মালয়েশিয়ায় ৮২৫৩ অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার ॥ বাংলাদেশী কর্মী দুই হাজারের বেশি

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি দেশের ৮ হাজার ২৫৩ অবৈধ প্রবাসীকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ২ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছেন। জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দুই মাসে ২৯ হাজার ২৪৭ অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেফতার করার পর তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ৮ হাজারের বেশি কর্মীকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ছেড়ে দিয়েছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। অবৈধ অভিবাসী আটক করতে দেশজুড়ে ২ হাজার ২৯৩ টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। দেশটির বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক খায়রুল দাজাইমি দাউদের বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে।
মালয়েশিয়া থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, ইমিগ্রেশন প্রধান বলেছেন, জাতীয় ও সীমান্ত নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় তার জন্য এ অভিযান শুরু করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীর কারণে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। সরকার নতুন বছরে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করার জন্য। আমরা তথ্য সংগ্রহ করে অভিযান পরিচালনা করে সফলতাও পাচ্ছি। অবৈধ অভিবাসীদের কারণে স্থানীয়দের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়েই অভিযান চালানো হচ্ছে। যে দেশেরই অবৈধ অভিবাসী পাওয়া যাবে তাকেই গ্রেফতার করা হবে।
সূত্র জানিয়েছে, মালয়েশিয়ায় আটক অভিযানের মধ্যেও সাগরপথে পাচারকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এবার তাদের টার্গেট রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষ। পাশাপাশি কিছু বাংলাদেশী নাগরিককেও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মাছ ধরার নৌকায় সাগর পাড়ি দিয়ে মালয়েশিয়া নিয়ে যাচ্ছে। পাচারকারী চক্রের প্রলোভনে পড়ে বহু মানুষ বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাড়ি দিচ্ছেন উত্তাল সাগর। অনেকেই মালয়েশিয়া পৌঁছতে পারলেও সেখানে আবার তারা মালয়েশিয়ার পুলিশের হাতে আটক হচ্ছেন। কক্সবাজার উপকূল হয়ে মানব পাচার চলছে। কিছুতেই থামছে না পাচার। ৬০টি স্থান দিয়ে মানব পাচার হচ্ছে। কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছটা, ফিশারিঘাট, নাজিরাটেক, সমিতিপাড়া, মহেশখালীর সোনাদিয়া, গোরকঘাটা, কুতুবজোম, ধলঘাটা, উখিয়ার সোনারপাড়া, রেজুরখাল, ইনানী, ছেপটখালী, মনখালী, টেকনাফের বাহারছড়া, সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ, কচ্ছপিয়া, শামলাপুর, সদরের ঈদগাঁও, খুরুশকুল, চৌফলদী, পিএমখালী, চকঘোলারপাড়া, মাঝরপাড়া, পশ্চিমপাড়া, কাটাবনিয়া, খুরেরমুখ, হাদুরছড়া, জাহাজপুরা রিয়া, পেকুয়া, চট্টগ্রামের বাঁশখালী, আনোয়ারা, পটিয়াসহ অন্তত ৬০টি স্থান (পয়েন্ট) দিয়ে সাগরপথে মানব পাচার করা হচ্ছে। ১২০ কিলোমিটারের পুরো সাগর উপকূল নিরাপদ রাখতে বিজিবি ও পুলিশ তৎপর থাকলেও পাচারকারী চক্র চোখ ফাঁকি দিয়ে নৌকায় মানুষ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। সাগরপথে প্রতিবছর কম করে হলেও ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষকে মালয়েশিয়ায় পাচার করা হয় বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসন সব সময় প্রস্তুত থাকলেও তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। পাচারকারী কেউ কেউ ধরা পড়লে আইনের ফাঁক দিয়ে আবার তারা জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে।