ হবে না। আমরা স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী পরিষদ প্রতিষ্ঠিত করেছি তাঁর কর্মময় জীবনকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে। এই পরিষদের মাধ্যমে আমরা শিক্ষাবৃত্তি চালু সহ বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে চাই। তিনি প্রায় ৪৫ মিনিট তাঁর কর্মময় জীবনের ওপর বক্তব্য রাখেন। পরিশেষে তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ও হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী পরিষদের সাফল্য কামনা করে বক্তব্য শেষ করেন।
সভার সভাপতি অধ্যাপক মোঃ জাকির হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, আপনাদের সকলের উপস্থিত স্মরণ সভাকে সাফল্যমন্ডিত করেছে। তিনি বলেন, স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী পরিষদ মূলত গঠিত হয়েছে তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য। যাতে নতুন প্রজন্ম এই পরিষদের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারে। তিনি প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সাংবাদিকসহ ভার্চুয়ালি যারা স্মরণ সভায় অংশ গ্রহণ করেন সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
এ সময় ভার্চয়ালি ও হলরুমে উপস্থিত ছিলেন স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরীর ছোট বোন জেবা রশিদ চৌধুরী, শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক প্রফেসর ড. সামন্ত লাল সেন, স্পীকার হুমায়ুন রশিদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের আজীবন সদস্য কাজী মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব মোঃ মাহবুবুল হাফিজ চৌধুরী (মুশফিক), সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্ত্তী রনি, সিলেট চেম্বার অব কমার্স এর পরিচালক শাহিদুর রহমান প্রমুখ। তাছাড়াও ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, দেশ ও দেশের বাইরের অসংখ্য শুভাকাক্সক্ষী ও নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি