প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদক শিল্পপতি লতিফুর রহমানের ইন্তেকাল

6

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট শিল্পপতি মোঃ লতিফুর রহমান আর নেই (ইন্নালিল্লাহি…..রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। বুধবার দুপুরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চিওড়া গ্রামের ফারাজ মঞ্জিলে তিনি মারা যান। দীর্ঘ দুই বছর ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। বেশিরভাগ সময় তিনি গ্রামের বাড়িতেই থাকতেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন। তিনি চিওড়া গ্রামের প্রয়াত খান বাহাদুর মজিবুর রহমানের ছেলে। বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে এ্যাম্বুলেন্সযোগে মরহুমের মরদেহ ঢাকায় নেয়া হয়।
মরহুমের ভাতিজা শাহিদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, অসুস্থ হয়ে তিনি (লতিফুর রহমান) গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে গ্রামের বাড়ি ফারাজ মঞ্জিলে অবস্থান করছিলেন। মাঝেমধ্যে ঢাকা থেকে চিকিৎসক এসে তার চিকিৎসার বিষয়টি তদারকি করতেন। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বুধবার তিনি মারা যান। মৃত্যুর সময় তার স্ত্রী শাহনাজ রহমান, ছেলে আসাদ অলিউর রহমানসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তার পাশে উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে মরহুমের মরদেহ ঢাকায় নেয়া হয়েছে। বাদ এশা গুলশান আজাদ মসজিদে নামাজে জানাযা শেষে রাতেই বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
শিল্পপতি লতিফুর রহমানের জন্ম ১৯৪৫ সালের ২৮ আগস্ট ভারতের জলপাইগুড়িতে। তিনি লেখাপড়া শুরু করেন সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। ১৯৫৬ সালে সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে লেখাপড়া শেষ করে সেখান থেকে কলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন। পরে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ, হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার কারণে ঢাকায় ফিরে আসেন লতিফুর রহমান। ১৯৬৬ সালে ডিব্লিউ রহমান জুট মিলে ট্রেইনি হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে একই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭২ সালে যখন সবকিছু নতুন করে শুরু করেছিলেন, তখন তার সঙ্গে কাজ করতেন মাত্র পাঁচজন। ট্রান্সকম গ্রুপে এখন তিনি নিজে ব্যবসা শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন ট্রান্সকম গ্রুপ। ব্যবসায় সফলতার জন্য তিনি ২০১২ সালে মর্যাদাপূর্ণ বিজনেস ফর পিস এ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন।
এদিকে শিল্পপতি লতিফুর রহমান এমনদিনে মারা গেলেন, যেদিন তার নাতি (বড় মেয়ের ছেলে) ফারাজ আইয়াজ হোসেনের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারাজ হোসেন ২০১৬ সালের পহেলা জুলাই ঢাকার হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত হন। মরহুমের মেয়ে শাজনীন তাসনিম রহমান ১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন। ওই মামলার চূড়ান্ত রায়ে শাজনীনদের বাড়ির গৃহ পরিচায়ক শহিদুল ইসলাম ওরফে শহীদের ফাঁসির রায় দেয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের চেয়ারম্যান এমএম এনামুল হক প্রমুখ লতিফুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোক সন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।