কাজিরবাজার ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ইন্ডিয়ান ইকোনমিক সামিটে যোগ দিতে চারদিনের সরকারী সফরে আজ বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লীর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের বন্ধনে থাকা প্রতিবেশী দেশটিতে প্রধানমন্ত্রীর এ সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সফরকালে দশ থেকে বারোটি সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। এছাড়াও সফরকালে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন, সীমান্ত হত্যা প্রতিরোধসহ দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে সৃষ্ট জট খুলতে পারে বলেই মনে করছেন কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সফরকালে ৫ অক্টোবর দিল্লীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হবে। একই দিন তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রধান সোনিয়া গান্ধী ৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।
বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি-২০৩০) প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গিদের নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় দিল্লীর উদ্দেশে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে ১০ থেকে ১২ সমঝোতা স্মারক হতে পারে। এছাড়া এ সফরে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ৩-৪ অক্টোবর ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেবেন। আগামী ৫ অক্টোবর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকে আলোচনা শেষে যুব ও ক্রীড়া, সংস্কৃতি, নৌ পরিবহন, অর্থনীতি, সমুদ্র গবেষণা, পণ্যের মান নির্ধারণ, বাণিজ্য, শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠাখাতে একাধিক সমঝোতা স্মারক হতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে সীমান্ত হত্যা প্রতিরোধ, উন্নয়ন-জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী ইত্যাদি নিয়েও আলোচনা হবে।
বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটটি আজ স্থানীয় সময় সকাল দশটায় নয়াদিল্লী পৌঁছবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার হোটেল তাজ প্যালেসের দরবার হলে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটে বাংলাদেশের ওপর কান্ট্রি স্ট্র্যাটেজি ডায়ালগে যোগ দেবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী একই দিন বাংলাদেশ হাইকমিশনের মৈত্রী হলে এক সংবর্ধনা এবং বাংলাদেশ হাউসে তাঁর সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেবেন। বাংলাদেশের হাইকমিশনার এই নৈশভোজের আয়োজন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল শুক্রবার ভারতের তিনটি চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড এক্সচেঞ্জের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক ও মতবিনিময় করবেন। ভারত সফররত সিঙ্গাপুরের উপপ্রধানমন্ত্রী হেং সোয়ে কিট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। পরদিন ৫ অক্টোবর শনিবার ঐতিহাসিক হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হবে। একইদিন কয়েকটি বিনিময় চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হবে। দুই প্রধানমন্ত্রী হায়দরাবাদ হাউস থেকে যৌথভাবে কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
এর আগে, শনিবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। শেখ হাসিনা হায়দরাবাদ হাউসে আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় যোগ দেবেন এবং পরিদর্শক বইতে স্বাক্ষর করবেন। সফরকালে ভারতের বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। শ্যাম বেনেগাল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্মের ওপর চলচ্চিত্র নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন। সফরশেষে ৬ অক্টোবর রবিবার দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
