শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশঙ্কা

8

দেশে প্রায় বছরব্যাপী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে সকল প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিক থেকে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। তাই অবসর ও বেকার সময় কাজে লাগাতে গ্রামঞ্চলের শিক্ষার্থীরা শিশুশ্রমের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। সরকার অনলাইনে পড়াশোনার সুযোগ করে দিলেও গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। সবার বাড়িতে টেলিভিশন ও এন্ড্রোয়েড মোবাইল না থাকায় এসব পরিবারের শিক্ষার্থীরা সাধারণত; অনলাইনে পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে। তাই অভাবী পরিবারের ব্যয় বহন করতে অভিভাবকরা হিমসিম খেতে হচ্ছে। অভাব-অনটনের প্রেক্ষিতে বাধ্য হয়ে স্কুল পড়ুয়া শিশু-কিশোরদেরকে সুবিধামত কাজের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। নতুবা অনেক শিশু সে নিজে-নিজেই কাজের ব্যবস্থা করে নিতে দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি সিলেট মহানগরীসহ জেলা-উপজেলা সদরে অপ্রাপ্ত শিশু কিশোরদের কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়তে দেখা যায়। এসব শিশু-কিশোরদের মধ্যে কেউ-কেউ কাজ সংগ্রহ করে জিবিকা নির্বাহে যুক্ত হয়ে পড়েছে। তবে এসব শিশু-কিশোর সিলেটের বাহির থেকে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা সদরসহ হাট-বাজার সমূহে ঘুরাঘুরি পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে সিলেট মহানগরীতে এদের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশী বলে মনে হয়। এদের বয়স অনুমানিক ১০/১২ বছরের শিশু-কিশোর।
অনেক শিশু-কিশোরের সাথে আলাপ করে জানা গেল, দীর্ঘমেয়াদি করোনা মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যায় হাওরাঞ্চলের মানুষ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ায় গ্রামাঞ্চলে অভাব-অনটন পরিবার সমুহের সঙ্গি হয়ে পড়েছে। প্রতিটি পরিবারে লোকজন চরম দুর্ভোগে দিন কাটাতে হচ্ছে, তাই আমাদেরকে কাজের জন্য বাড়ী ছেড়ে আসতে হয়েছে। এদর মধ্যে অনেকে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশোনা করত; বর্তমানে পরিবার অভাব-অনটনের মধ্যে পড়ায় তাদেরকে পরিবারের আর্থিক অভাব পূরণের লক্ষ্যে কাজের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে হয়েছে। তবে ভাটি এলাকার শিশু-কিশোরদের মতে; স্কুল খোলা হলে বা আগামী বোরো ফসল শুরুর পূর্বেই বোরো ফসলের কাজে সহযোগিতার জন্য বাড়ীতে ফিরবে।
এদিকে শহর-শহরতলির এমনকি সিলেটের প্রায় উপজেলার হোটেল, রেস্তুরোঁয়, ফুটপাতের দোকান গুলোসহ প্রতিটি বাসাবাড়ীর কাজে এরা কাজ নিয়েছে। এছাড়া অসংখ্য শিশু-কিশোর বিভিন্ন স্থানে পাচকের কাজ করতে দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা মহামারি করোনার কারণে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার দিকে মনোযোগ রাখতে একটি বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষার্থী ঝরে পড়া থেকে রক্ষা করা যাবে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগের উদ্যেগ নেয়া জরুরী বলে সচেতন মহল মনে করেন।