লেখক-ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান আর নেই

10

নগরীর বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ-কবি-ব্যবসায়ী, ইংরেজি দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস-এর ডাইরেক্টর, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের জীবন সদস্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান সেলিম আর নেই। শুক্রবার (২৮ আগষ্ট ২০২০) সকাল সাড়ে নয়টায় সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, আমেরিকা প্রবাসী পুত্র ও এক কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। শুক্রবার (২৮ আগষ্ট ২০২০) বাদ আসর মানিক পীর (রহ.)-এর গোরস্থানে মরহুম আবদুল হান্নানের নামাজে জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
মরহুম আবদুল হান্নান সেলিম নগরীর প্রখ্যাত ব্যবসায়ী মহাজনপট্টির আবদুস সাত্তারের পুত্র। তার অনুজ বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ বিএনপি নেতা আবদুর রাজ্জাক। সিলেট শহরে জন্মগ্রহণকারী আবদুল হান্নানের কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে সিলেটের বাইরে। বিশেষ করে তাঁর ব্যবসায়িক জীবনের একটি বড়ো অংশ চট্টগ্রামে কাটে। তিনি হার্ডওয়ার ব্যবসায়ীদের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে এফবিসিসিআইতে প্রতিনিধিত্ব করেন। অবসর জীবনে তিনি নগরীর ফরহাদ খাঁর পুলের বখতিয়ার বিবি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন। সবশেষ তিনি আহমদ গ্যাস ফিলিং স্টেশন এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে অমায়িক-বিনয়ী আবদুল হান্নান সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য আসর, সিলেট মোবাইল পাঠাগারের সাহিত্য আসরে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। তিনি এইসব আসরে স্বরচিত লেখা পাঠ করতেন এবং আলোচনায় অংশগ্রহণ করতেন। কিছুদিন আগে তিনি স্ট্রোক করলে তার কথা জড়িয়ে যেত। কিন্তু তিনি এইসব প্রতিকুলতা এড়িয়ে নিয়মিত সাহিত্য আসরে অংশগ্রহণ করতে থাকেন এবং তার কথার জড়তাও ধীরে ধীরে কেটে যায়।
কবি আবদুল হান্নান এক সময় নিয়মিত লেখালেখি করতেন। ব্যবসা বাণিজ্যে জড়িয়ে যাবার পর তার লেখালেখিতে সাময়িক ভাটা পড়ে। কিন্তু সিলেট ফিরে আসার পর তিনি আবার লেখালেখি শুরু করেন। তার শুভাকাঙ্খীরা এ সময় তার বই বের করার জন্যে তাকে চাপ দিতে থাকেন। শুভানুধ্যায়ীদের অনুরোধে তিনি তার জীবনের স্মৃতিকথা লেখতে শুরু করেন। অসুস্থ হবার কিছুদিন আগে তা প্রকাশের জন্যে প্রেসে দেন। সবশেষ তিনি হাসপাতাল থেকে জানান, সুস্থ হবার পর বইয়ের কাজ শুরু করবেন। কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, করোনার ভয়ে ভীত না হয়ে কবি আবদুল হান্নানের কন্যা হাসপাতালে সার্বক্ষণিকভাবে পিতার সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি