১৬ মে পর্যন্ত লকডাউন ॥ ৬ মে থেকে জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলবে ॥ বন্ধ থাকবে আন্তঃজেলা গণপরিবহন ॥

9

কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ছে। ৬ মে থেকে জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলবে। তবে আন্ত:জেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। এছাড়া ট্রেন ও লঞ্চ বন্ধ থাকবে। পাশাপাশি আসন্ন ঈদুল-ফিতরের সময় শিল্প-কারখানায় তিনদিনের বেশি ছুটি দেয়া যাবে না। সোমবার (৩ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মন্ত্রী সভার বৈঠক শেষে এসব কথা জানান। এদিকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, আসন্ন ঈদ সামনে রেখে জনস্বার্থ বিবেচনায় আগামী ৬ মে থেকে সরকার শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চালুর চিন্তা করছে। তিনি বলেন, জেলার গাড়িগুলো জেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কোনভাবেই জেলার সীমানা অতিক্রম করতে পারবে না। সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে সিটি পরিবহন সিটির বাইরে যেতে পারবে না। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া কোন গাড়ি ঢাকা জেলার সীমারেখা অতিক্রম করতে পারবে না।
কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। পরে সাতদিন করে দু-দফা লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৫ মে (বুধবার) মধ্যরাতে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রয়েছে। খোলা রয়েছে শিল্প-কারখানা। এছাড়া জরুরী সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া যথারীতি সরকারী-বেসরকারী অফিস, গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। সীমিত পরিসরে ব্যাংকে লেনদেন করা যাচ্ছে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রবিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটা বৈঠক হয়েছে। সেখানে যেসব সুপারিশ করা হয়, সেই বিষয়ে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে- সোমবার থেকে পুলিশ, সিটি কর্পোরেশন, ম্যাজিস্ট্রেট দেশের প্রত্যেকটি মার্কেট তদারকি করবে। কোন মার্কেটে এতে লোক হয়ত কন্ট্রোল করা যাবে না কিন্তু মাস্ক ছাড়া যদি বেশি লোকজন ঘোরাফেরা করে প্রয়োজনে আমরা সেসব মার্কেট বন্ধ করে দেব। এটা পরিষ্কারভাবে বলে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দোকান-মালিক সমিতির সভাপতি ওনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। ওনারা নিজেরাও এটা তদারক করবেন। কোন অবস্থায় যদি স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপক লঙ্ঘন হয় তবে প্রয়োজন হলে আমরা ওই মার্কেট বন্ধ করে দেব।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে লকডাউন যেটা আছে সেটা ১৬ মে পর্যন্ত এভাবেই অব্যাহত থাকবে। ৬ মে থেকে গণপরিবহন জেলার মধ্যে চলাচল করতে পারবে। আন্তঃজেলা বাস চলাচল করতে পারবে না। ঢাকার বাস ঢাকার মধ্যে চলাচল করবে। এছাড়া লঞ্চ ও ট্রেন বন্ধ থাকবে।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব আরও বলেন, গণপরিবহন মালিকরা আমাদের কথা দিয়েছেন, কোনভাবেই গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করা হবে না। লঙ্ঘন করা হলে বন্ধ করে দেয়া হবে। সেই নির্দেশনাও দেয়া আছে। সেটা আমরা দেখব।
ঈদ আগামী ১৪ মে শুক্রবার হতে পারে জানিয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোন বন্ধ দেয়া যাবে না। ঈদের ছুটি তিনদিন এর মধ্যে দুটি পড়েছে শুক্র ও শনিবার। শিল্পকারখানাও এই সময়ে বন্ধ দিতে পারবে না। সরকারী অফিস বন্ধ সেগুলোর বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আছে কিনা- জানতে চাইলে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, যেগুলো যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে।
আগামী ১৪ মে শুক্রবার ঈদ হতে পারে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঈদের দিন ও আগে পরে দুদিনসহ মোট তিনদিনের বেশি ছুটি দেয়া হবে না। কাজেই ঈদের ছুটি হবে তিনদিন, এর মধ্যে শুক্র ও শনিবারও রয়েছে। শিল্প-কারখানাও এই সময়ের বেশি ছুটি দিতে পারবে না। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সরকারী-বেসরকারী যেগুলো যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে। এর কোন নড়চড় হবে না।
মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের সময় শিল্প-কারখানায় তিনদিনের বেশি ছুটি দেয়া যাবে না। করোনা সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৩ বা ১৪ মে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।
উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে গত ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আটদিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। পরে সাতদিন করে দু-দফা লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ শেষ হবে আগামী ৫ মে (বুধবার) মধ্য রাতে। ৬ মে ভোর ৬টা থেকে আবারও লকডাউন শুরু হবে, চলবে ১৬ মে রবিবার মধ্য রাত পর্যন্ত।
এদিকে ঈদ সামনে রেখে জনস্বার্থ বিবেচনায় আগামী ৬ মে থেকে সরকার শর্ত সাপেক্ষে গণপরিবহন চালুর চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান, জেলার গাড়িগুলো জেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। কোনভাবেই জেলার সীমানা অতিক্রম করতে পারবে না। সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে সিটি পরিবহন সিটির বাইরে যেতে পারবে না। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া কোন গাড়ি ঢাকা জেলার সীমারেখা অতিক্রম করতে পারবে না। গণপরিবহনগুলোকে অবশ্যই অর্ধেক আসন খালি রেখে নতুন সমন্বয়কৃত ভাড়ায় চলতে হবে বলে জানান তিনি। সোমবার (৩ মে) সকালে ময়মনসিংহ সড়ক জোন, বিআরটিএ ও বিআরটিসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানান তিনি। মন্ত্রী তার সরকারী বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
ওবায়দুল কাদের জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না, পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে এবং প্রতি ট্রিপে গাড়ি জীবাণুমুক্ত করাও বাধ্যতামূলক হতে হবে। করোনা কখন কমে আর কখন বাড়ে তা বলা যায় না, তাই আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা নিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোন কারণ নেই। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে আমাদের সবার শিক্ষা নিতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব ও শতভাগ মাস্ক পরিধান করতে হবে।