খাদ্য পণ্যে যত সব ভেজাল

19

দেশের সর্বত্র ভেজাল খাদ্য পণ্যে ভরপুর। করোনা নামক মহামারীর মুহূর্তে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন কোম্পানী কর্তৃক তৈরি পণ্যে ভয়াবহ ভেজাল রয়েছে, তা দেখার কেউ নেই বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
বিভিন্ন সূত্র মতে দেশের সাধারণ মানুষ প্রতিদিন যাহা খাচ্ছে তা কতটুকু বিশুদ্ধ খাদ্য তা ভেবে দেখার চেষ্টা করছে না। ফলে বাজার থেকে ক্রয় করা বিভিন্ন কোম্পানীর তৈরি পণ্যে গুলো দিয়ে তৈরি খাবার হোটেল, রেস্তোরাঁ, বাসা-বাড়ীতে এবং বিভিন্ন দোকান গুলো থেকে প্রতিনিয়ত ভেজাল বিষাক্ত পণ্য খেয়ে কিডনী, হার্ট ও লিভারসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ বিকল, শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ছাড়া ও সকল বয়সের মানুষ হাজারো রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। খাদ্যে ভেজাল মেশানো কত অন্যায় তাহা জেনে ও এসব কুচক্রি মহলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে কে?
সম্প্রতি সরকারি প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটের পাবলিক হেলথ ল্যাবরেটরিতে পণ্যের নমুনা পরীক্ষায় খাদ্য-পণ্যে এ ভয়াবহ ভেজালের চিত্র উঠে এসেছে। জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউট প্রতি বছর দেশের সব বাজার ও দোকান গুলো থেকে খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পাবলিক হেলথ ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে প্রতিবেদন তৈরি করে। এ প্রতিবেদনের মতে; সম্প্রতি দেশের বাজারে খাদ্য পণ্যের ৫০ ভাগই ভেজালে ভরপুর। তবে এ ভেজালের মধ্যে সবচেয়ে বেশী এগিয়ে রয়েছে মিষ্টি জাতীয় পণ্যে। এ গুলোর মধ্যে রসগোল্লা, কালোজাম, দই, গুঁড়, মধু, এ ছাড়াও আমাদের নিত্য দিনের খাদ্যের মধ্যে লবণ, সয়াবিন তেল, হলুদ, মরিচ, এমনকি শিশু খাদ্যে ও ভেজালের শেষ নেই। এসব খাদ্য পণ্যে মেশানো হচ্ছে, টেক্সটাইল রং, কেমিকেল, হাইড্রোজ, কার্বাইড, ও ফরমালিনসহ বিষাক্ত উপাদান। এসব ভেজালকারীদের হাত থেকে কেউ রক্ষা পাচ্ছেন না।
জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউট সূত্র মতে; সারা দেশে থেকে শতাধিক প্রকারের পণ্যে সংগ্রহ করে প্রতিটিতে নানা রকমের ভেজাল উপকরন পাওয়া গেছে। বিশেষ করে ঘি, জ্যাম, জেলি ও সস, চমচম, কালোজাম, রসগোল্লা, মধু, দই, পনির ও লাচ্ছি, গুঁড়, চাটনি ও আচার, সেমাই, হলুদ, বেভারেজ, গুঁড়া দুধ, মরিচ, লবণ, সয়াবিন তৈলসহ সবধরনের পাউরুটির ফ্যাক্টরীতে তৈরি পণ্যে ছাড়াও অসংখ্য পণ্যে ভেজালের ছড়াছড়ি রোধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার বিকল্প নেই।
দেশের এ ক্রান্তি লগ্নে বাজারের নিত্য পণ্যে ভেজালকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এগিয়ে আসা উচিত বলে সচেতন মহল মনে করেন।