ঈদে পণ্যের দাম কমবে কি ?

8

যেমনটি প্রতিবছর ঘটে থাকে, তার ব্যতিক্রম এবারও হয়নি। রোজার মাসে নিত্যপণ্যের বাজারে প্রতিবছরের চেনা ছবি এবারও দেখা গেছে। নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। রোজার এক সপ্তাহ আগেই আঁচ লেগেছিল বাজারে। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-এর মূল্যতালিকা বলছে, জিরা, দারচিনি, ধনে গুঁড়া, তেজপাতাসহ ১১ ধরনের মসলাপণ্যের দাম বেড়েছে।
প্রতিবছরই রোজার মাসে দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখতে পারাটা সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জটা এবার আরো বড় ছিল। আর ঈদের আগে বাজার সাধারণের আয়ত্তের বাইরে চলে গেল। দেশের বিভিন্ন কাঁচাবাজার ও খুচরা বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় চিনিগুঁড়া চালের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। বেড়েছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত চালের দামও। খোলা লাচ্ছা সেমাইয়ের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। খুচরা বাজারে সপ্তাহখানেক আগে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হওয়া খোলা চিনির দাম এখন ৭০ থেকে ৭২ টাকা। প্যাকেটজাত চিনি আগেই ৭৫ টাকা ছিল। সয়াবিনের দাম বেড়েছে গত সপ্তাহের শুরুতেই। খোলা সয়াবিনের কেজি এখন ১৩৫ থেকে ১৩৬ টাকায় উঠেছে। তা আগে ছিল ১৩০ থেকে ১৩২ টাকা। বোতলজাত সয়াবিনের দাম কেজিতে বেড়েছে দুই টাকা। পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলাজাতীয় অন্যান্য পণ্যের চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়েছে।
শবেবরাত ও রোজা এলে বাজারে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বাড়ে, এটা আমাদের চেনা চিত্র। যদিও এই সময়ে চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ শিকলে কোনো বিঘ্ন ঘটে না। বাংলাদেশের বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকলেও হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জিনিসপত্রের দাম বাড়তে থাকে। প্রতিবছর রোজা সামনে রেখে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়। দাম বাড়ানোর যত রকম কারসাজি আছে, তা এ মাসে করা হয়। এবারও তেমনটি ঘটেছে।
কেন এমন হয়? বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থাপনা মোটেই সংগঠিত নয়। এর সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীকে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে দেখা যায়। রোজা ও ঈদে পণ্যমূল্য যাতে ভোক্তাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে তার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বরাবরই বলা হয়ে থাকে। মনিটরিং বাড়িয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়। কিন্তু তেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারই ফল বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি। এ দুর্যোগপূর্ণ দিনে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিতে হবে।