মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ প্রক্রিয়া চলছে – বিজিবি ডিজি

32

কাজিরবাজার ডেস্ক :
নতুন করে কাউকে অবৈধভাবে মিয়ানমার বা অন্য দেশ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম। তিনি বলছেন, সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ, বিস্ফোরক, মানবপাচার ও ইয়াবা চোরাচালান রোধে বাংলাদেশের মিয়ানমার সংলগ্ন সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে পাঁচ দিনের আলোচনা শেষেও আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোন কথা বলেননি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (এমপিএফ) চীফ অফ পুলিশ স্টাফ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইয়ো থান। এটি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। যদিও তারা প্রাণঘাতী মরণ নেশা ইয়াবা নিয়ন্ত্রণে আন্তরিকতার কথা জানিয়েছেন। বুধবার ঢাকার পিলখানা বিজিবি সদর দফতরে এক আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ সাফিনুল ইসলাম আরও জানান, সীমান্তে স্থল মাইন পুঁতে রাখার বিষয়ে অভিযোগের বিষয়টি তাদের জানা আছে। এ ব্যাপারে তারা নজর রাখছেন। তবে বাংলাদেশের সীমান্তের শূন্য রেখা থেকে ৫০ গজের মধ্যে কোন প্রকার স্থল মাইন পুঁততে দেয়া হবে না। যদি মিয়ানমার তাদের সীমান্তে মাইন পুঁতে রাখে সেটি তাদের বিষয়। তারপরেও এমটিএফ থেকে স্থল মাইন অপসারণ করার অনুরোধ করা হয়েছে।
ইয়াবা মিয়ানমারের জন্যও বড় ধরনের আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য মিয়ানমার সরকারও ইয়াবা চোরাচালান বন্ধ করতে একমত পোষণ করেছে। ইতোমধ্যেই বিজিবির প্রতিনিধি দলের উপস্থিতিতে লাখ লাখ পিস ইয়াবা সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, এমটিএফ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হয়েছে। আগের বছরগুলোর তুলনায় গত বছর ইয়াবা চোরাচালান তুলনামূলক অনেক কম হয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, মিয়ানমারের তরফ থেকে তাদের দেশের কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপ বাংলাদেশ সীমান্তের গহীন জঙ্গলে প্রবেশ করে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালায় বলে দাবি করা হয়েছে। এটি একেবারেই ভিত্তিহীন তথ্য। কারণ বাংলাদেশের সীমানা ব্যবহার করে কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে তাদের কার্যক্রম চালাতে দেয়া হয় না। এক্ষেত্রে সরকার জিরো টলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী। সীমান্ত নতুন করে আর কাউকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করতে দেয়া হবে না।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ক্যাম্পের চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেই ধারণা মোতাবেক ইয়াবা ও বিস্ফোরক ছাড়াও সব ধরনের চোরাচালান ঠেকাতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। এমনকি মিয়ানমার সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে সরকার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কথা ভাবছে। এক্ষেত্রে এমটিএফ সহায়তা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। সীমান্তে যৌথ টহল ও তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান আরও জোরদার করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চীফ অফ পুলিশ স্টাফ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইয়ো থান বলেন, সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমাদের কাজ সীমান্ত সংরক্ষিত করা। আমরা তাই করছি। এটি দুই দেশের সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিষয়।