শ্রীমঙ্গলে বস্তাবন্দি অজ্ঞাত তরুণীর পরিচয় মিলেছে, হত্যার রহস্য উদঘাটন

20

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সিন্দুরখান ইউনিয়নের উদনাছড়ার ব্রিজের নিচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় অজ্ঞাত তরুণী (২০) পরিচয় মিলেছে।
এই ঘটনায় থানা পুলিশ মসুদ মিয়া নামে কথিত স্বামীকে আটক করেছে। আটক মসুদ উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের মৃত এখলাস মিয়ার ছেলে। আর নিহত তরুণীর স্বামী বলে পুলিশ জানায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাম পরিচয় বিহীন উদ্ধার হওয়া তরুণীর নাম ডলি আক্তার (২০)। তিনি ঝিনাইদহ জেলার সদর থানার বধনপুর এলাকার মৃত ফেনু মন্ডলের মেয়ে এবং আটককৃত মসুদ মিয়ার চতুর্থ স্ত্রী। ৭/৮ মাস আগে শ্রীমঙ্গল শহরে ডলির সাথে পরিচয় হয় মসুদের। এরপর তারা উভয়েই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন।
পুলিশ আরও জানায়, মসুদ মিয়া একজন খারাপ চরিত্রের লোক। সে এলাকায় স্থানীয় এলাকায় সুদের ব্যবসা করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে। তার আরও একাধিক স্ত্রী রয়েছে। এছাড়াও সে বিভিন্ন মহিলাদের সাথে পরকিয়ার সম্পর্কে লিপ্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
গত ১৭ মে দিবাগত রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের জেরে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি হয়। এসময় মসুদ মিয়া ডলিকে কাপড় দিয়ে গলায় চেপে শ^ারোদ্ধ করে হত্যা করে। পরের দিন মসুদ শ্রীমঙ্গল শহরের কাপড় ব্যবসায়ী অনিক মিয়ার কাছ থেকে একটি সাদা বস্তা কিনে নেয়। রাত আটটার পর শহরতলীর সিন্দুরখান সড়কের সিএনজি স্ট্যান্ডের ম্যানেজার মনফর মিয়াকে মোবাইল ফোন করে একটি সিএনজি পাঠাতে বলে। মনফর মিয়া সিএনজি চালক বেলাল মিয়াকে মসুদের বাড়ি পাঠালে মসুদ বস্তাবন্দি ডলির লাশ তার সিএনজিতে তুলে।
স্থানীয় সিএনজি চালক বেলাল মিয়া জানান, সিএনজিতে যখন বস্তাটি তুলা হয় তখন তিনি মসুদকে বস্তার ভেতরে কি জানতে চান। কিন্তু মসুদ কোন কিছু না বলে উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের হুগলীয়া বাজারের দিকে যেতে বলেন। তিনি উদনাছড়ার ব্রিজের ওপর উঠার সাথে সাথে সিএনজি থামিয়ে বস্তাটি ব্রিজের নিচে ফেলে দেন।
শহরের কাপড় ব্যবসায়ী অনিক জানান, মসুদ মিয়া চা পাতা প্যাকেট করবে বলে তাদের কাছ থেকে বস্তাটি কিনে নেন গত (১৭ মে সোমবার)। এই বস্তায় করে তারা কাপড় এনেছিলেন ঈদের আগে। তাই বস্তার মধ্যে তার ভাই জুয়েল মিয়ার নাম লেখা ছিল। তিনি জানান, বস্তায় তার ভাইয়ের নাম লেখা থাকায় পুলিশ তাদেরকে খুঁজে বের করে।
শ্রীমঙ্গল থানার উপ-পরিদর্শক আসাদুর রহমান জানান, মসুদ মিয়ার একাধিক স্ত্রী থাকলেও কোন স্ত্রীর সাথেই তার দাম্পত্য জীবন ভাল ছিল না। সে একজন খারাপ চরিত্রের লোক। তাকে বুধবার ভোররাতে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে উপজেলার উদনাছড়ার ব্রিজের নিচে এলাকাবাসী সাদা বস্তাবন্দি অবস্থায় অজ্ঞাত তরুণীর লাশটি দেখতে পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। তরুণীর গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে পুলিশ জানায়।