সিমেন্টে উপর কর রোধ করুন

23

গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী ২০১৯-২০ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব পেশ করেছেন, তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা। বাজেটে আবাসন খাতে বিভিন্ন ধরনের ফি কমানোর প্রস্তাবের পাশাপাশি ‘সবার জন্য আবাসন, কেউ থাকবে না গৃহহীন’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ঘোষণা বাস্তবায়নে নতুন অর্থবছরে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের জন্য ছয় হাজার ৬০৩ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এখানেই আশাবাদী হয়েছিলেন আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা।
দেশের আবাসন খাত দীর্ঘদিন ধরে স্থবির হয়ে রয়েছে। খাতটি বিকশিত না হওয়ার অন্যতম কারণ স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন ফি অনেক বেশি। অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন, সব রেজিস্ট্রেশন ফি যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। ফলে আবাসন খাত সম্প্রসারিত হবে এবং রাজস্ব আয়ও বাড়বে। নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আবাসন খাতে নিবন্ধন ফি ও স্ট্যাম্প ফি হ্রাস করার এই প্রস্তাবকে যুগান্তকারী হিসেবে আখ্যায়িত করে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। আবাসন খাতে নিবন্ধন ফি ও স্ট্যাম্প ফি হ্রাস করার প্রস্তাবের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। উল্লেখ করা হয়, সরকারের এই যুগান্তকারী প্রস্তাবের ফলে আবাসন খাতে বিদ্যমান স্থবিরতা বহুলাংশে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
আশাবাদের পাশাপাশি নতুন এক আশঙ্কা দেখা দিয়েছে আবাসন খাতে। প্রস্তাবিত বাজেটে আবাসন খাতের অন্যতম প্রধান উপকরণ সিমেন্ট সেক্টরে অগ্রিম কর ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কাঁচামাল আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ১৫ শতাংশ। পাশাপাশি অগ্রিম আয়কর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ। ফলে এখন মোট ২০ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এ ছাড়া আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ধারা সি অনুসারে আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ উেস কর্তনকৃত অগ্রিম আয়কর এবং স্থানীয় সরবরাহ পর্যায়ে ৩ শতাংশ উেস কর্তনকৃত অগ্রিম আয়কর ন্যূনতম আয়কর হিসেবে গণ্য করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে এ খাতে ‘ট্যাক্স অন ট্যাক্স’ হয়ে যাবে। প্রতি ব্যাগ সিমেন্টে দাম বাড়বে ৪২ টাকা। কারণ ভ্যাট ও অগ্রিম কর আরোপ করার কারণে সিমেন্টের এক টন কাঁচামাল আমদানিতে খরচ বাড়বে ৮৫০ টাকা। নির্মাণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে আবাসন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে যাবে। আবাসন খাতের পাশাপাশি দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর ব্যয় কমিয়ে আনার স্বার্থে সিমেন্টের ওপর প্রস্তাবিত অগ্রিম কর প্রত্যাহার করা হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।