প্লাবিত সিলেট

13

সিলেটে দ্বিতীয় বারের বন্যায় শহর-নগরীর অলি-গলিসহ গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে প্রচন্ড জলাবদ্ধতার সৃষ্টিসহ প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ফলে দেখা দিয়েছে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
দেশের উত্তর-পূর্ব এবং মধ্য অঞ্চলের জেলা সমূহে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সিলেটের প্রধান নদী কুশিয়ারা-সুরমার শাখা-প্রশাখাসহ খাল-বিল, বৃষ্টির পানি আর পাহাড়ি ঢলের ফলে সমস্ত সিলেট অঞ্চল বন্যার পানিতে হাবু-ডুবু খাচ্ছে। শহর-নগরের বাসা-বাড়ীসহ গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র বন্যার পানি প্রবেশ করে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামীণ জনগণ বন্যার কারণে জলবন্দী হয়ে পড়েছে। নিজেদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যাদি সংগ্রহ করতে চরম দুর্ভোগ যেমন পোহাতে হচ্ছে, তেমনি গৃহপালিত পশুর খাবার নিয়ে চরম দুর্ভোগ, পোহাতে হচ্ছে। বন্যা-দুর্গত মানুষের সীমাহীন কষ্টের শিকার হতে হচ্ছে।
সিলেট অঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলার সবকয়টি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশী ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হচ্ছে সিলেটের সদর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, বিশ্বনাথ, এ ছাড়া সুনামগঞ্জের বিশাল এলাকা জুড়ে বন্যার পানি প্লাবিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। কৃষকরা হারিয়েছে, আউশ ধানের মাঠ, আমন ধানের চারা ভূমি ডুবিয়ে নিয়েছে। কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা। বন্যা দুর্গত মানুষের ঘরে যেমন খাবার নেই, তেমনি গৃহপালিত পশুর খাবার যোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিভিন্ন উপজেলার অসংখ্যক রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা করেছে। অনেক উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির অভাবে ভোগান্তির শিকার। এ সময়ে বন্যা-দুর্গত বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়ানো খুবই প্রয়োজন। বন্যার কারণে সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছেন, গ্রামীণ কৃষক, কৃষি শ্রমিক, দিন মজুর, গ্রামীণ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বন্যা-দুর্গত মানুষের পাশে সরকারের সহায়তা খুবই প্রয়োজন। সরকারের সর্ব-প্রকার সহায়তা ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে যেতে হবে। এসব ত্রাণ তৎপরতা বিতরণে যেন কোন-প্রকার অনিয়ম না করে মানুষ বান্ধব নীতিতে দুর্গত মানুষের কল্যাণে সরকারের সাথে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা সকলের উচিত বলে বিজ্ঞ মহল মনে করেন।
আগামীতে বন্যা নামক প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় নদ-নদীর গভীরতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেয়া অপরিহার্য। যা বর্ষা কালীন সময়ে জনকল্যাণে আসে।